কত দিন পর পর বীর্য ফেলা উচিত , প্রাপ্ত বয়স্ক নব্য বিবাহিতদের ক্ষেত্রে প্রাথমিক দিকে দিনে দু তিন বার সহবাসের মাধ্যমে বীর্য ত্যাগ করার বিষয়টি লক্ষ করা যায়। কিছু দিন পর আগ্রহ আর শরীরগতিক বিবেচনা করে একদিন পর পর সহবাস করতে দেখা যায়। তারপর সেটা কমে গিয়ে সপ্তাহে তিনদিন কিংবা দু দিনে রুপ নেয়। পরবর্তী তে মাসে হয়তো তিন চারদিন। বয়সের সাথে সাথে এভাবেই কমতে থাকে আগ্রহ আর চাহিদা।
তবে এক টানা এক বছর যৌন মিলন না করে বীর্য জমিয়ে রাখা সম্ভব হবে না। জীবনধারা ও খাদ্য গ্রহনের উপর ভিত্তি করে উৎপাদিত বীর্য মাসে দু একবার কিংবা তার বেশি সময়ে কোন এক স্বপ্নকে কেন্দ্র করে বেরিয়ে যাবে। কোন ভাবেই বীর্যকে আঁটকিয়ে রাখা সম্ভব হবে না।
কত দিন পর পর বীর্য ফেলা উচিত
রং দেখে সাবধান:
সুস্থ মানুষের বীর্যের রং সাদা। কখনও ধূসর-সাদা। তবে পঞ্চাশোর্ধ্বদের বীর্যের রং বয়সজনিত অনেক সময় হালকা হলদেটে হয়। তাতে চিন্তার কিছু নেই। অতিরিক্ত রসুন খেলেও রং হলদেটে হতে পারে। তবে বীর্যের রং রক্তাভ হলে সাবধান। এর অর্থ বীর্যের সঙ্গে রক্তপাত হচ্ছে।
ডাক্তারি ভাষায় একে বলে হেমাটোস্পার্মিয়া। প্রস্টেটে বায়োপসি করলে সাধারণত বীর্যের সঙ্গে রক্ত বের হয়। এছাড়া পুরুষাঙ্গের টেস্টিস, প্রস্টেটের মতো গ্রন্থিগুলিতে টিউমার বা ইনফেকশন অথবা প্রস্রাবে ইনফেকশন হলেও বীর্যের সঙ্গে রক্ত আসতে পারে। ইনফেকশনের ক্ষেত্রে ইউরিন কালচার করে কারণ অনুসন্ধান করতে হয়।বাদামি রঙের বীর্যপাত ইকোলাই, টিবির লক্ষণ। আবার অনেক সময় ইনফেকশনের কারণে রক্ত জমে বাদামি হয়ে নিঃসৃত হয়। কয়েকজনের বীর্যের রং সবুজাভও হয়।
তবে তা অত্যন্ত বিরল। ঠিক কী কারণে সবুজ হয় তা নিয়ে চিকিৎসক মহলে ধোঁয়াশা রয়েছে। অনুমান, কোনও খাবারের রঙের জন্য এমন বিচিত্র রং হতে পারে। বীর্যের রং অস্বাভাবিক হলে অবশ্যই অ্যান্ড্রোলজিস্ট বা ইউরোলজিস্টের কাছে যান। ওষুধের মাধ্যমে সমস্যা সেরে যায়।
হস্তমৈথুনের কারণে দুই ধরনের সমস্যা হয়- মানসিক সমস্যা ও শারীরিক সমস্যা: অতিরিক্ত হস্তমৈথুনের ফলে যে ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে: অকাল বীর্যপাত(Premature Ejaculation)। অর্থাৎ খুব অল্প সময়ে বীর্যপাত ঘটে। ফলে স্বামী তার স্ত্রীকে সন্তুষ্ট করতে অক্ষম হয়। বৈবাহিক সম্পর্ক বেশিদিন স্থায়ী হয় না।।
বীর্য পাতলা হয়ে যায় (Temporary Oligospermia)- Oligospermia হলে বীর্যে শুক্রাণুর সংখ্যা কমে যায়। তখন বীর্যে শুক্রাণুর সংখ্যা হয় ২০ মিলিয়নের কম। যার ফলে Male infertility দেখা দেয়। অর্থাৎ সন্তান জন্মদানে ব্যর্থতা দেখা দিতে পারে। একজন পুরুষ যখন স্ত্রীকে রমন করেন তখন তার পুরুষাঙ্গ থেকে যে বীর্য বের হয় সেই বীর্যে শুক্রাণুর সংখ্যা হয় ৪২ কোটির মত। বিজ্ঞান বলে, কোনও পুরুষের থেকে যদি ২০ কোটির কম শুক্রাণু বের হয় তাহলে সে পুরুষ কোনও সন্তানের জন্ম দিতে পারেন না।
