কাটা জায়গা তাড়াতাড়ি শুকানোর উপায়

কাটা জায়গা তাড়াতাড়ি শুকানোর উপায় , কাটা জায়গায় অ্যালোভেরা জেল লাগান। কিছুক্ষণ রেখে শুকিয়ে ফেলুন। রসুন ভালো কাজ দেয়। কয়েক টুকরা রসুন থেঁতলে মধুর সঙ্গে মিশিয়ে ক্ষত স্থানে লাগান। ৫/১০ মিনিট পর উষ্ণ গরম পানি দিয়ে ক্ষত স্থান ধুয়ে ফেলুন। দিনে অন্তত দু’বার এই রকম করুন।

 



২/৩ কাপ পানিতে এক টেবিল চামচ সাদা ভিনিগার ভাল ভাবে মিশিয়ে নিন। ওই মিশ্রণে তুলা ভিজিয়ে বার বার লাগান। ক্ষত খুব তাড়াতাড়ি শুকিয়ে যাবে।

 



. ক্ষত স্থানে সামান্য মধু লাগিয়ে ব্যান্ডেজ করে ঘণ্টাখানেকের জন্য রেখে দিন। এক ঘণ্টা পর পরিষ্কার পানি দিয়ে কেটে যাওয়া জায়গাটি ধুয়ে ফেলুন। কয়েকদিন ধরে বেশ কয়েকবার এই পদ্ধতি অবলম্বন করুন।

 


কাটা জায়গা তাড়াতাড়ি শুকানোর উপায়




ক্ষতস্থান দ্রুত শুকাতে যে খাবারগুলো খাবেন তার একটি তালিকা দেওয়া হলো-

 


বেরি : বেরিতে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট পাওয়া যায়। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরের ক্ষত প্রতিরোধে সাহায্য করে। তাই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার সার্জারির পর ডায়েটে সংযোজনের জন্য আদর্শ খাবার। শুধু বেরি নয়, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ অন্যান্য ফলও খেতে পারেন। ব্লুবেরি, স্ট্রবেরি, ব্ল্যাকবেরি, রাসবেরি, আঙুর ও ডালিমে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। গবেষণায় দেখা গেছে, ভিটামিন সি কোলাজেন ও সফট টিস্যু মেরামতে সাহায্য করে।



মধু ।

মধুতে প্রাকৃতিক অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য রয়েছে এবং এটি প্রদাহ কমাতে সাহায্য করতে পারে। কাটা অংশে অল্প পরিমাণ মধু লাগিয়ে ব্যান্ডেজ দিয়ে ঢেকে দিন।


ঘৃতকুমারী ।


ঘৃতকুমারী তার নিরাময় বৈশিষ্ট্য জন্য পরিচিত. কাটা অংশে অল্প পরিমাণ অ্যালোভেরা জেল লাগিয়ে ব্যান্ডেজ দিয়ে ঢেকে দিন।




সবজি : হিলিং ডায়েট তথা নিরাময়ের খাদ্য তালিকায় সবজিকে অবশ্যই রাখতে হবে। সবজির ভিটামিন ও মিনারেল ক্ষতস্থান শুকাতে সহায়তা করে। আপনার হিলিং ডায়েটে সংযোজনের জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ সবজি হলো- গাজর, বেল পিপার বা ক্যাপসিকাম, ফুলকপি, বাঁধাকপি, ব্রোকলি, মিষ্টি আলু ও গোল আলু। এসব খাবার হলো কার্বোহাইড্রেটের স্বাস্থ্যকর উৎস, যা সার্জারি করে হাসপাতাল থেকে ঘরে আসার পর যে ক্লান্তি অনুভূত হয় তা কাটিয়ে ওঠতে সাহায্য করে।


চা গাছের তেল ।


চা গাছের তেলে প্রাকৃতিক অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য রয়েছে এবং এটি প্রদাহ কমাতে সাহায্য করতে পারে।

নারকেল তেলের মতো ক্যারিয়ার অয়েলের সাথে কয়েক ফোঁটা চা গাছের তেল মিশিয়ে কাটা জায়গায় লাগান।



চর্বি : চর্বির কথা শুনলেই ভয় পাওয়ার কিছু নেই। এটা মনে রাখা ভালো যে স্বাস্থ্যকর চর্বি শরীরের বন্ধু। বিশেষ করে সার্জারির পর স্বাস্থ্যকর চর্বি খাওয়ার গুরুত্ব আরও বেশি। স্বাস্থ্যকর চর্বি ফল ও শাকসবজির পুষ্টি শোষণে সহায়তা করে।

 

