ইমার্জেন্সি পিল খাওয়ার কত দিন পর মাসিক হয় , অনেক সময় অনাকাঙ্ক্ষিত শারীরিক মিলন হয়ে যায়। অথবা মিলনের সময় কনডম ছিড়ে যায়। ফলে অনাকাঙ্ক্ষিতভাবেই গর্ভধারণের একটা আশঙ্কা থেকে যায়। তখন প্রয়োজন হয় ইমার্জেন্সি পিলের।
ইমার্জেন্সি পিল হলো একটি হরমোনাল ঔষধ যার মাধ্যমে অনাকাঙ্ক্ষিত গর্ভধারণ প্রতিরোধ করা সম্ভব হয়। এই ইমার্জেন্সি পিল ওভুলেশন প্রক্রিয়া পিছিয়ে দেয়। অর্থাৎ ইমার্জেন্সি পিল গ্রহণের ফলে নিষিক্ত ডিম্বাণুকে জরায়ুতে আসতে বাধাগ্রস্থ করে। ফলে অনাকাঙ্ক্ষিত গর্ভধারণ হয় না। তবে গর্ভধারণ করার পর এটা কাজ করবে না।
পাঁচটি পিল খাওয়ার পর মাসিক হতে কত দিন সময় লাগবে এবং কোন ধরনের পিল খেলে তাড়াতাড়ি মাসিক হয় সেটা জানতে চলে আসুন আমাদের ওয়েবসাইটে এবং আমাদের লেখাগুলো মনোযোগ সহকারে পড়ুন ও আমাদের সঙ্গেই থাকুন শেষ পর্যন্ত।
ইমার্জেন্সি পিল খাওয়ার কত দিন পর মাসিক হয়
আমরা আপনাদের সুবিধার জন্য এবার এই ধরনের আয়োজনটি করেছি এবং এই তথ্যগুলো দিয়ে আমাদের লেখাটি সাজিয়েছে আশা করছি আপনারা এই লেখাগুলো পড়লে সকল বিষয়ে সঠিক তথ্য জানতে পারবেন। ৫ টি পিল খেলে কত দিন পর মাসিক হবে বা কত দিন সময় লাগবে এটা নির্ধারণ করে আপনি কোন ধরনের পিল খাচ্ছেন আপনি যখন ইমার্জেন্সি পিল খাবেন এবং যদি পাওয়ারফুল পিল খান তাহলে মাসিক হতে বেশি সময় লাগবে না।
নোরিক্স খেলে কী হয়
নোরিক্স যেহেতু একটি ইমার্জেন্সি পিল। তো খুব জরুরি না হলে নোরিক্স খাওয়া উচিত না। এতে লাভের থেকে ক্ষতি একটু বেশি হয়। সবার ক্ষেত্রে এক না হলেও কিছু ক্ষেত্রে নোরিক্স সবার দেহে সহনীয়তায় আসে না। আবার এটা বেশি খেলেও দেহে তেমন কাজ করে না। নোরিক্স বেশি খেলে এক সময় এর কার্যকরীতা কমে গিয়ে গর্ভধারণ হতে পারে। তাছাড়াও হতে পারে মাথা ব্যথা, অনিয়মিত মাসিক, বমি বমি ভাব ইত্যাদি।
ইমকন ১ পিল খাওয়ার নিয়ম
ইমকনও এক ধরণের ইমার্জেন্সি পিল। নোরিক্সের মত যত ইমার্জেন্সি পিল আছে সবগুলোর খাওয়ার নিয়মই এক। তারই ধারাবাহিকতায় ইমকন খাওয়ার ৭২ ঘণ্টার ভেতর কয়েকবার সহবাস করা যায় অন্য কোনো সুরক্ষা ছাড়া। তবে স্বাভাবিকতই ইমকনও ৭২ ঘণ্টা পর তার কার্যকারিতা হারায়। ইমকনসহ সব ধরণের ইমার্জেন্সি পিল শুক্রাণুকে ডিম্বাণুতে নিষিক্ত হওয়া থেকে বাধা দেয়। ফলে গর্ভধারণ ব্যহত হয়।
পিল খাওয়ার পর একদিন বা দুই দিনের মধ্যেই মাসিক হয়ে যায় যদি এই ধরনের সময় বেশি লাগে তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করতে হবে এবং ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে। ইমারজেন্সি পিলে পাঁচটা করে ট্যাবলেট থাকে তার মধ্যে একটি বড় এবং চারটি ছোট আপনারা যখন ইমারজেন্সি পিল খাবেন তখন এই বিষয়ে সঠিকভাবে জানতে হবে এবং বিলগুলো আপনাকে সঠিক নিয়মে খেতে হবে তাহলে আপনি বুঝতে পারবেন যে কত তাড়াতাড়ি মাসিক হয়।
