গণিতের জনক কে

গণিতের জনক কে , বীজ গণিতের জনক কে? বীজ গনিতের জনক মুহাম্মাদ ইবনে মুসা আল – খারেজমি। বীজগণিতের অপর নাম “অ্যালজেবরা”।

সোভিয়েত রাশিয়ার আরব সাগরে পতিত আমু দরিয়া নদীর একটি দ্বীপের নিকটে অবস্থিত খোয়ারিজম নামক শহরে আনুমানিক ৭৮০ খ্রীষ্টাব্দে জন্ম গ্রহণ করেন এবং খলিফা আল মামুনের মৃত্যুর ১৪ বছর পর আনুমানিক ৮৫০ খ্রীষ্টাব্দে মৃত্যুবরন করেন।



আল খারেজমি খলিফা আল মামুনের বায়তুল হিকমাহ সংলগ্ন গ্রন্থাগারে গ্রন্থাগারিকের কাজ করতেন। মুহাম্মাদ ইবনে মুসা আল – খারেজমি বীজগণিত, পাটিগণিত, জ্যোতির্বিজ্ঞান এবং ভূগোলে অবদান রাখেন। তবে বীজগণিতের জন্যই মুহাম্মাদ ইবনে মুসা আল – খারেজমি বেশি আলোচিত হন,

 

তার জন্যই তাকে বীজগণিতের জনক বলা হয়।ইসলামী সভ্যতায় সর্বশ্রেষ্ঠ অবদান হল বীজগণিত, মুহাম্মাদ ইবনে মুসা আল – খারেজমি বীজগণিতকে প্রথম গণিতশাস্ত্রের মধ্যে বিশেষ মর্যাদাসম্পন্ন হিসেবে গড়ে তোলে এবং সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।



গণিতের জনক কে



গণিত শব্দটি গ্রীক শব্দ “Mathmata” থেকে এসেছে, যার অর্থ “শিক্ষনীয় বিষয়সমূহ”। গণিত একটি বিশেষ জ্ঞানের ক্ষেত্র, যার ভিত্তিমূল হচ্ছে সংখ্যা। অক্সফোর্ড অভিধানে পরিভাষায়, “গণিত হলো সংখ্যা, স্থান এবং পরিমান সম্পর্কিত বিজ্ঞান।”



গণিতের প্রধান শাখাগুলো হলোঃ

(ক) পাটিগণিত

(খ) বীজগণিত

(গ) জ্যামিতি।

 



(ক) পাটিগণিতঃ
পাটিগণিত হলো সংখ্যার বিজ্ঞান। এইখানে বিভিন্ন সংখ্যাকে যোগ-বিয়োগ, গুণ-ভাগের মাধ্যমে আলোচনা করা হয়, যার মাধ্যমে কোন সমস্যার সমাধান করা যায়। এছাড়াও সংখ্যার বর্গ, বর্গমূল, ভগ্নাংশ প্রভৃতি কার্যবিধি নিয়ে বর্ণনার মাধ্যমে গড়ে উঠেছে পাটিগণিত।




(খ) বীজগণিতঃ
পাটিগণিতে এবং জ্যামিতিতে যে সমস্যার সমাধান দুঃসাধ্য, বীজগণিতে সেগুলো প্রতীক ও সূত্রের ব্যবহারে তা হয়ে ওঠে সহজতর। এইজন্য বীজগণিতের সৃষ্টি হয়েছে। প্রায় ১২০০ বছর আগে মুহম্মদ ইবনে মুসা রচিত একটি বইয়ের বীজগণিতের বই পাওয়া যায়।

 



(গ) জ্যামিতিঃ

জ্যামিতি শব্দের অর্থ হলো ভূমির পরিমাপ। জ্যামিতি হলো বিভিন্ন আকার, আকৃতি ও তাদের সম্পর্কের বিজ্ঞান। এইখানে জমি সংক্রান্ত সমস্যা গুলো বিভিন্ন উপপাদ্যের মাধ্যমে সমাধান করা হয়। কিন্তু আধুনিক যুগে কেবল ভূমি পরিমাপের জন্যই ব্যবহৃত হয় না বরং বহু জটিল গাণিতক সমস্যা সমাধানের ও ব্যাখ্যাদানে জ্যামিতিক জ্ঞান অপরিহার্য। এখানে দ্বিমাত্রিক, ত্রিমাত্রিক ভূমি, বিন্দু, রেখা, তল এবং তাদের বিশেষ ধর্মাবলী নিয়ে আলোচনা করা হয়।



