মহান আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন তাঁর বান্দাদের বিপদ আপদ থেকে রক্ষা করার জন্য এই আয়াতটি পাঠিয়েছে আজকে আমরা আয়াতুল কুরসী বাংলা আরবি উচ্চারণ অর্থ ও ফজিলত সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব গুরুত্ব তাৎপর্য চেষ্টা করব
আয়াতুল কুরসী হচ্ছে পবিত্র কোরআনের দ্বিতীয় সুরা আল বাকারার ২৫৫ তম আয়াত। এটি হচ্ছে পবিত্র কোরআনের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ আয়াত। √ আবূ যার (রা:) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লা-হু ‘আলায়হি ওয়া সাল্লাম) এর কাছে জানতে চাইলেন : ইয়া রাসূলাল্লাহ (সাল্লাল্লা-হু ‘আলায়হি ওয়া সাল্লাম), কুরআনের সবচেয়ে মর্যাদা সম্পন্ন আয়াতে কারিমা কোনটি? তিনি (সঃ) উত্তরে বললেন, “আয়াতুল কুরসী” [ নাসাঈ; তাফসীর ইবনু কাসির-১ম, ২য় ও ৩য় খন্ড, পৃ: ৭০৩]
আয়াতুল কুরসী বাংলা আরবি উচ্চারণ অর্থ ও ফজিলত
আয়াতুল কুরসী মানুষের জীবনের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ, মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন তার পবিত্র কোরআনে যে দিক নির্দেশনা দিয়েছে মানুষের জন্য তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে যে এই আয়াতুল কুরসি, এই আমল প্রতিনিয়ত আমাদের করা উচিত
আরো পড়ুন তাহাজ্জুদ নামাজ কয় রাকাত।কোরআন হাদিসের আলোকে
তাহাজ্জুদ নামাজ সুন্নত নাকি নফল
তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ত নিয়ম দোয়া ও বাংলা উচ্চারণ
আয়াতুল কুরসী আরবি উচ্চারণ
আয়তুল কুরসী কুরসি হচ্ছে এই- اَللهُ لآ إِلهَ إِلاَّ هُوَ الْحَىُّ الْقَيُّوْمُ، لاَ تَأْخُذُهُ سِنَةٌ وَّلاَ نَوْمٌ، لَهُ مَا فِى السَّمَاوَاتِ وَمَا فِى الْأَرْضِ، مَنْ ذَا الَّذِىْ يَشْفَعُ عِنْدَهُ إِلاَّ بِإِذْنِهِ، يَعْلَمُ مَا بَيْنَ أَيْدِيْهِمْ وَمَا خَلْفَهُمْ وَلاَ يُحِيْطُوْنَ بِشَيْئٍ مِّنْ عِلْمِهِ إِلاَّ بِمَا شَآءَ، وَسِعَ كُرْسِيُّهُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ، وَلاَ يَئُودُهُ حِفْظُهُمَا وَ هُوَ الْعَلِيُّ الْعَظِيْمُ-
আয়াতুল কুরসী উচ্চারণ বাংলা
আল্লা-হু , লা ইলা-হা, ইল্লা হু , ওয়াল, হাইয়্যুল ক্বাইয়্যুম । লা তা’খুযুহু, সিনাতুঁ, ওয়ালা নাঊম । লাহূ মা ফিস্ সামা-ওয়াতি ওয়ামা ফিল আরদ্বি । মান যাল্লাযী ইয়াশফাউ’ ই’ন্দাহূ ,ইল্লা বিইজনিহি । ইয়া’লামু মা বাইনা আইদিহিম ওয়ামা খালফাহুম , ওয়ালা ইউহিতূনা , বিশাইয়্যিম্ , মিন ‘ইলমিহি , ইল্লা বিমা শা-আ ’ ওয়াসিআ ’ কুরসিইয়্যুহুস্ সামা-ওয়া-তি ওয়াল আরদ্বি, ওয়ালা ইয়াউ’দুহূ হিফযুহুমা ওয়া হুওয়াল ‘ আলিইয়্যুল আ’জিম। (সূরা আল-বাক্বারা আয়াত-২৫৫)
আয়াতুল কুরসী অর্থ
আল্লাহ, যিনি ব্যতীত কোন উপাস্য নেই। যিনি চিরঞ্জীব ও বিশ্বচরাচরের ধারক। কোন তন্দ্রা বা নিদ্রা তাঁকে পাকড়াও করতে পারে না। আসমান ও জমিনে যা কিছু আছে সবকিছু তাঁরই মালিকানাধীন। তাঁর হুকুম ব্যতিত এমন কে আছে যে, তাঁর নিকটে সুফারিশ করতে পারে? তাদের সম্মুখে ও পিছনে যা কিছু আছে সবকিছুই তিনি জানেন। তাঁর জ্ঞানসমুদ্র হতে তারা কিছুই আয়ত্ত করতে পারে না, কেবল যতুটুকু তিনি দিতে ইচ্ছা করেন তা ব্যতিত। তাঁর কুরসি সমগ্র আসমান ও জমিন পরিবেষ্টন করে আছে। আর সেগুলির তত্ত্বাবধান তাঁকে মোটেই শ্রান্ত করে না। তিনি সর্বোচ্চ ও মহান’।
আয়াতুল কুরসী ফজিলত
আয়াতুল কুরসি কুরআনুল কারিমের সবচেয়ে বড় সূরা সূরা আল-বাক্বারাহ্’র ২৫৫ নং আয়াত। এই পুরো আয়াতটিই আল্লাহর একত্ববাদ ও মর্যাদার বর্ণনা করা হয়েছে।
আয়াতুল কুরসী’র গুরুত্ব বোঝাতে নিচের হাদীসটি উল্লেখ করা হয়ে থাকে।
আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাযিঃ) বর্ণিত হাদীসঃ “আসমান-যামীনের মধ্যে আয়াতুল কুরসীর চাইতে মহান আর কোন কিছুই আল্লাহ তা’আলা সৃষ্টি করেননি, এর ব্যাখায় সুফিয়ান ইবনু উয়াইনাহ বলেন, আয়াতুল কুরসী হল আল্লাহ তা’আলার কালাম, আর আল্লাহ তা’আলার কালাম তো নিঃসন্দেহে আসমান-যামীনের সকল সৃষ্টির চাইতে মহান। (তিরমিযী – ২৮৮৪)
আমাদের অনেকেই আয়াতুল কুরসী’র কেবল নাম শুনেছি, আবার অনেকেই আয়াতুল কুরসী মুখস্ত বলতে পারি কিন্তু এর অর্থ জানিনা। তাই সবার সুবিধার্থে এই পোস্টে আয়াতুল কুরসী’র বাংলা উচ্চারণ ও বাংলা অনুবাদ দেয়া হল। এক্ষেত্রে একটি জিনিস অবশ্যই লক্ষ্যণীয়।
এক ভাষার উচ্চারণ আরেক ভাষার বর্ণমালা দিয়ে কখনোই সঠিকভাবে ও পরিপূর্ণভাবে প্রকাশ করা সম্ভব নয়। এই পোস্টের ক্ষেত্রেও তা প্রযোজ্য। আরবী ভাষার উচ্চারণকে কখনোই সঠিকভাবে ও পরিপূর্ণভাবে বাংলা বর্ণমালায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়। তাই এই বাংলা উচ্চারণ থেকে আরবী উচ্চারণের একটা ধারণা পাওয়া যেতে পারে, কিন্তু কখনোই সঠিক উচ্চারণ পাওয়া যাবেনা। আর এই সাথে এটাও মাথায় রাখা জরুরি যে, নামাযে সকল উচ্চারণ অবশ্যই সহীহ ও সঠিক হতে হবে। এ কারণে আরবী উচ্চারণের জন্য আসলে আরবী ভাষা সঠিকভাবে শেখার কোন বিকল্প নেই।
কোন ভুল-ভ্রান্তি হলে আল্লাহ তা’লা আমাকে ক্ষমা করুন। আল্লাহ আমাদের খাঁটিভাবে কুরআন তিলওয়াতের তওফিক দিন। আমিন।
1 হজরত আবু উমামা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি প্রত্যেক ফরজ নামাজ শেষে আয়াতুল কুরসি পড়ে, তার জান্নাতে প্রবেশ করতে মৃত্যু ছাড়া আর কোনো বাধা থাকে না। (নাসাঈ)
2 আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, সুরা বাকারার মধ্যে এমন একটি আয়াত রয়েছে, যে আয়াতটি পুরো কোরআনের নেতাস্বরূপ। তা পড়ে ঘরে প্রবেশ করলে শয়তান বের হয়ে যায়। তা হলো ‘আয়াতুল কুরসি’। (মুসনাদে হাকিম)
3 হজরত আলী রা. বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সা.-কে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি প্রত্যেক ফরজ সালাতের পর আয়াতুল কুরসী নিয়মিত পড়ে, তার জান্নাত প্রবেশে কেবল মৃত্যুই অন্তরায় হয়ে আছে। যে ব্যক্তি এ আয়াতটি বিছানায় শয়নের সময় পড়বে আল্লাহ তার ঘরে, প্রতিবেশির ঘরে এবং আশপাশের সব ঘরে শান্তি বজায় রাখবেন। [সুনানে বায়হাকী]
4 হযরত আবূ উমামা রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু হতে বর্ণিত তিনি বলেন আমাদের নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাহু সাল্লাম এরশাদ করিয়াছেন, যে ব্যক্তি প্রত্যেক ফরজ নামাযের শেষে আয়তাল কুরসি পড়ে তার জান্নাতে প্রবেশ করতে বিরক্ত ছাড়া আর কোনো বাধা থাকবে না—- নাসায়ী শরীফের হাদিস
5 হযরত আলী রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু বলেন হযরত মুহাম্মদ সাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করিয়াছেন ফরজ নামাজের পরে নিয়মিতভাবে পাঠ করবে তার জান্নাতে প্রবেশকারী মৃত্যু অন্তরায় থাকে, যে ব্যক্তি এই আয়াতটি ঘুমানোর পূর্বে তিলাওয়াত করে আল্লাহ তা’আলা তাঁর এবং প্রতিবেশীর ঘর এবং আশপাশে যত সমস্যা আছে সবগুলো মধ্যে শান্তি বর্ষিত করেন বাইহাকি শরীফের হাদয
6 হাসান উবাই বিন কাপড়ের আল্লাহ তা’আলা আনহু হতে বর্ণিত তিনি বলেন হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করিয়াছেন কোরআন মাজীদ এর মধ্যে সবথেকে বেশি উত্তম কোন আয়াতটি, এই প্রশ্নের জবাবে হযরত মুহাম্মদ সাল্লাহু সাল্লাম বলেছেন সবথেকে উত্তম হলো—- আল্লাহু লা ইলাহা ইল্লা হুয়াল হাইয়ুল এই আয়াতটি
উপরের আলোচনা থেকে ফজিলত আরবী উচ্চারন সহ এর তাৎপর্য বুঝেছি, এটি আমল করলে মহান আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন তাঁর বান্দাদের যে বিপদ আপদ রয়েছে সেগুলো থেকে মুক্তি দেবেন।