পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াহীন ঘুমের ঔষধের নাম কি ? আসলে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াহীন কোন ওষুধ হয় না। এখন তা ঘুমের হোক বা অন্য কিছু । হুটহাট ঘুমের ঔষধ খেয়ে ফেলার অভ্যাস রয়েছে অনেকেরই।
গভীর ঘুমের ঔষধের নাম কি ?
হুট হাট ঘুমের ঔষধ খেয়ে ফেলার অভ্যাস রয়েছে অনে কেরই । ভাবেন সারা রাত এ পাশ ও পাশ করে কাটিয়ে দেয়ার চাইতে ঘুমের ঔষধ খেয়ে ঘুম দিলেই সব ঠিক হয়ে যাবে । এমনকি ঘুমের ঔ ষধের নাম জানা রয়েছে বলে অনেকেই ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করার প্রয়োজন বোধ করেন না একেবারেই। নিজেই নিজের ডাক্তার হয়ে ফার্মেসীতে গিয়ে ঔষধ কিনে নিয়ে আসেন।
এবং আমাদের দেশের ফার্মেসীগুলোতেও যথারীতি প্রেসক্রিপশন ছাড়াই ঔষধ বিক্রয় করার কারণে ঘুমের ঔষধ কিশোর বয়স থেকে বয়স্ক মানুষ সকলেই খেয়ে থাকেন। কিন্তু আপনি জানেন কি এর খারাপ দিকগুলো কতোটা মারাত্মক? অনেকেই এই সম্পর্কে জ্ঞান রাখেন না। রাতে একটু ঘুমের আশায় আপনি যে বিষ খেয়ে চলেছেন তার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে জেনে নিন আমাদের আজকের ফিচারে।
গভীর ঘুমের ঔষধ এর নাম কি? ক্ষতি ও কার্যকারিতা
১) নেশাগ্রস্ত হওয়া
আপনি যখন থেকে ঘু মের ঔষধ খাওয়া শুরু কর বেন তখন থেকে আপ নার দেহ নিজের মধ্যেই এক ধরণের সহ্য ক্ষমতা তৈরি করে নেবে। অর্থাৎ আপনি যে পাওয়া রের ঔষধ খাওয়া শুরু করেছেন কিছু দিনের মধ্যেই আপনার সে পাওয়া রের ঔষধে কোনো কাজই হবে না। বরং আপার দেহ আরও পাও য়ারের ঔষধের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করে নেবে। এরপর দেহের স্বাভাবিক হর মোনের সমস্যা দেখা দেবে এবং সেই সাথে আরও নানা সমস্যায় জর্জরিত হবেন আপনি। এক পর্যায়ে ঔষধ ছাড়া ঘুমানোর কথা ভাবতে পারবেন না আপনি। তাই শখ করে ২/১ টি পিল খাওয়া বন্ধ করে দিন। এবং ঘুমাতে সমস্যা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে চলুন।
২) ঘোরের মধ্যে থাকা
ইউএস ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের রিপোর্টে জানা যায় ঘুমের ঔষধের রেশ শুধুমাত্র রাতেই কেটে যায় না। বরং পুরো দিন তন্দ্রাচ্ছন্ন করে রাখে এবং সেই সাথে যারা নিয়মিত ঘুমের ঔষধ খান তারা একধরণের ঘোরের মধ্যে চলে যায়। এটি এক পর্যায়ে মারাত্মক বিপর্যয়ের সৃষ্টি করে। সুতরাং সাবধান।
৩) মানসিক সমস্যা ও শারীরিক সমস্যা
দীর্ঘসময় ঘুমের ঔষধ সেবনের ফলে ঘুমের মধ্যে হাটার সমস্যা এবং স্মৃতিভ্রষ্টের সমস্যা দেখা দেয়। এছাড়াও যারা নিয়মিত ঘুমের ঔষধ খান তাদের ব্যবহারে পরিবর্তন আসতে শুরু করে। অনেকেই আংজাইটিতে ভোগেন এবং খুবই খিটমিটে মেজাজ প্রকাশ করতে থাকেন।
৪) ক্যান্সার ও মৃত্যুর আশংকা
গবেষণায় দেখা যায় যারা ঘুমের ঔষধ সেবন করেন তাদের অন্যান্যদের তুলনায় ক্যান্সারে আক্রান্তের ঝুঁকি অনেক বেশী থাকে। ঘুমের ঔষধ অনেকাংশেই দেহে ক্যান্সার কোষ উৎপাদনে সহায়তা করে। এই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কারণে ঘুমের ঔষধ থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দিয়ে থাকেন ডাক্তারগণ।
