অনুপ্রেরণা মূলক উক্তি,যদি মাতৃভাষাকে বিশ্ববাসীর সম্মুখে বড় করিয়া, নিজে বড় হইয়া, জাতির গৌরব শ্লাঘা বাড়াইতে চাও, তাহা হইলে সরল মনে ও সরল প্রাণে খাঁটি সেবকরূপে বঙ্গ ভাষায় আশ্রয় গ্রহণ
করিতে হইবে। —ড. আঃ গফুর সিদ্দিকী
মাতৃভাষার প্রতি ঘৃণা প্রকাশ করা বাঙ্গালী হইয়া নিজেদের মাতৃভাষা উর্দু বা আরবী বলিয়া পরিচয় দেয়, কিংবা বাংলা জানি না ভুলিয়া গিয়াছি এরূপ বলা এই মারাত্মক রোগ কেবল এক শ্রেণীর মুসলমানের মধ্যেই দেখা যায়। যাহারা
এরূপ আচরণ করে তাহারা যে আপন মাতা মাতৃভূমির প্রতি নিন্দা প্রকাশ করে এবং নিজ মুখে মায়ের এবং দেশের দীনতাজ্ঞাপন করে তাহাতে কিছুমাত্র সন্দেহ নাই । —ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ
বাংলা সাহিত্য
স্বাধীন পূর্ব বাংলায় স্বাধীন নাগরিক রূপে আজ আমাদের প্রয়োজন হয়েছে সর্ব শাখার সমৃদ্ধ এক সাহিত্যে। এই সাহিত্য আজ আমরা আজাদ পাকনাগরিক গঠনের উপর প্রয়োজনীয় বিষয়ের অনুশীলন চাই। এই সাহিত্য হবে আমাদের মাতৃভাষা বাংলায়। পৃথিবীর কোন জাতি জাতীয় সাহিত্য ছেড়ে বিদেশী ভাষায় সাহিত্য রচনা করে যশস্বী হতে পারে নি। —ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ
বাংলা সাহিত্য হিন্দু মুসলমান উভয়ের সাহিত্য। এতে হিন্দুদের দেবীর নাম দেখিলে মুসলমানের রাগ করা যেমন অন্যায়, হিন্দুদেরও তেমনি মুসলমানদের দৈনন্দিন জীবন যাপনের মধ্যে নিত্য প্রচলিত মুসলমানী শব্দ তাদের লিখিত
সাহিত্য দেখে ভুরু কোঁচকানো অন্যায়। আমি হিন্দু মুসলমানের মিলনে পরিপূর্ণ বিশ্বাসী।’ –কাজী নজরুল ইসলাম
বাঙালি
বাঙালি বাংলাদেশে জন্মেছে বলেই যে বাঙালি তা নয়। বাংলাভাষার ভিতর দিয়ে মানুষের চিত্তলোকে যাতায়াতের বিশেষ অধিকার পেয়েছে বলেই সে বাঙালি।
—রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর/সভাপতির অভিভাষণ
বাঙালি চিরদিন দালালী করিতেই পারে। কিন্তু দল গড়ে তুলতে পারে না।—রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
আমরা হিন্দু বা মুসলমান যেমন সত্য, তার চেয়ে বেশি সত্য আমরা বাঙালি। এটি কোন আদর্শের কথা নয়, এটি একটি বাস্তব কথা। মা প্রকৃতি নিজের হাতে আমাদের চেহারায় ও ভাষায় বাঙালিত্বের এমন ছাপ মেরে দিয়েছেন যে, মালা- তিলক টিকিতে কিংবা টুপি-লুঙ্গি-দাড়িতে তা ঢাকবার জো-টি নেই।—ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ
অনুপ্রেরণা মূলক উক্তি
বাঙালির যা কিছু শ্রেষ্ঠ, শ্বাশত যা সর্বমানের বেদীমূলে উৎসর্গ করিবার উপযুক্ত, তাই আমাদের বর্তমানে কাল রেখে দিয়ে যাবে ভাবি কালের উত্তরাধিকাররূপে।
সাহিত্যের মধ্যে বাঙালির যে পরিচয় সৃষ্টি হচ্ছে বিশ্ব সভায় আপন আত্মসম্মান সে রাখবে, কলুষের আবর্জনা বর্জন করবে, বিশ্ব দেবতার কাছে বাংলাদেশের অর্থরূপেই সে আপন সমাদর লাভ করবে। –রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
বাঙালির প্রধান রিপু হচ্ছে… আত্মভিমান…তাহাকে অহরহই স্তুতির সুদ ঢোঁকে ঢোঁকে গেলাতে হয়, তার কমতি হলেই তার অসুখ বোধ হয়।–রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
বাঙালির প্রাণ, বাঙালির আশা, বাঙালির কাজ বাঙালির ভাইবোনএক হউক, সত্য হউক, সত্য হউক হে ভগবান ।
