কাজু বাদাম খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা

কাজু বাদাম খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা , কাজু বাদাম খাওয়ার উপকারিতা
কাজুবাদাম খাওয়া আমাদের জন্য অনেকগুলি উপকারিতা রইল। এক্ষেত্রে কিছু উপকারিতা সংক্ষেপে নিচে তুলে ধরা হলো:


হৃদরোগ প্রতিরোধে সহায়তা: কাজুবাদামে স্বাস্থ্যকর আনসার ফ্যাট, ভিটামিন ই এবং ক্যারোটিন থাকায় এটি হৃদরোগের ঝুঁকি কমিয়ে দেয়।



কাজু বাদাম কি কারনে খাচ্ছেন সেটার উপর নির্ভর করে। আপনি যদি ডায়েট করার জন্য খান তাহলে সকাল আর দুপুরের খাবারের মাঝে ১১.৩০ থেকে ১২.০০ টার মধ্যে একমুঠ খেয়ে নিবেন। আবার বিকাল ৪.০০ — ৪.৩০ এর মধ্যে একমুঠ। সোজা কথা আপনার যখন হালকা ক্ষুধা লাগবে তখন অন্য খাবার না খেয়ে কাজু বাদাম খেলে আপনার ক্ষুধাও মিঠবে এবং এর উপকারটাও পাবেন।



কাজু বাদাম খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা



মানসিক স্বাস্থ্য উন্নতি: কাজুবাদামে ম্যাগনেসিয়াম থাকায় এটি মনোবিজ্ঞানিক সমস্যাগুলি সাম্প্রতিক চিন্তা ও তাড়াতাড়ির মধ্যে শক্তি দেয়।


শক্তি ও ক্যালোরি সরবরাহ: কাজুবাদাম একটি প্রাকৃতিক শক্তি বোধ ও উচ্চ ক্যালোরি সরবরাহ করে।

ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়তা: কাজুবাদামে গ্যালিক এসিড, এন্টিওক্সিডেন্ট এবং প্রোটিন থাকায় এটি ক্যান্সারের ঝুঁকি কমিয়ে দেয়।

 


কাজু বাদাম খাওয়ার কিছু নিয়ম আছে যা আপনাকে নিয়ম অনুযায়ী খেতে হবে। কাজু বাদাম প্রথম অবস্থায় উপরের খোসা ছাড়িয়ে ভিতরের শাঁস অংশ বের করা হয়। কাজু বাদাম কাঁচায় না খেয়ে রোদের মধ্যে ভালোভাবে শুকিয়ে লবন পানিতে কিচ্ছুক্ষণ ভিজে রাখা হয়।

 

তবে কাজু বাদাম বাজারে সব সময় লবন যুক্ত পাওয়া যায়। কাজু বাদাম বেশি মিষ্টি স্বাদের করে খেতে হলে ভাজারপর চিনির রসের মধ্যে ডুবিয়ে রাখলে বেশি মিষ্টি হয়। বিভিন্ন প্রকার খাদ্যের মধ্যে কাজু বাদাম ব্যবহার করলে খাবারের স্বাদ অনেক গুণে বেড়ে যায়।



হার্ট স্বাস্থ্য উন্নতি: কাজুবাদামে পরিবেশনা হয় অনসার ফ্যাট ও আনসার প্রোটিন, যা হার্টের স্বাস্থ্য উন্নতির জন্য উপকারী।

 


অন্যান্য কোষ ও অঙ্গগুলির প্রতিরক্ষা: কাজুবাদামে ভিটামিন ই এবং আনসার প্রোটিন থাকায় এটি কোষ ও অঙ্গগুলির প্রতিরক্ষা করে।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ: কাজুবাদামে আনসার ফ্যাট ও ম্যাগনেসিয়ামের মাধ্যমে রক্তে শর্করা উচ্চতা নিয়ন্ত্রণ করে ডায়াবেটিস প্রতিরোধে সহায়তা করে।

হজম ও পাচন সুবিধা: কাজুবাদামে প্রোটিন এবং আনসার ফ্যাট থাকায় এটি হজম ও পাচন সুবিধা প্রদান করে।

 


রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বৃদ্ধি:



