ওয়ালাইকুম আসসালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহ

ওয়ালাইকুম আসসালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহ ,আমাদের প্রিয় নবী (সা.) বলেন, আল্লাহ তায়ালা প্রথমে হযরত আদম (আ.) কে সৃষ্টি করে বললেন ‘যাও অবস্থানরত ফেরেশতার ঐ দলকে সালাম করো। তারা তোমার সালামের কি উত্তর দেয় তা শ্রবণ করো। তখন তিনি বললেন ‘আসসালামু আলাইকুম’ তার উত্তরে ফেরেশতারা বললেন, ‘ওয়ালাইকুম আসসালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহ’। সেই থেকে মুসলমানের মাঝে সালামের রীতি প্রচলন শুরু হয়।



সালামের উত্তরে ‘ওয়া মাগফিরাতুহু ওয়া জান্নাতুহু’ বাক্য যোগ করার বিধান কী? এটা কি দলিল দ্বারা প্রমাণিত?


উত্তর : সালামের উত্তর প্রদানের সময় ‘ওয়া মাগফিরাতুহু ওয়া জান্নাতুহু’ বাক্য যোগ করা একটি ভুল আমল। অনেকে মনে করেন উত্তরদাতার জন্য এই শব্দগুলো বৃদ্ধি করাই নিয়ম। এটা সহিহ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত নয়। তাই তা পরিহার করা উচিত

 

ওয়ালাইকুম আসসালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহ

 


সালামের সুন্নত পদ্ধতি হলো—সালামদাতা বলবেন, ‘আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু’ আর উত্তরদাতা বলবেন, ‘ওয়া-আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহু’। এরপর কোনো কিছু সংযুক্ত করার ব্যাপারে হাদিসে নিষেধ করা হয়েছে। অবশ্য কোনো কোনো বর্ণনায় ‘ওয়াবারাকাতুহু’-এর পরে আরো কিছু বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে। কিন্তু সনদ বা বর্ণনার সূত্র বিবেচনায় তা গ্রহণযোগ্য নয়।


সুতরাং এমন সংযোগ পরিহার করে সুন্নত পদ্ধতিতে সালাম দেওয়া উচিত। (মাজমাউল জাওয়ায়িদ : ৮/৭০, মিরকাত শরহে মিশকাত : ৯/৫৫, আদ্দুররুল মুখতার : ৬/৪১৫)
গ্রন্থনা : মুফতি আবদুল্লাহ নুর




রাসুল (সা.) মুসলমানদের পরস্পরের মধ্যে সালাম বিনিময় করার প্রতি খুব বেশী গুরুত্ব আরোপ করেছেন এবং এটাকে সর্বোত্তম কাজ বলে আখ্যায়িত করেছেন। হাদীস শরীফে সালাম আদান-প্রদানের ফযিলত, বরকত ও গুরুত্ব সম্পর্কে বিভিন্নভাবে উল্লেখ আছে।

 

হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, ‘সালাম আল্লাহ তায়ালার অন্যতম নাম, যা তিনি পৃথিবীতে অবতীর্ণ করেছেন। কাজেই তোমরা পরস্পরে ব্যাপকভাবে সালাম করো। কেননা মুসলমান যখন কোন মজলিসে উপস্থিত হয়ে সালাম করে, তখন সে আল্লাহর কাছে একটি উচ্চ মর্যাদা লাভ করে। কারণ সে সবাইকে সালাম অর্থাৎ আল্লাহর কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। মজলিসের লোকেরা যদি সালামের উত্তর না দেয় তাহলে তাদের থেকে উত্তম ব্যক্তিরা সালামের জবাব দিবে অর্থাৎ ফেরেশতারা।’ (তিবরানী শরীফ)



ওয়া আলাইকুমুস সালাম ( وَعَلَيْكُمُ ٱلسَّلَامُ ) একটি আরবী অভিবাদন, যা বিশ্বজুড়ে মুসলমানরা প্রায়শই “আপনার উপর শান্তি বর্ষিত হোক” অর্থে ব্যবহার করে থাকে। এটি অন্যদের জন্য দোয়াস্বরূপ। এটি আস্সালামু আলাইকুম অভিবাদনটির ( ٱلسَّلَامُ عَلَيْكُمْ ) আদর্শ জবাব ।

 


সালাম দেওয়ার নিয়মঃ


اَلسَّلَامُ عَلَيْكُمْ
উচ্চারণ : আস-সালামু আলাইকুম।
অর্থ : আপনার ওপর শান্তি বর্ষিত হোক।

 


সালামের জওয়াব দেওয়ার নিয়মঃ

 


وَعَلَيْكُمُ السَّلَامُ
উচ্চারণ : ওয়া আলাইকুমুস সালাম।
অর্থ : আপনার ওপর ও শান্তি বর্ষিত হোক।



(বি:দ্র. বাংলায় আরবীর পুরোপুরি সহীহ উচ্চারণ ব্যক্ত করা সম্ভব নয়। আরবী দেখে এর সহীহ উচ্চারণ শিখে নেয়া উচিত)



রাসূল (সা.) বলেছেন, ‘যার হাত ও জিহŸা থেকে অন্য মুসলমান ভাই নিরাপদ থাকবে, সে-ই প্রকৃত মুসলমান। একজন অপরিচিত ব্যক্তির সঙ্গে সহজে পরিচিত হওয়া, খোলা মনে ভাবের আদান-প্রদান করা ও আপন করে নেয়ার জন্য সাক্ষাত হলে সালামই যথেষ্ট। এটি এমন একটি সম্ভাষণ যা হৃদয় ছুঁয়ে যায়, পরষ্পরকে দ্রæত কাছে টেনে নেয়। আর পরিচিত ব্যক্তির সঙ্গে সালাম বিনিময়ের ফলে হৃদ্যতা আরও বৃদ্ধি পায়।

 

 

সালাম বিনিময়ের মাধ্যমে শত্রুতা দূর হয়, বন্ধুত্ব সৃষ্টি হয় এবং স¤প্রীতি ও সহযোগিতার পরিবেশ গড়ে ওঠে। সালাম হলো ইসলামের একটি প্রতীক, একটি নিদর্শন। ব্যাপকভাবে সালাম বিনিময়ের ফলে একটি ইসলামী সামাজিক পরিবেশ সৃষ্টি হয়, যেখানে পরস্পরের মাঝে সৌহার্দ্য-স¤প্রীতি, সাহায্য-সহযোগিতার মনোভাব গড়ে ওঠে। কেননা সালাম বিনিময়ের মধ্যে নিহিত আছে পরস্পরের জন্য নিরাপদে ও শান্তিতে জীবন-যাপনের কামনা।


(সূত্র: বিভিন্ন ওয়েবসাইট)