এসব খাবার খেলে ইমিউন সিস্টেম শক্তিশালী হবে ও সংক্রমণের সম্ভাবনা কমবে। স্বাস্থ্যকর চর্বি শক্তির দীর্ঘমেয়াদি উৎস হিসেবেও কাজ করে। স্বাস্থ্যকর চর্বি রয়েছে এমন খাবারে যথেষ্ট পরিমাণে ভিটামিন ই থাকে। এটাও ক্ষত নিরাময় দ্রুত করে ও সার্জারির দাগ কমায়। অলিভ অয়েল, কোকোনাট অয়েল, বাদাম ও বীজে স্বাস্থ্যকর চর্বি পাবেন।

 


আপেল সাইডার ভিনেগার ।


আপেল সাইডার ভিনেগারে প্রাকৃতিক অ্যান্টিসেপটিক বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এটি জল দিয়ে পাতলা করুন এবং একটি তুলোর বল দিয়ে কাটাতে লাগান।


ইপসম সল্ট ।


ইপসম সল্ট কাটা শুকাতে এবং প্রদাহ কমাতে সাহায্য করতে পারে। গরম পানিতে ইপসম লবণ মিশিয়ে আক্রান্ত স্থানকে ১৫-২০ মিনিট ভিজিয়ে রাখুন।




মুরগির মাংস : এমনিতেই সুস্থ থাকার জন্য পর্যাপ্ত প্রোটিন খাওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। সার্জারির পর ডায়েটে প্রোটিন রাখার গুরুত্ব আরো বেড়ে যায়। এসময় উচ্চ পরিমাণে প্রোটিন ও আয়রন খেতে হবে। সার্জারির সময় মাংসপেশি ড্যামেজ হতে পারে। এখন এসব মাংসপেশি মেরামতের প্রয়োজন রয়েছে। প্রোটিনের অ্যামাইনো অ্যাসিড নতুন টিস্যু সৃষ্টি ও ক্ষত নিরাময় দ্রুত করে মাংসপেশির ড্যামেজ মেরামতে সাহায্য করে। আয়রন নতুন রক্তকণিকা তৈরি করে দ্রুত শক্তি ফিরিয়ে আনে। এ সময় মুরগির মাংস, সামুদ্রিক মাছ, বিনস, মসুর ডাল, ডিম ও বাদাম খেয়ে শরীরে প্রোটিন সরবরাহ করতে পারেন।


কাটা জায়গা তাড়াতাড়ি শুকানোর মলম ।


একটি কাটার উপর দ্রুত শুকানোর মলম ব্যবহার করা ক্ষত পরিষ্কার এবং আর্দ্র রেখে নিরাময় প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করতে সাহায্য করতে পারে।


যাইহোক, সঠিক ধরনের মলম নির্বাচন করা এবং এটি সঠিকভাবে ব্যবহার করা গুরুত্বপূর্ণ।

 


দ্রুত শুকানোর মলমের জন্য কিছু জনপ্রিয় বিকল্পের মধ্যে রয়েছে পেট্রোলিয়াম জেলি, যেমন ভ্যাসলিন এবং সিলিকন-ভিত্তিক জেল যেমন ডার্মাটিক্স বা কেলো-কোট।



ডিম : প্রকৃতি খোলসে আবৃত করে আমাদেরকে একটি আদর্শ নিরাময়কারী খাবার উপহার দিয়েছে। সেটা হলো আমাদের অতি পরিচিত ডিম। ডিমে প্রোটিন, ভিটামিন এ, ভিটামিন ই, ভিটামিন কে, আয়রন, জিংক, ক্যালসিয়াম, ফলিক অ্যাসিড ও রিবোফ্লাভিন রয়েছে।এসব পুষ্টি সার্জারির পর রোগীকে দ্রুত নিরাময় দিতে কাজ করে।

 


সয়া প্রোটিন : সয়া পণ্যে ভিটামিন এ, সি, ডি, ই এবং কে থাকে যা পরিপাকের কাজে সাহায্য করে, ইমিউন সিস্টেমকে সহায়তা দান করে এবং ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। এছাড়াও এতে উচ্চ মাত্রার প্রোটিন থাকে যা নতুন টিস্যুর গঠনে সাহায্য করে।

 



যখন একটি ক্ষত শুকানোর জন্য খোলা রেখে দেওয়া হয়, তখন এটি শুকিয়ে যায় এবং স্ক্যাব হয়ে যেতে পারে, যা আসলে নিরাময় প্রক্রিয়াকে ধীর করে দিতে পারে। একটি স্ক্যাব নতুন ত্বকের কোষগুলির পুনর্জন্মে হস্তক্ষেপ করতে পারে এবং দাগ বা সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।