ফাস্টফুডজাতীয় খাবার, অনিয়ম, বিরূপ আবহাওয়াসহ নানা কারণে আমাদের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কমে যাচ্ছে। রোগের সঙ্গে লড়াই করতে বাড়াতে হবে প্রতিরোধক্ষমতা। এ জন্য ভরসা রাখতে পারেন দুধে ভেজানো কাজুবাদামের ওপর।


কাজুতে ভিটামিন ও মিনারেলস প্রচুর পরিমাণে রয়েছে। তাই শরীরের প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে নিয়মিত খেতে পারেন দুধে ভেজানো কাজুবাদাম।



প্রতিস্থাপন শক্তি বৃদ্ধি: কাজুবাদামে থাকা আনসার ফ্যাট ও প্রোটিন মানসিক শক্তি বৃদ্ধি করে এবং ক্ষতিগ্রস্ত কোষকে পুনরুদ্ধার করে।

এগুলি হলো কাজুবাদাম খাওয়ার কিছু উপকারিতা সহজ ভাষায় উল্লেখযোগ্য সংক্ষিপ্ত তালিকা। মনে রাখবেন, এগুলি সাধারণ তথ্য মাত্র এবং সক্ষম চিকিৎসকের পরামর্শের পরে কাজুবাদাম অত্যাবশ্যক সম্পন্ন খাদ্য বস্তু নয়।

 

কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা:



যারা দীর্ঘদিন ধরে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় ভুগছেন, তাদের জন্য দুধে ভেজানো কাজু হতে পারে এক মহৌষধ। কাজুতে রয়েছে ফাইবারের মতো উপাদান, যা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে পেটের সমস্যার সমাধানও করে থাকে।

 


সকালে খালি পেটে কাজু বাদাম খাওয়ার উপকারিতা
সকালে খালি পেটে কাজুবাদাম খাওয়া একটি ভালো আদ্যত্তর অভ্যাস। এটির উপকারিতা নিম্নলিখিত সম্পর্কে জানা যায়:

 


প্রতিস্থাপন শক্তি বৃদ্ধি: সকালে খালি পেটে কাজুবাদাম খাওয়া ত্বরান্ত প্রতিস্থাপন শক্তি বৃদ্ধি করে। এটি আপনাকে উচ্চ শক্তি এবং চিত্তপ্রসাদের সাথে শুরু দেয়।

কাজু বাদাম খাওয়ার সঠিক নিয়মঃ
কাজু বাদাম খাওয়ার উপকারিতা অনেক। তাই এটি নিয়মিত খাওয়ার অভ্যাস করা উচিৎ। তবে কিভাবে বা কি নিয়মে খাবেন তা জানা দরকার। এর জন্য প্রথমে আপনাকে ঠিক করতে হবে আপনি কেন খাবেন? এবং কখন খাবেন?

 


যদি আপনি ডায়েট এর জন্য খেয়ে থাকেন তাহলে সকালের নাস্তার পর এবং দুপুরের খাবারের আগের সময়, যেমন- ১১.০০–১.০০ টার মধ্যে একমুঠ বাদাম খেতে পারেন। আবার বিকালেও যখন হালকা ক্ষুধা লাগবে তখন নাস্তা হিসাবে অন্য খাবার না খেয়ে একমুঠ কাজু বাদাম ৪.০০–৫.৩০ টার মধ্যেও খেতে পারেন। এতে ক্ষুধাও চলে যাবে সেই সাথে আপনার ডায়েটও ঠিক থাকবে।

ডায়েট ছাড়া যদি অন্য কোন কারণে খেয়ে থাকেন তাহলে ১০–১২ টি বাদাম রাতে ভিজিয়ে রেখে সকালে তা খেয়ে নিবেন



পুষ্টিকর: কাজুবাদাম সম্পন্ন একটি উচ্চ পুষ্টিকর খাদ্য বস্তু। এটিতে প্রোটিন, ভিটামিন, মিনারেলস এবং আনসার ফ্যাট থাকায় আপনাকে পুরোপুরি পুষ্টিতে রাখে।

মনোবিজ্ঞানিক সমস্যা সামাপ্তি: কাজুবাদামে থাকা ম্যাগনেসিয়াম মানসিক চিন্তা ও তাড়াতাড়ির সমস্যাগুলি সামাপ্ত করে মানসিক স্থিতিশীলতা ও সুস্থ মনস্থতা সাধারণ রাখে।

 