বাঙালির প্রাণ বাঙালির মন, বাঙালির ঘরে যত ভাইবোন
এক হউক, এক হউক, এক হউক হে ভগবান।—রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
যে বাঙালি শস্যশ্যামলা বঙ্গভূমির ধানেক্ষেত্র পীঠস্থানে জ্ঞানে পূজা, কৃষাণদিগকে পূজার পুরোহিত এবং কৃষিগ্রন্থকে পূজার তন্ত্র বলিয়া সম্মান করিতে না শিখিল, সে বীরবলের বৃদ্ধ প্রপৌত্র হতে পারে বাঙ্গালী নহে।
—রায় বাহাদুর কালীপ্রসন্ন ঘোষ
রবির কিরণে। চাঁদের কিরণে
আঁধারে জ্বালিয়া মোমের বাতি,
সবে উচ্চরবে যারে তারে কবে
ভূতলে বাঙালি অধম জাতি।
–রাজকৃষ্ণ রায়
এক বাঙালি মহাশক্তি জ্ঞানে বিদ্যায় বুদ্ধিমত্তায় বাকপটুতায় কার্যতৎপরতায় বাঙালি জগতে অদ্বিতীয় মহাশক্তিমান সম্রাটেরও পূজনীয় কিন্তু একত্রে দশ বাঙালি অতি তুচ্ছ, হীন হতে হীন। অন্য জাতির দশে কার্য বাঙালির দশে কার্য
হানি। বাঙালির সকলেই কর্তা হইতে চান; সুতরাং দশজন বাঙালি একত্র হইয়া কোন কার্য করিতে হইলেই সর্বনাশ। — ক্ষীরোদপ্রসাদ বিদ্যাবিনোদ
তৈল-ঢালা স্নিগ্ধ তনু
নিদ্রারনে ভরা
মাথায় ছোটো বৃহরে বড়ো
বাঙালি সন্তান। —রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
বাঁশী
যাচা-প্রাণ নিয়ে আমি কেমনে সে বাঁজিলো
কেঁদে কেঁদে আজি লো কার বাঁশী বাজিল। –কাজী নজরুল ইসলাম
বাঁশী বাজানো জানো না
চাঁদ কাজি
অসময়ে বাজায়ে বাঁশী পরাণ মানে না।
যখন আমি বৈসা থাকি গুরুজনার মাঝে
নাম ধইরা বাজাও বাঁশী আমি মইরি লাজে।
নীরব নিশীথ রাত্রি মুপ্তির অতলে
ডুবে আছে সারা সৃষ্টি প্রশান্ত মধুর।
বাঁশী বাজে-সুর তার পড়ে গ’লে গ’লে
নির্জন রাতের কোলে বেদনা বিধুর। —আজিজুল হাকিম

আমি বাঁশী, অসির চেয়ে দামী
আমি ভ্রমর মধুর ব্যবসায়ী
চণ্ডীদাসের রামীর প্রণয় আমি
যৌবন আমি, কোষ্ঠি আমার নাহি। -কুমুদরঞ্জন মল্লিক।
বাঁশি বাজালেই কেউ নাচে না, তার সুরের মধ্যে নাচের উন্মাদনা থাকলেই নাচে।—ব্রিন্ট হার্টি
বাক স্বাধীনতা
বাক স্বাধীনতা যতো উৎসাহের সাথেই সমর্থন করা হোক না কেন, কেউ যদি রঙ্গমঞ্চে গিয়ে মিছেমিছি “আগুন আগুন” চীৎকার করে ত্রাসের সৃষ্টি করে তবে সমর্থন করা কিংবা রেহাই দেওয়া যায় না। – অলিভার ওয়েন্ডের হোমস
কোটি কোটি বুভুক্ষু জনসাধারণ, যাদের চক্ষু দীপ্তিহীন এবং অন্নই যাদের কাছে ঈশ্বর, তাদের ভগবানের বাণী শোনানো অরণ্যে রোদনেরই সামিল।—মহাত্মা গান্ধী
বাংলা গান
কী জাদু বাংলা গানে!
গান গেয়ে দাঁড় মাঝি টানে। – অতুলপ্রসাদ সেন
বাংলাভাষা
মোদের গরব, মোদের আশা, আমরি বাংলা ভাষা!
তোমার কোলে তোমার বোলে,
কতই শান্তি ভালোবাসা!—অতুলপ্রসাদ সেন
বাংলাভাষার মতো এমন একটি বৈজ্ঞানিক, সুপরিকল্পিত এবং সুশৃঙ্খল ভাষা না সভ্য জাতির সমূহের মধ্যে দুর্লভ। – মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী
আমাদের বঙ্গ ভাষা একটা বহুদূর প্রসারী বিরাট ভাষা। বঙ্গ ভাষা একটা সজীব ভাষা। উহা আজ বিশ্বের শ্রেষ্ঠ ভাষরাজ্যে আসন পরিগ্রহ করিয়াছে।
—আবদুল করিম সাহিত্য বিশারদ
মুসলমানেরা বাংলা ভাষায় যাহা দান করিয়াছেন, তাহা ভাষার অস্থিমজ্জায় বেমালুম মিশিয়া গিয়াছে। -মোঃ আহবাব চৌধুরী
হে বাংলা ভাষা আমার, আমি চিরকাল তোমার কাছে কৃতজ্ঞ থাকব । তুমি না হলে মানুষের উজ্জীবিত অভুত্থানের কথা
আমি কোনদিন উচ্চারণ করতে পারতাম না। – ফজল শাহাবুদ্দিন