 


অন্যদিকে, যখন একটি ক্ষত একটি ব্যান্ডেজ দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়, তখন ব্যান্ডেজটি ক্ষতটিকে আর্দ্র রাখতে সাহায্য করে, যা ত্বকের নতুন কোষের বৃদ্ধিকে উৎসাহিত করতে পারে এবং ক্ষতটিকে শুকিয়ে যাওয়া থেকে রক্ষা করতে পারে। ব্যান্ডেজটি আরও আঘাত, ময়লা এবং ব্যাকটেরিয়া থেকে ক্ষতকে রক্ষা করতে সাহায্য করে, যা সংক্রমণের ঝুঁকি কমাতে পারে।



মধু : মধুতে চিনির তুলনায় ভিটামিন এবং অ্যামাইনো অ্যাসিড থাকে প্রচুর পরিমাণে। ক্ষত পরিষ্কার করে মধু লাগালে প্রদাহ, ব্যথা ও ফোলা কমে। এর অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান ক্ষতের সংক্রমণ প্রতিরোধে সাহায্য করে। প্রতিদিন ১ চামচ মধু খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। এ ছাড়াও দুগ্ধজাত পণ্য, মিষ্টিআলু, ঘি, হলুদ, জিংক, প্রোটিন ও ভিটামিন এ সমৃদ্ধ খাবার দ্রুত ক্ষত নিরাময়ে সাহায্য করে।

 


টমেটো : টমেটোতে লাইকোপিন নামক অ্যান্টি অক্সিডেন্ট থাকে যা অন্য অনেক খাবারেই অনুপস্থিত। এই উপাদানটি জারণের বিরুদ্ধে কাজ করে শরীরের কোষকে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া থেকে রক্ষা করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতেও সাহায্য করে। এভাবেই ক্ষতের সংক্রমণের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে টমেটোর লাইকোপিন। ক্ষত নিরাময়ের জন্য সস হিসেবে বা সালাদের সাথে বা স্যান্ডউইচের সঙ্গে টমেটো খান।

 



ক্ষতস্থান শুকানোর জন্য সাধারণত খোলা রাখা ভালো হয় না। খোলা রাখা হলে ক্ষতস্থানে পানি, ধূলো এবং জীবাণু একত্রিত হতে পারে এবং এটি সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।

 


ব্যান্ডেজ করে রাখলে সেটি ক্ষতস্থান শুকাতে সাহায্য করে কিন্তু সেটি দ্রুত সংক্রমণের ঝুঁকির আশঙ্কার নেই না। যদি ক্ষতস্থান পরিষ্কার এবং খোলা থাকে তবে কিছুক্ষণের জন্য খোলা রাখা উচিত হতে পারে, তবে দ্রুতই একটি ব্যান্ডেজ বা প্রস্থ স্টেপ দিয়ে তা বন্ধ করতে হবে।

 


তবে ব্যান্ডেজ করার আগে ক্ষতস্থান পরিষ্কার করে নিশ্চিত হতে হবে এবং সেই ক্ষতস্থানে সংক্রমণ না থাকলে মাত্র ব্যান্ডেজ করা উচিত।



চকলেট : এটা শুনে খুশি হবেন যে, সার্বিক সুস্বাস্থ্য বিশেষ করে ক্ষত নিরাময়ে উপকারী ভূমিকা রাখে চকলেট। কনটেম্পোরারি রিভিউজ ইন কার্ডিওভাস্কুলার মেডিসিন এর রিপোর্ট অনুযায়ী স্বাস্থ্যকর রক্তচাপের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে ডার্ক চকলেট। ক্ষততে অক্সিজেন, পুষ্টি উপাদান এবং ভিটামিন সরবরাহ করার প্রধান কাজটি করে রক্ত। এ ছাড়াও এতে শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান আছে যা ইমিউন সিস্টেমকে ইনফেকশনের হাত থেকে রক্ষা করে।

 


ব্রোকলি : ক্রুসিফেরি পরিবারের সবজিতে উচ্চমাত্রার ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট থাকে যা ইনফ্লামেশন কমাতে ও ইমিউন ফাংশন বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। রক্তনালী থেকে শুরু করে ত্বকের উপরের স্তরের টিস্যুর বৃদ্ধি এবং মেরামতের জন্য অত্যাবশ্যকীয় ভিটামিন সি যা ব্রোকলিতে আছে। এই সুস্বাদু খাবারটি আপনার সকালের নাশতায় ডিমের সঙ্গে বা পাস্তায় অথবা সালাদে যোগ করতে পারেন।

(সূত্র: বিভিন্ন ওয়েবসাইট)