চুলের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করেঃ


কাজু বাদামে প্রচুর পরিমাণে রয়েছে কপার। আর এই উপাদানটি হল সেই খনিজ, যা চুলের সৌন্দর্য বাড়ানোর সাথে সাথে চুলের গোড়াকে শক্ত করতে বিশেষ দায়িত্ব পালন করে থাকে। এছাড়াও কাজু বাদামে থাকা কপার শরীরের ভিতরের কিছু এনজাইমের ক্ষরণ বৃদ্ধি করে যা চুলের রংকে কালো রাখতে সহায়তা করে।



হৃদয় স্বাস্থ্যের উন্নতি: কাজুবাদামে স্বাস্থ্যকর আনসার ফ্যাট ও ভিটামিন ই থাকায় এটি হৃদয়ের স্বাস্থ্য উন্নতি করে হৃদরোগের ঝুঁকি কমিয়ে দেয়।

ডায়াবেটিস প্রতিরোধে সহায়তা: কাজুবাদামে থাকা আনসার ফ্যাট ও ম্যাগনেসিয়াম রক্তে শর্করা উচ্চতা নিয়ন্ত্রণ করে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমিয়ে দেয়।

এইগুলি হলো সকালে খালি পেটে কাজুবাদাম খাওয়ার কিছু উপকারিতা সহজ ভাষায় সংক্ষেপে উল্লেখযোগ্য বিষয়গুলি। মনে রাখবেন, এগুলি সাধারণ তথ্য মাত্র এবং সক্ষম চিকিত্সকের পরামর্শের পরে কাজুবাদাম অত্যাবশ্যক সম্পন্ন খাদ্য বস্তু নয়।

 


বিভিন্ন প্রকার সংক্রমণের ঝুকি কমায়ঃ


কাজু বাদামে থাকে জিঙ্ক, যার কাজ হলো ভাইরাসের আক্রমণের হাত থেকে শরীরকে রক্ষা করা। তাই নিয়মিত কাজু খেলে আপনি এই ধরনের ইনফেকশনের হাত থেকে রেহাই পেতে পারেন।

হার্টের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করেঃ
কাজু বাদামের প্রধান উপাদান অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ক্যান্সার রোগকে দূরে রাখার সাথে সাথে নানারকম হার্টের রোগ থেকে বাঁচাতেও বিশেষ কাজ করে থাকে।



কাজু বাদাম খাওয়ার নিয়ম
কাজু বাদাম খাওয়ার নিয়মগুলি নিম্নরূপে উল্লেখ করা যেতে পারে:

শুধুমাত্র গুণগ্রহণযোগ্য ও সঠিক কাজু বাদাম নির্বাচন করুন। পরিষ্কার, ভালোমানের এবং বিশুদ্ধ কাজু বাদাম নিশ্চিত করুন।


কাজু বাদাম নির্বাচন করার পূর্বে তাদের শেল পরিষ্কার করে নিন।
স্বাস্থ্যকর হয়ে কাজু বাদাম খাবার জন্য স্বস্তি পর্যাপ্ত থাকলে ভালো। কাজু বাদামের মধ্যে পরিমাণ সিঙ্গেল সারজনিত না থাকলে এটি অতিরিক্ত সার ধরে রাখতে পারে।

 


সাধারণত কাজু বাদাম তারিখ থেকে পরিষ্কার এবং সংরক্ষিত থাকে। তবে, যদি আপনি কাজু বাদাম খাবার পরের কিছুদিনের জন্য সংরক্ষণ করতে চান, তবে তা একটি বন্ধ সংরক্ষণাগারে ভালোভাবে রাখবেন।
কাজু বাদাম খাওয়ার আগে তাদের কিছুটা পরিবেশন বা চিপসে রূপান্তর করে নিতে পারেন, যাতে তাদের স্বাদ আরও আকর্ষণীয় হয়ে যায়।

 


সাধারণত সকালে খালি পেটে কাজু বাদাম খাওয়া উত্তম। এটি মধ্যভাগে পাচনশক্তি বাড়িয়ে দিতে পারে এবং শরীরের গ্লুকোজ স্তর উচ্চ করে দিতে পারে।
এই নিয়মগুলি মানের সহিত অনুসরণ করে আপনি কাজু বাদাম খাওয়ার উপকারিতা পুরোপুরি পাবেন।