এ সকল বিষয়ে সবারই জেনে রাখা উচিত কারণ এমার্জেন্সি প্রেগন্যান্ট হয়ে গেলে কি করতে হবে এবং কি করলে তাড়াতাড়ি বাচ্চা নষ্ট হয়ে যাবে এ বিষয়গুলো যদি না জানা থাকে তাহলে গর্ভপাত করা অনেক কষ্টকর হয়ে যায়। আপনি যদি বাচ্চা নষ্ট করতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে জানতে হবে যে কোন কোন পিলের মাধ্যমে বাচ্চা নষ্ট করতে হয় এবং কোন কোন ইমার্জেন্সি পিল খেলে খুব তাড়াতাড়ি কাজ করে। তবে এই সকল বিল সেবন করার পর অনেক সাইড ইফেক্ট দেখা দিতে পারে আপনাদের এ বিষয়ে জানতে হবে।
ইমারজেন্সি পিল এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
ইমারজেন্সি পিল খাওয়ার ফলে কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হয়। যেমন- মাথা ব্যথা, বমি বমি ভাব, পেট ব্যথা, মাথা ঘোরা, মাসিক চক্র পরিবর্তন, স্বাভাবিকের চেয়ে ভারী বা হালকা রক্ত প্রবাহ, স্তনে ব্যথা, অবসাদ ও বমি।
ইমার্জেন্সি জন্মনিরোধক পিল খাওয়া কি নিরাপদ?
জরুরী গর্ভনিরোধক মূলত বেশিরভাগ মহিলাদের জন্য নিরাপদ বলে মনে করা হয়। জরুরী গর্ভনিরোধের ব্যবহার করার পরে গুরুতর ক্ষতির কোন রিপোর্ট নেই। যাইহোক, যদি আপনি অন্য কোন ওষুধে থাকেন, তবে জরুরী যে আপনি জরুরী গর্ভনিরোধক ব্যবহার করা নিরাপদ কিনা তা আপনার ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করুন।
ইমারজেন্সি পিল সেগুন করার পর অতিরিক্ত ব্লিডিং শুরু হয়ে যায় এবং এই ব্লিডিং অনেক সময় সাত দিনও থাকতে পারে আবার অনেক সময় দশদিনে থাকতে পারে এই সময়টা অনেক সাবধানতার সাথে পার করতে হয়। এছাড়াও আপনি যদি অনিশ্চিত হয়ে এমার্জেন্সি পেয়ে খান যেমন ধরেন যে আপনি প্রেগন্যান্ট না কিন্তু আপনি ইমার্জেন্সি লিখেছেন শুধুমাত্র সন্দেহর কারণে সে ক্ষেত্রে আপনার ক্ষতি হবে এটা আপনার কিডনির ক্ষতি করতে পারে বা আপনার শারীরিক দুর্বলতা সৃষ্টি করতে পারে।
অনেক সময় অতিরিক্ত এমারজেন্সি পিল খাওয়ার পর ফলে মহিলারা মোটা হয়ে যায় এবং এই মোটা হওয়ার ফলে তাদের বাঁচা পরে আর হতে চায় না এবং যখনই একটি মহিলা মোটা হয়ে যাবে তখন তার শরীরে নানারকম সমস্যা দেখা দিবে যেমন হরমোনের প্রবলেম হতে পারে আবার থাইরয়েডের সমস্যা শুরু হতে পারে। ইমারজেন্সি পিল সাধারণত পাঁচটা করে থাকে এই পাঁচটা ট্যাবলেটের মধ্যে বড় ট্যাবলেটটা প্রথমে পানি দেখে নিতে হবে এবং তারপরে ছোট ছোট চারটা ট্যাবলেট দুই মাস দুই পাশে দিয়ে আধাঘন্টা রেখে দিতে হবে।
ইমারজেন্সি পিল খেলে কি মাসিক হয়?
মাসিকের সময় ইমারজেন্সি পিল খেলে কি হয়? গর্ভনিরোধক ওষুধ খাওয়ার ফলে পিরিয়ড সাইকেল অনিয়মিত হতে পারে। এ ছাড়া মাথা ঘোরা, বমির মতো সমস্যা হতে পারে।
অপরিকল্পিত গর্ভধারণ রুখতে গর্ভনিরোধক ওষুধই শেষ কথা নয়। এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে কার্যকর হলো কপার আইইউডি। এটি ১০ বছর পর্যন্ত প্রেগন্যান্সি রুখতে সক্ষম।
ইমারজেন্সি পিল কখন খেতে হয়?
