এশার নামাজ কয় রাকাত ,ও কি কি? নিয়ত এবং কিভাবে পড়তে হয়

এশার নামাজ কয় রাকাত , এশার নামাজ সম্পর্কে হাদিস শরীফে বর্ণনা রয়েছে “যে ব্যক্তি এশা ও ফজর জামাতের সঙ্গে পড়ল, সে যেন সারা রাত দাঁড়িয়ে নামাজ পড়ল।’’ (মুসলিম, হাদিস: ৬৫৬)



এশার ফরজ (আবশ্যিক) নামায ৪ রাকাত, যা প্রত্যেক মুসলিম’কেই পড়তে হয়। ফরজ অংশটি ইমামের নেতৃত্বে জামাতের সাথে আদায় করতে হয় তবে একান্তই কোনো অসুবিধা থাকলে নিজে নিজে পড়ে নেয়া যায়। তবে জামাতের সাথে পড়লে সাতাশ গুন বেশি সওয়াব।



এর পূর্বে ৪ রাকাত সুন্নাহ নামাজ রয়েছে। এটি ঐচ্ছিক নামাজ (সুন্নাতে যায়েদা বা গায়েরে সুন্নাত এ মুয়াক্কাদাহ ও বলা হয়)। এটিও পড়তে উৎসাহিত করা হয় এবং সময় থাকলে পড়া উচিত, তবে না পড়লে গুনাহ হবে না।

 

এশার নামাজ কয় রাকাত



ফরয ৪ রাকাতের পর ২ রাকাত সুন্নাহ নামায পড়তে হয় যা একটি গুরুত্বপূর্ণ সুন্নত (সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ) এবং নবীজী তার জীবদ্দশায় এটি কখনো ছাড়েননি। তারপর, কেউ কেউ ২ রাকাত নফল নামায পড়ে থাকেন যার কোন দলিল পাওয়া যায়নি। আসলে, নফল নামাযসমূহ নিষিদ্ধ সময় ব্যতীত দিনরাতের যেকোন সময় পড়া যায়। শুধু’যে ২ রাকাতই পড়তে হবে, ব্যপারটা এমন নয়।



এরপরের নামাজটি হল বিতরের নামায তবে এটার সাথে এশার নামাযের কোন সম্পৃক্ততা নেই। এটা ঘুম থেকে শেষ রাতে উঠে তাহাজ্জুদ নামাযের পর পড়া উত্তম। তবে যারা ঠিকমত ঘুম থেকে জাগতে পারেন না, তাদের জন্য উচিত হবে এশার নামাযের পরপরই পড়ে নেওয়া। হাদিস মতে, বিতরের নামাজ ১ রাকাত, ৩ রাকাত, ৫ রাকাত, ৭ রাকাত পড়া যায়।

 



মুসাফির অবস্থায় থাকলে ইসলামের বিধান অনুযায়ী ইশা’র চার রাকাত ফরজকে সংক্ষিপ্ত করে দুই রাকাত আদায় করতে হয়। তারপর শুধুমাত্র বিতর নামাযটি আদায় করতে হয়।


১ম ধাপ সুন্নত ৪ রাকাত

বন্ধুরা আপনারা ইতিমধ্যে এশার নামাজ কয় রাকাত এই সম্পর্ক অবগত হয়ে গেছেন। তো এই ১৭ রাকাতের মধ্যে আপনাকে প্রথমে সুন্নত নামাজ আদায় করে নিতে হবে যেটা হচ্ছে চার রাকাত ।তবে এটি যেহেতু সুন্নত নামাজ তাই অনেকেই এই নামাজ আদায় করে না। কিন্তু বন্ধুরা আপনারা অবশ্যই আদায় করবেন কারণ নামাজ পড়লে কিন্তু আপনি সওয়াব পেয়ে যাবেন ।এরপর ধাপে ধাপে আরও বেশ কিছু নামাজ আছে যেগুলো পরবর্তী স্টেপে আলোচনা করা হলো।

 


২য় ধাপ ফরজ ৪ রাকাত

এশার নামাজ পড়তে গিয়ে আপনি যখন প্রথমে ৪ রাকাত সুন্নত নামায আদায় করে ফেলবেন । তখন আপনাকে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতে হবে জামাতের সাথে ফরজ নামাজ আদায় করার জন্য ।মসজিদের মুয়াজ্জিন যখন দাড়িয়ে একামত দিবে তখন আপনি দাঁড়িয়ে ইমামের সাথে চার রাকাত ফরজ নামাজ আদায় করে নিবেন । এই ফরজ নামাজের গুরুত্ব কিন্তু সব থেকে বেশি তাই এই নামাজ ভুলেও মিস করা যাবে না ।