যদি অন্য কোনো অ সুস্থতার কারণে চিকিৎস ক ঘুমের ঔষধ সেবনের কথা তার প্রেস ক্রিপ শনে লিখে থাকেন তবেই ঘুমের ঔষধ খাওয়া উচিত ।
ঘুমের ঔষধের নাম কি
ঘুমের ওষুধ গুলো যেভাবে ঘুম পাড়ায়, তা খুবই ভয়ঙ্কর ।
বিশ্বে সব চেয়ে লম্বা সময় ধরে ঘুমিয়ে রেকর্ড গাড়ে ছিলেন কে জানেন ? তিনি পিটার পাওয়ার নামের একজন ব্রিটিশ হিপ নোটিস্ট । যিনি এক বা দুইদিন নয় টানা ঘুমিয়ে ছিলেন আট দিন । তবে অনেনেই নিদ্রা হীনতার সমস্যায় ভুগে থাকেন । রাত হলেই এপাশ ওপাশ করে সময় কাটে তাদের । এজন্য অনেকেই ঘুমের ওষুধে ভরসা রাখেন । প্রতি রাতে ঘুমের ওষুধ খেয়ে চোখের পাতা বুজেন সাত থেকে আট ঘণ্টার জন্য। রাতে ঘুমের সমস্যার কারণে ঘুমের ওষুধ খাওয়া খুবই কমন বিষয়। কিন্তু জানেন কি?ঘুমের ওষুধ আমাদের দেহে কীভাবে কাজ করে? স্লিপিং পিল কি, আমাদের দেহে প্রবেশ করে মস্তিষ্ককে হিপনোটাইজ করে দেয়? নাকি রহস্যটা লুকিয়ে আছে অন্য কোথাও?
দৈনিন্দিন ঘটনায় আমরা যখন খুব উদ্বিগ্ন বা সতর্ক থাকি অথবা যখন আমরা কোনো কারণে ব্যাপক খুশি বা এক্সাইটেড থাকি তখন আমাদের মস্তিষ্কের স্নায়ু খুবই সক্রিয় অবস্থায় থাকে। এ স্নায়ুগুলো শিথিল না হওয়া পর্যন্ত আমরা তন্দ্রাচ্ছন্ন হতে পারি না। ঘুমের ওষুধগুলো প্রধানত এই স্নায়ুগুলোকেই টার্গেট করে। পেটে যাওয়ার পর রক্তের সঙ্গে মিশে ওষুধগুলো মস্তিষ্কে পৌঁছায়। এরপর ধীরে ধীরে স্নায়ুগুলোকে কিছুক্ষণের জন্য দুর্বল করে দেয়। সেইসঙ্গে ধীরে ধীরে ঘুমের ঘোরে আচ্ছন্ন হয়ে পড়ি আমরা।
কিছু কিছু ঘুমের ওষুধে মেলাটোনিন নামক এক প্রকার হরমোন থাকে। আমাদের নিয়মিত ঘুম ও জেগে ওঠার চক্র নিয়ন্ত্রণ করে এই হরমোন। রাতের বেলায় অন্ধকার পরিবেশে এই হরমোনের কারণেই আমরা ঘুমিয়ে পড়ি। যাদের ঘুম চক্রে বিশৃঙ্খলা থাকে, তাদেরকে মেলাটনিনযুক্ত ওষুধ দেন চিকিৎসকরা। ঘুমের ওষুধের ক্ষেত্রে কিছু নিরব প্রতিক্রিয়ার কথা না বললেই নয়! যে ওষুধগুলো কিছু সময়ের জন্য স্নায়ুগুচ্ছকে শিথিল করে দেয়, নিয়মিত সে ওষুধ খেলে মস্তিষ্ক দুর্বল স্নায়ুগুলোকেই স্বাভাবিক মনে করে বসে। ফেলে সেই স্নায়ুগুচ্ছের কার্যকারিতা দীর্ঘদিনের জন্য দুর্বলই থেকে যায়। ফলে মারাত্মকভাবে প্রভাবিত হতে পারে আপনার স্মৃতিশক্তি। কিছু কিছু ঘুমের ওষুধে ডাইফেন-হাইড্রামিন নামক একটি উপাদান থাকে।
এই উপাদানটি সরাসরি মস্তিষ্কের একটি নিউরো-ট্রান্সমিটার কার্যক্রমে বাধা দেয়! ফলে পেশির সক্রিয়তা কমে গিয়ে দুর্বল হতে থাকে শরীর। একই উপাদানের কারণে নতুন কিছু শেখার আগ্রহ নষ্ট হয়। সেই সঙ্গে বিনামূল্যে পাওয়া যায় ডিমনেশিয়া বা ভুলে যাওয়া রোগ। একটি কথা সবসময় মনে রাখা উচিত- প্রকৃতিকে সবসময় নিজ ছন্দে এগিয়ে যেতে দিন। নয়ত প্রলয় সৃষ্টি করে হলেও, তার ছন্দ সে মেরামত করে নেবেই।