জ্যামিতি আবার দুই প্রকারঃ

(ক) ইউক্লিডীয় জ্যামিতি

(খ) বিশ্লেষণ জ্যামিতি

 



(ক) ইউক্লিডীয় জ্যামিতিঃ
আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব ৩০০ অব্দে গ্রিক পন্ডিত ইউক্লিড জ্যামিতির ইতস্তত বিক্ষিপ্ত সূত্রগুলোকে সর্বপ্রথম বিধিবদ্ধ ভাবে সুবিন্যস্ত করে একটি বিখ্যাত গ্রন্থ রচনা করেন। ১৩ খন্ডে প্রণীত এ গ্রন্থই “Euclid’s Elements” নামে সুপরিচিত এবং আধুনিক জ্যামিতির ভিত্তি। এই কারণে তাকে ইউক্লিডীয় জ্যামিতির জনক বলা হয়। ইউক্লিডীয় জ্যামিতিতে কোন তথ্য জ্যামিতিক চিত্রের সাহায্যে উপস্থাপন করে তার সাহায্যে প্রমাণ দেখানো হয়।

 


(খ) বিশ্লেষণ জ্যামিতিঃ
বিশ্লেষণ জ্যামিতি ইউক্লিডীয় জ্যামিতি হতে পদ্ধতিগতভাবে সম্পূর্ণ ভিন্ন। বিশ্লেষণ পদ্ধতিতে জ্যামিতিক সম্পাদ্যকে বীজগাণিতিক রাশি বা সমীকরণ আকারে প্রকাশ করে তার জ্যামিতিক আকারে দেখা হয়। ফরাসি গণিতবিদও Rone Descartes কে বিশ্লেষণ জ্যামিতির জনক বলা হয়।



উচ্চতর গণিতের জনক কে?
“জাবির ইবনে হাইয়ান” কে উচ্চতর গনিতের জনক বলা হয়।



জাবির ইবনে হাইয়ান জন্মগ্রহন করেন: ৭২১ খ্রিষ্টাব্দে এবং মৃত্যুবরন করেন: ৮১৫ খ্রিষ্টাব্দে। পাশ্চাত্য বিশ্বে জাবির ইবনে হাইয়ান “জেবার” নামে পরিচিত ছিলেন। জাবির ইবনে হাইয়ান একাধারে জ্যোতির্বিজ্ঞানী ও জ্যোতিষী, রসায়নবিদ ও আলকেমিবিদ, পদার্থবিজ্ঞানী, প্রকৌশলী, দার্শনিক, ঔষধ বিশারদ এবং চিকিৎসক ছিলেন। জাবির ইবনে হাইয়ানের প্রকৃত জাতীয়তা সঠিকভাবে জানা যায়নি, অনেকে বলেন তিনি পারস্য, আবার অনেকে বলেন তিনি আরবের নাগরিক ছিলেন।



জাবির ইবনে হাইয়ান রসায়নের জনক হিসেবে ও আখ্যায়িত করা হয়, তিনি আলকেমিতে পরীক্ষণমূলক পদ্ধতির গোড়াপত্তন করেছিলেন। জাবির ইবনে হাইয়ান রসায়নের অসংখ্য গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার করেছিলেন সেগুলোর অনেকগুলো এখনও ব্যবহৃত হয়,

 

যেমন: নাইট্রিক ও হাইড্রোক্লোরিক এসিড সংশ্লেষণ, কেলাসীকরণ এবং পাতন। তার অধিকাংশ আবিষ্কার দুর্বোধ্য এবং সংকেতায়িত, যা বিশেষজ্ঞ ছাড়া কেউ খুব একটা বোঝেন না বিশেষজ্ঞদের মধ্যেও অনেকে বুঝেন না ঠিক কি সংকেতের মাধ্যমে লিখেছিলেন।



আর্কিমিডিস (গণিতের জনক)
আর্কিমিডিস তার অনেক গুরুত্বপূর্ণ কৃতিত্বের জন্য বিখ্যাত যেমন আর্কিমিডিস নীতি, আর্কিমিডিস পিচ, ফ্লুইড স্ট্যাটিক্স, লিভার, মাইক্রোস্কেল ইত্যাদি যা আজ পর্যন্ত ব্যবহৃত হয়। গণিতে তার অমর অবদানের কারণে তাকে “গণিতের জনক” বলা হয়।