ফরজ নামাজ আদায় করা হয়ে গেলে ইমামের সাথে দোয়া করে আপনাকে নিজে নিজে বাকি 11 রাকাত নামাজ আদায় করে নিতে হবে যেগুলো আমি নিচে বর্ণনা করলাম ।তবে হ্যাঁ আপনি যদি বাড়িতে থেকে নামাজ আদায় করেন তাহলে কিন্তু সুন্নত নামাজ পড়ার পর আর অপেক্ষা করতে হবে না সাথে সাথে আপনি বাকি নামাজগুলো সম্পন্ন করে ফেলতে পারবেন ।

 


৩য় ধাপ সুন্নত ২ রাকাত ;;;;

বন্ধুরা আপনি মসজিদে ঢুকে ৪ রাকাত সুন্নত নামাজ পড়ার পরে যখন আবার চার রাকাত ফরজ নামাজ ইমামের সাথে আদায় করবেন এরপর কিন্তু আপনাকে দুই রাকাত সুন্নত নামাজ আদায় করে নিতে হবে ।এই সুন্নত নামাজ কিন্তু কোনভাবেই বাদ দেওয়া যাবে না কারণ মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর হাদিস অনুযায়ী দুই রাকাত সুন্নত নামাজ বাদ দিলে আপনার গুনাহ হতে পারে ।


৪র্থ ধাপ নফল ২ রাকাত


বন্ধুরা নফল নামাজ কিন্তু আমাদের নিজেদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি নামাজ । কারণ এই নামাজ আদায়ের মাধ্যমে আমরা সহজেই আল্লাহর নিকট্য লাভ করতে সক্ষম হতে পারি । তাই আপনি এশার দুই রাকাত সুন্নত নামাজ আদায় করার পর অবশ্যই এই পর্যায়ে এসে দুই রাকাত নফল নামাজ আদায় করে নিবেন।


যদি আপনার শারীরিক সমস্যা থাকে তাহলে এই নফল নামাজ আপনি বসে আদায় করতে পারেন তবে দাঁড়িয়ে আদায় করাই সবথেকে উত্তম এবং মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে পছন্দনীয় । আমাদের হয়ে গেল মোট ১২ রাকাত নামাজ আরো বাকি এশার নামাজ কয় রাকাত ও কি কি সেগুলো এখন আমরা ভালোভাবে জেনে নেই ।


৫ম ধাপ বেতের নামাজ ৩ রাকাত

বন্ধুরা আমাদের প্রতিদিনের পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের মধ্যে কিন্তু কোন নামাজের ভিতরে এই বেতের নামাজের নিয়ম নেই ।শুধুমাত্র এশার নামাজের ক্ষেত্রেই আমাদেরকে এই বেতের নামাজ আদায় করে নিতে হয়। এই নামাজ এক ওয়াক্তের হলেও এই নামাজের গুরুত্ব কিন্তু অনেক বেশি ।




বেতের নামাজকে আমরা ওয়াজিব নামাজ হিসেবেও ধরতে পারি । আর আপনারা অবশ্যই জানেন ফরজ এরর পরেই কিন্তু ওয়াজিব এর অবস্থান । তাই এই বিতের নামাজ কখনই মিস করবেন না ।দুই রাকাত নফল নামাজ আদায় করে নেওয়ার পর নিজে থেকে এই বেতের নামাজ আদায় করে নিবেন । তবে হ্যাঁ বেতের নামাজের শেষের রাকাতে কিন্তু দুইটা সূরা পড়ার পরে আলাদা করে দোয়া কুনুত পড়ে নিতে হয় ।

শেষ ধাপ নফল ২ রাকাত

উপরের আলোচনা গুলো পড়ার মাধ্যমে আপনারা অবশ্যই এশার নামাজ কয় রাকাত ও কি কি এই বিষয়গুলো সম্পর্কে ভালোভাবেই ধারণা পেয়েছেন । তো বন্ধুরা এশার নামাজের শেষে এসে আপনাকে তিন রাকাত বিতের নামাজ আদায় করে নেওয়ার পর অবশ্যই দুই রাকাত নফল নামাজ পড়ে নিতে হবে । আপনি চাইলে মাঝখানের দুই রাকাত নফল নামাজ বাদ দিয়েও এশার নামাজ আদায় করতে পারেন কিন্তু ভুলেও শেষের দুই রাকাত নফল নামাজ কখনই বাদ দিবেন না ।