হাড়কে মজবুত করেঃ
কাজু বাদামে থাকে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস এবং ম্যাগনেসিয়াম। যার ফলে এই বাদামটি নিয়মিত খেলে তা হাড়ের উপর প্রভাব ফেলে ফলে হাড়ের শক্তি বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। পরবর্তিতে বৃদ্ধ হওয়ার পরও তা অস্টিওআর্থারাইটিসের মতো হাড়ের রোগ হওয়ার আশঙ্কা অনেক কমিয়ে দেয়। কেননা কাজু বাদামে আছে ভিটামিন-কে, যা হাড়ের জন্য অনেক উপকারি উপাদান।

 

 


ডায়াবেটিস মতো ব্যাধি রোধ করেঃ


ডায়াবেটিসের রোগি যদি নিয়মিত রুটিন করে এক মুঠো করে কাজু বাদাম খাওয়া শুরু করে, তাহলে তা দেহের ভিতরে এমন কিছু পরিবর্তন আনতে শুরু করে যে, এতে করে ইনসুলিনের কর্মক্ষমতা বেড়ে যায়। যার ফলে রক্তে থাকা শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে, এবং তা বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা কমে অনেক কমে যায় বিভিন্ন গবেষণায় এটা দেখা গিয়েছে। তাই পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে যে যাদের পরিবারে এই মরণ রোগের ইতিহাস রয়েছে, তাদের নিয়মিত কাজু বাদাম খাওয়ার অভ্যাস করা উচিৎ।

 

 


কাজু বাদামের ক্ষতিকর দিক


যেমনটি সঠিক খাদ্য সামগ্রী হিসাবে কাজুবাদাম উপকারী, তেমনি এর কিছু ক্ষতিকর দিকও রয়েছে। এক্ষেত্রে নিম্নলিখিত কিছু প্রধান ক্ষতিকারক বিবেচনা করা যেতে পারে:


আলার্জির ঝুঁকি: কাজুবাদাম একটি বাদাম প্রজাতি যা কিছু মানুষের জন্য আলার্জির কারণ হতে পারে। যারা কাজুবাদামের প্রতি অল্পতা আছে বা আলার্জিক প্রতিক্রিয়ার ঝুঁকিতে আছেন, তাদের জন্য এটি ক্ষতিকর হতে পারে।

তাড়াতাড়ি ব্যাধি: কাজুবাদাম গ্রাসিমার সাথে যুক্ত হলে কিছু মানুষে তাড়াতাড়ি ব্যাধি সৃষ্টি হতে পারে। যারা তাড়াতাড়ি ব্যাধির ঝুঁকিতে আছেন, তাদের জন্য এটি ক্ষতিকর হতে পারে।

 



অ্যানিমিয়ার মতো রোগের প্রকোপ কমেঃ


কাজু বাদামে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন, যা শরীরে লোহিত রক্ত কণিকার উৎপাদন এতো পরিমাণ বাড়িয়ে দেয় যে তা দেহের রক্তাল্পতার মতো সমস্যা দূর করে দেয়। সেই সাথে তা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়িয়ে দেয়। তাই অ্যানিমিয়ার মতো রোগের প্রকোপ কমতে এই কাজু বাদাম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।

 


ক্যান্সারের মতো মরণ ব্যাধি দূরে করেঃ


কাজু বাদামের ভেতরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, যা ক্যান্সার সেলের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ব্যবস্থা সৃষ্টি করে, সেই সাথে টিউমারও যাতে দেখা না দেয় বা আক্রমণ না করে সেদিকেও লক্ষ্য রাখে। এখানে এই মারণ ব্যাধিকে সাপ ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্টকে বেজির সাথে তুলনা করা যেতে পারে উদাহরন হিসেবে। কাজু বাদামে প্রম্যান্থো-সায়ানিডিন নামে একটি উপাদান থাকে, যার ফলে এই বিশেষ কাজ হয়।

অতিরিক্ত সার: কাজুবাদামে মধ্যে অতিরিক্ত সার থাকতে পারে, যেমন লেখক অক্সালিক অ্যাসিড এবং ফিটিক অ্যাসিড। এই সারগুলির অতিরিক্ত পরিমাণ আপনার স্বাস্থ্যকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।

(সূত্র: বিভিন্ন ওয়েবসাইট)