কতটা স্বাভাবিক:
সাধারণত মিলন বা হস্তমৈথুনের পর প্রথমবার ৩.৭ মিলিলিটার বীর্য ক্ষরিত হয়। কিছুক্ষণের মধ্যে পুনরায় করলে পরিমাণ কমে। অনেকে খুব তরল বীর্য দেখে চিন্তিত হয়ে পড়েন। ঘনঘন মিলনের ফলে বীর্যপাত করলে সাধারণত তা তরল হয়। এটা কোনও অসুখ নয়। বীর্য আসলে তরলই হয়। কিন্তু ক্ষরণের কিছুক্ষণের মধ্যেই তা ঈষৎ ঘন হতে থাকে। বীর্যে থাকা প্রোটিনের জন্য ঘন হয়। কিন্তু ২০ মিনিট থেকে আধ ঘণ্টার মধ্যে ফের প্রোটিন ভেঙে বীর্য জলের মতো তরল হয়ে যায়।
প্রস্রাবের সঙ্গে বীর্য:
সমস্যাটির নাম রেট্রোগ্রেড ইজ্যাকিউলিশন। যখন স্পার্ম বা শুক্রাণু টেস্টিস থেকে বের হয় তখন মূত্রথলির মুখ বন্ধ থাকে। কিন্তু কারও কারও ক্ষেত্রে প্রস্টেট বা মূত্রথলিতে কোনও অপারেশন বা ওষুধের জন্য স্পার্ম বেরনোর সময় মূত্রথলির মুখ খোলা থাকে। এঁদের ক্ষেত্রে স্পার্ম মূত্রথলির দিকে চলে যায় এবং প্রস্রাবের সঙ্গে বীর্য বেরিয়ে যায়। এই সমস্যা নিয়েও তেমন চিন্তার কিছু নেই। তবে ডাক্তার দেখিয়ে নেওয়া ভাল। কখনও ইউরিন ইনফেকশন হলে প্রস্রাবের সঙ্গে পুঁজের মতো কিছু বের হয়। অনেকে এই পুঁজের মতো অংশকে বীর্য ভেবে উদ্বিগ্ন হন।
অতিরিক্ত হস্তমৈথুন পুরুষের যৌনাঙ্গকে দুর্বল করে দেয়। Nervous system, heart, digestive system, urinary system এবং আরও অন্যান্য system ক্ষতিগ্রস্ত হয় । পুরো শরীরদুর্বল হয়ে যায় এবং শরীর রোগ-বালাইয়ের যাদুঘর হয়ে যায়। চোখের ক্ষতি হয়। স্মরণ শক্তি কমে যায়। মাথা ব্যথা হয় ইত্যাদি আরও অনেক সমস্যা হয় হস্তমৈথুনের কারণে।
আরেকটি সমস্যা হল Leakage of semen। অর্থাৎ সামান্য উত্তেজনায় যৌনাঙ্গ থেকে তরল পদার্থ বের হওয়া। শারীরিক ব্যথা এবং মাথা ঘোরা। যৌন ক্রিয়ার সাথে জড়িত স্নায়ুতন্ত্র দুর্বল হওয়া অথবা ঠিক মত কাজ না করার পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়া। শরীরের অন্যান্য অঙ্গ যেমন: হজম প্রক্রিয়া এবং প্রসাব প্রক্রিয়ায় সমস্যা সৃষ্টি করে।
প্রস্টেট নেই, বীর্য নেই:
প্রস্টেট অপারেশনে প্রস্টেট বাদ গেলে বীর্য ক্ষরণ হয় না। কারণ, বীর্য যে পথে এসে পুরুষাঙ্গ দিয়ে বের হয় সেই পথ প্রস্টেট গ্রন্থির একটা অংশ। তবে টেস্টিকেলস না থাকলেও বীর্যপাত সম্ভব। সেক্ষেত্রে বীর্যে শুক্রাণু উপস্থিত থাকবে না।
সময় জরুরি:
মিলনের কতক্ষণের মধ্যে বীর্যপাত হওয়া স্বাভাবিক তা নিয়ে অনেকের মনে প্রশ্ন থাকে। অনেকে ভাবেন, আধ ঘণ্টা না হলে সব ঠিকঠাক নেই। শীঘ্রপতনের আশঙ্কায় কুণ্ঠিত বোধ করেন। কিন্তু আসলে চরম মুহূর্তে পৌঁছনোর পর দু’ থেকে সাত মিনিটে বীর্যপাত হওয়া স্বাভাবিক।
এর চেয়ে কম সময়ের মধ্যে বীর্যপাত হলে তাকে বলে প্রিম্যাচিওর ইজ্যাকিউলেশন। এটা একটা অসুখ। কোলেস্টেরল, সেক্স হরমোনের সমস্যা বা অতিরিক্ত ধূমপানের নেশা থেকে এই সমস্যা হতে পারে। বিশিষ্ট ডাক্তারের কাছে এর চিকিৎসা জরুরি। সাধারণত একটু বয়স্কদের এমন প্রিম্যাচিওর ইজ্যাকিউলেশন হয়। তাই ওষুধ দিয়ে তাঁদের যৌন ক্ষমতা বাড়ানোর আগে হার্ট, প্রেশার ঠিক আছে কি না তা চেক করে নেওয়া উচিত।