গণিতের জনক আর্কিমিডিস
জন্ম 287 খ্রিস্টপূর্বাব্দের কাছাকাছি সিরাকিউস, সিসিলি ম্যাগনা গ্রেসিয়া
মৃত্যু 212 খ্রিস্টপূর্বাব্দের কাছাকাছি সিরাকিউস
জাতিসত্তা গ্রীক
বাসস্থান সিরাকিউস, সিসিলি
এলাকা
গণিত
পদার্থবিদ্যা


প্রকৌশল
উদ্ভাবন
জ্যোতির্বিদ্যা
আক্রান্ত
apollonius
আলেকজান্দ্রিয়ার নায়ক
আলেকজান্দ্রিয়ার পাপ্পাস
ইউটোসিয়াস
খ্যাতি
আর্কিমিডিসের নীতি
আর্কিমিডিস স্ক্রু

 


হাইড্রোস্ট্যাটিক্স, লিভার
মাইক্রোস্কোপিক পরিমাণ
আর্কিমিডিসের প্রাথমিক জীবন


আর্কিমিডিস খ্রিস্টপূর্ব 287 সালের দিকে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি সিসিলি ম্যাগনা গ্রেসিয়ার সিরাকিউসে একজন জ্যোতির্বিজ্ঞানীর পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। শৈশব থেকেই তিনি গণিত, বিজ্ঞান, কবিতা, রাজনীতি এবং সামরিক কৌশলের প্রতি খুব অনুরাগী ছিলেন।

 


এই আগ্রহের কারণে, তিনি মিশরের গণিতের স্কুলে পড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন এবং এই মহান গণিত এবং বিজ্ঞানের সন্ধানে তাঁর পুরো জীবন ব্যয় করেছিলেন।



পাটি গণিতের জনক কে?
আর্যভট্ট কে পাটি গণিতের জনক বলা হয়।
শূন্যের জনক কে?
আর্যভট্টকে শূন্যের (০) জনক বলা হয়।

 


অশ্মকা নামের একটি জায়গায় ৪৭৬ খ্রিস্টপূর্বে আর্যভট্টের জন্ম হয়েছিল। হিন্দু ঐতিহ্যে ও প্রাচীন বৌদ্ধরা, এই স্থানটিকে উত্তর মহারাষ্ট্র এবং দক্ষিণ গুজরাটের আশেপাশে গোদাবরী ও নর্মদা নদীর মধ্যবর্তী স্থান হিসেবে চিহ্নিত করেন। আর্যভট্ট ৫৫০ খ্রিস্টপূর্বে মৃত্যুবরন করেন। আর্যভট্টের প্রকৃত জন্মস্থান সম্পর্কে না জানা গেলেও, উচ্চশিক্ষার জন্য কুসুমপুরায় বসবাস করতেন। নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ে আর্যভট্ট উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করেন, শিক্ষাশেষে আর্যভট্ট সেই বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন এবং প্রধান হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ে দায়িত্ব পালন করেন।

 



প্রাচীন ভারতীয় গণিতের ইতিহাসে ক্লাসিকাল যুগ (স্বর্ণযুগ) আর্যভট্টের হাত ধরেই শুরু হয়। আর্যভট্টের জ্যোতির্বিদ্যা ও গণিত সংক্রান্ত বিভিন্ন কাজ দুটি গ্রন্থে সংকলিত হয়েছে বলে জানা গেছে। এর মাঝে একটি “আর্যভট্টীয়” এটি রচিত ৪ খণ্ডে, মোট ১১৮টি স্তোত্রে। এবং অন্য আর একটি কাজ সম্পর্কে জানা যায় সেটি হল “আর্য-সিদ্ধান্ত” আর্য-সিদ্ধান্তের কোন পাণ্ডুলিপি খুঁজে পাওয়া সম্ভব হয়নি, তবে ব্রহ্মগুপ্ত, বরাহমিহির ও প্রথম ভাস্করের কাজে এটির উল্লেখ পাওয়া যায়। তিনি পদবাচ্যের আকারে গ্রন্থ রচনা করেছেন। তাকে শূন্যের (০) আবিষ্কারকের মর্যাদা দেয়া হয় এবং তার নামে, ভারতের প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহের নাম ‘আর্যভট্ট’ রাখা হয়।