অপরিকল্পিতভাবে শারীরিক সম্পর্কের পর প্রথমেই গর্ভনিরোধক ওষুধ না খেয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
যখন আধাঘন্টা ট্যাবলেট গুলো মাটিতে রাখবেন তখন কোন রকম কোন থুতু বাইরে ফেলা যাবে না এবং ট্যাবলেট গুলো যেন গলে যায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। আধা ঘন্টার মধ্যে যদি পিল গুলো না গলে যায় তাহলে অবশ্যই পানি দিয়ে খেয়ে ফেলতে হবে। যখনই আপনি ইমার্জেন্সি পিল সেবন করবেন তখন অবশ্যই আপনাকে সঠিক নিয়ম সেবন করতে হবে যদি আপনি সঠিক নিয়মে সেবন না করেন তাহলে আপনার বাচ্চা নষ্ট হবে না আর অবশ্যই আপনাকে পরবর্তীতে টেস্ট করে দেখতে হবে যে এই পিল গুলো কাজ করেছে কিনা।
অনেক সময় পিল সেবন করার পরে মাসিক হতে চায় না এতে করে মানুষ ঘাবে যায় এবং ভাবে যে হয়তো বাচ্চা নষ্ট হয়নি সে ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে ডাক্তারের কাছে যেতে হবে বা 15 দিন পার হয়ে গেলে আবার টেস্ট করতে হবে। পিল খাওয়ার পরে ভালোভাবে পরীক্ষা নিরীক্ষা করতে হবে যদি পজেটিভ আসে তাহলে ডাক্তারি পরামর্শ নিতে হবে।
সাধারণত অনেকেই আছেন নিয়ম মেনে জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল খেতে ভুলে যান। এটি খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। কারণ, আমাদের দেশে বহুল ব্যবহৃত মেথড হচ্ছে পিল। কিন্তু প্রথম সাইড ইফেক্টই হচ্ছে, পিল খেতে ভুলে যাওয়া বা মিসড পিল।
এ ব্যাপারে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজের প্রসূতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মোসা.আফরোজা সরকার জলি বলেন, আমরা রোগীদেরকে যখন পিলের পাতা দেই, তখন ঠিক করে নিয়ম-কানুন বুঝিয়ে দিই। প্রথম মাসিকের অন্ততপক্ষে তৃতীয় দিন থেকে পঞ্চম দিনের মধ্যে পিল খাওয়া শুরু করবেন। তারপর প্রতিদিন একই সময় একটা করে পিল খেতে হবে।
২১ দিন খাওয়ার পর বাদ দিতে হবে। কিন্তু কোনো পিল যদি মিস হয় তাহলে প্রথমেই তাদেরকে আমরা বলে দিই- আপনার যখন প্রথম একদিন মিস হলো, পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে যখনই মনে পড়বে তখনই খেতে পারবেন। সেই দিনের ডোজটা নির্দিষ্ট সময় খাবে। এটা হচ্ছে একটা পিল মিস হলে।
ডা. মোসা.আফরোজা সরকার জলি বলেন, সাধারণত মাসিকের প্রথম সাত দিনের মধ্যে যদি এরকম একটা পিল মিস হয়, তাহলে যে কোনো সময় খেতে পারে অথবা নির্দিষ্ট সময় খেলেন। কিন্তু কারো যদি দুইটা পিল বাদ পড়ে এবং সেটা মাসিকের সপ্তম থেকে ১৪তম দিনে অথবা ২১তম দিনে হয়, তাহলে সে পিল যখন মনে হবে তখন খাবে। না হলে পরবর্তী দ্বিতীয় দিনে দুইটা পিল একসঙ্গে খাবে এবং তার পরবর্তী সাত দিন অথবা ১৪ দিন পর্যন্ত সে অন্য কন্ট্রাসেপটিভ বিশেষ করে বেরিয়ার মেথড বা কনডম ব্যবহার করবে।
এটা না হলে তারা অনিয়ন্ত্রিত গর্ভ সঞ্চালনের সম্ভাবনা থেকে যায়। আনওয়ান্টেড প্রেগনেন্সি হয়। আনওয়ান্টেড প্রেগনেন্সি থেকে এবরশনের হার অনেক বেশি বেড়ে যায়।
কারো যদি পিল ২১ দিনের পরবর্তী এবং ২৮ দিনের কাছাকাছি সময়ে অথবা শেষের ৭ দিনে কোনো পিল মিস হয়ে যায়, তাহলে সেক্ষেত্রে সে পাতাটা ফেলে দিয়ে ওয়েট করতে পারে যে তার মাসিক হয় কি-না। যদি মাসিক হয়, তখন তাহলে সে আবার নতুন পাতা শুরু করবে।
সূত্র: ডক্টর টিভি