দ্রুত বীর্যস্থলনের প্রধান কারণ অতিরিক্ত হস্তমৈথুন। হস্তমৈথুনের ফলে অনেকেই কানে কম শুনতে পারেন হস্তমৈথুন ছাড়ার টিপস : কোন কোন সময় হস্তমৈথুন বেশি করেন, সেই সময়গুলো চিহ্নিত করুন। বাথরুম বা ঘুমাতে যাওয়ার আগে যদি উত্তেজিত থাকেন, বা হঠাৎ কোনও সময়ে যদি এমন ইচ্ছে হয়, তাহলে সঙ্গে সঙ্গে কোনও শারীরিক পরিশ্রমের কাজে লাগে যান।
যেমন ডন বৈঠক বা অন্য কোনও ব্যায়াম করতে পারেন। যতক্ষণ না শরীর ক্লান্ত হয়ে যায়, অর্থাৎ হস্তমৈথুন করার মত আর শক্তি না থাকে, ততক্ষণ পর্যন্ত সেই কাজ বা ব্যায়াম করুন। স্নান করার সময় এমন ইচ্ছে জাগলে শুধু ঠাণ্ডা জল ব্যবহার করুন এবং দ্রুত বাথরুম থেকে বেরিয়ে আসুন। যতটা সম্ভব নিজেকে কাজে ব্যস্ত রাখুন। ধৈর্য ধরতে হবে।
গন্ধে কষ্ট:
কারও কারও বীর্যে আঁশটে গন্ধ ছাড়ে। দীর্ঘদিন এমন হলে সেক্সওলোজিস্ট ডাক্তার ( SEXOLOGIST DOCTOR ) এর পরামর্শ মতো কিছু অ্যান্টিবায়োটিক খেতে হবে।
ত্বকের জন্য ভাল:
বীর্যে এমন কিছু উপাদান থাকে যা ত্বকের জন্য ভাল। অ্যাকনে, ডার্ক সার্কল, ত্বক মসৃণ করতে বীর্য থেকে তৈরি ক্রিমের ব্যবহার ভাল। সরাসরি লাগালেও উপকার।
মান ভাল রাখতে :
সুস্থ সন্তানের জন্ম দিতে চাইলে স্পার্মের মান ভাল রাখা জরুরি। তাই বেশি করে সবুজ শাক—সবজি, কলা, রসুন খান। নিয়মিত শরীরচর্চা করে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন।
একদিনেই নেশা থেকে মুক্তি পাবেন, এমন হবে না। একাগ্রতা থাকলে ধীরে ধীরে যে কোন নেশা থেকেই বের হয়ে আসা যায়। মাঝে মাঝে ভুল হয়ে যাবে। তখন হতাশ হয়ে সব ছেড়ে দেবেন না। চেষ্টা করে যান। হস্তমৈথুনে চরমভাবে এডিক্টেড হলে কখনোই একা থাকবেন না, ঘরে সময় কম কাটাবেন, বাইরে বেশি সময় কাটাবেন। জগিং করতে পারেন, সাইকেল নিয়ে ঘুরে আসতে পারেন।
ছাত্র হলে ক্লাসমেটদের সাথে একসাথে পড়াশুনা করতে পারেন। লাইব্রেরি বা কফি শপে গিয়ে সময় কাটাতে পারেন। সন্ধ্যার সময়ই ঘুমিয়ে পড়বেন না। কিছু করার না থাকলে মুভি দেখুন বা বই পড়ুন। ভিডিও গেম খেলতে পারেন। এটাও হস্তমৈথুনের কথা ভুলিয়ে দেবে।
সুস্থ থাকতে সপ্তাহে কতবার বীর্যপাত করা উচিত? বহু পুরুষের মনেই এই প্রশ্ন জাগে। সহবাস বা মৈথুনের মাধ্যমে প্রতিদিনই করতে পারেন। তবে সপ্তাহে তিন-চারদিন করেন তাঁদের শরীর বেশি ভাল থাকে। মনে রাখবেন আতিরিক্ত হস্তমৈথুন শরীরের পক্ষে ক্ষতিকর।
২০ বছরের পরেই সহবাস শুরু করলে ৪০-৪৫ বছর বয়সের পর যৌন চাহিদা বা বীর্যপাত কমতে থাকে। ৩০-এর পর থেকে যাঁরা সহবাস করেন তাঁদের ক্ষমতা আরও বেশি বয়স পর্যন্ত হয়। তবে বীর্যপাতের সঙ্গে বয়সের তেমন কোনও সম্পর্ক নেই।
(সূত্র: বিভিন্ন ওয়েবসাইট)