ইসলামের প্রথম মুয়াজ্জিন কে , আজান দেওয়ার রীতি প্রতিষ্ঠিত হয় প্রথম হিজরিতে। রাসুল (সা.) আজান দেওয়ার জন্য প্রথম মুয়াজ্জিন হিসেবে বেছে নেন হজরত বেলাল ইবনে রাবাহ (রা.)–কে। বেলাল (রা.)–এর কণ্ঠস্বর ছিল সুমধুর।
ইসলামের প্রথম মুয়াজ্জিন কে
মদিনাবাসী অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করতেন তাঁর আজান শোনার জন্য। ইসলামের উষালগ্নে চরম প্রতিকূলতার মধ্যেও যাঁরা ইমানের আলোয় উদ্ভাসিত হয়ে উঠেছিলেন এবং প্রকাশ্যে তা ঘোষণা দেওয়ার দুঃসাহস দেখিয়েছিলেন, হজরত বেলাল (রা.) তাঁদের একজন।
মুয়াজ্জিনুর রাসুল’ বা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নিয়োগ দেয়া মুয়াজ্জিন ছিলেন ৪ জন। তাঁদের হৃদয়ে যেমন ছিল ইসলামের প্রতি ভালোবাসা তেমনি ছিল প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মহব্বত। প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামও তাঁদের অনেক ভালোবাসতেন। তারা হলেন-
কাবার মুয়াজ্জিন : আবু মাহজুরা রাদিয়াল্লাহু আনহু
অল্প বয়সী গোফ না ওঠা সুমধুর কণ্ঠের অধিকারী ছোট্ট বালক আবু মাহজুরা। পবিত্র নগরী মক্কার অধিবাসী। মক্কা বিজয়ের পরে মক্কার কোনো এক উপত্যকায় হজরত বেলালের আজানের পুনরাবৃত্তি করতে থাকে। যে সূর প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হৃদয়কে আকৃষ্ট করে তোলে। যদি আবু মাহজুরার সে আজানের পুনরাবৃত্তি ছিল ঠাট্টামূলক।
মহানবী (সা.)–এর মৃত্যুর পর তাঁর খুব কষ্ট হতো। তিনি আজান দেওয়ার আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন। একসঙ্গে সিরিয়া সফরের সময় হজরত উমর (রা.) বেলাল (রা.)-কে আজান দিতে অনুরোধ করেন। তাঁর অনুরোধে বেলাল (রা.) আজান দেন। সেই হৃদয়গ্রাহী আজান শুনে উপস্থিত মানুষের চোখ অশ্রুতে ভরে গিয়ে গভীর আবেগঘন পরিবেশ সৃষ্টি হয়। হজরত উমর (রা.) আবেগে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েন।
মসজিদে নববির মুয়াজ্জিন : বেলাল রাদিয়াল্লাহু আনহু
ইসলামের চরম অত্যাচার নির্যাতনের শিকার হজরত বেলাল রাদিয়াল্লাহু আনহু। এমন কোনো বর্বর নির্যাতন ছিল না যা তার মনিব উমাইয়া ইবনে খালফ তাকে দেয়নি। শত নির্যাতনেও তাকে ইসলাম থেকে বিন্দুমাত্র টলাতে পারেনি।
জালিমের হাতে বিলাল (রা.)-এর দুঃখ- দুর্দশা দেখে আবু বকর (রা.) নিপীড়ক উমাইয়া ইবনু খালফ-এর কাছ থেক তাকে কিনে নেন। এবং চিরকালের জন্য দাসত্বের শৃঙ্খল থেকে মুক্ত করে দেন। পরে তিনি নবীজি (সা.)-এর সান্নিধ্য অবলম্বন করেন। তার একাকীত্ব ও কষ্ট ভাগাভাগি করতে নবীজি (সা.) তাকে ও আবু উবায়দা ইবনুল জাররাহ (রা.)-কে ভ্রাতৃত্ব-বন্ধনে আবদ্ধ করে দেন।
মসজিদে নববির মুয়াজ্জিন : আব্দুল্লাহ ইবনে উম্মে মাকতুম রাদিয়াল্লাহু আনহু
হজরত বেলাল রাদিয়াল্লাহু আনহু ছিলেন মসজিদে নববির প্রথম ও প্রধান মুয়াজ্জিন। তিনি ছাড়াও আরো একজন মুয়াজ্জিন ছিলেন। তার নাম হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে উম্মে মাকতুম রাদিয়াল্লাহু আনহু। তিনি ছিলেন অন্ধ সাহাবি।
ইসলামের প্রথম মুয়াজ্জিন। বিলাল ইবনু রাবাহ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু। বংশসূত্রে তিনি হাবশি। আর সম্পর্কসূত্রে আত-তায়মি আল-কুরাশি। পারিবাকি নাম হলো— ‘আবু অব্দুল্লাহ’ কিংবা ‘আবু আব্দুর রহমান’। (মুয়াজ্জিনু রাসুলিল্লাহি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম; আলুকাহ ডটনেট : ১৯-০১-২০১৯)
মসজিদে কুবার মুয়াজ্জিন : সাদ আল কুরজি রাদিয়াল্লাহু আনহু
প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সর্ব প্রথম মদিনায় হিজরত করে একটি মসজিদ নির্মাণ করেন। সেটি হলো মসজিদে কুবা। এ মসজিদে কুবার প্রথম মুয়াজ্জিন ছিলেন হজরত সাদ আল কুরজি রাদিয়াল্লাহু আনহু।
(সূত্র: বিভিন্ন ওয়েবসাইট)