ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা জীবনের প্রতিটি কর্মই যদি সুশৃংখলভাবে হয় তাহলেই জীবনটা হয় সুন্দর তেমনি ভাবে সাপ্তাহিক ঈদের দিন অর্থাৎ জুমার নামাজের নিয়ম মেনে যদি আমরা জুম্মার নামাজ পড়তে যাই সেটা হবে আরো সুন্দর এটাই ইসলামিক জীবন ব্যাবস্থা পূর্ণাঙ্গ রূপ
হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদেরকে এই জুম্মার দিন সম্পর্কে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন তিনি যা বলেছেন সবাইকে আমরা যা করেছেন সেটাই তো হাদিস তার মূল্যবান কথা অর্থাৎ এই জুম্মার দিন সম্পর্কে মূল্যবান হাদীস রয়েছে যা আমরা জানবো জুম্মার দিনের যে নিয়মকানুন যে ফজিলত ও গুরুত্ব এটি কিভাবে পড়তে হয় জুম্মার নামাজের রাকাত সংখ্যা যোহরের পরিবর্তে কিভাবে জুম্মার নামাজ আসলো সে সম্পর্কে আমরা বিস্তারিত জানব,
পবিত্র জুম্মার দিনে ইমাম সাহেব তার মুসল্লীদেরকে মানুষের জীবন ব্যবস্থাপনা কে নিয়ে বিভিন্ন প্রকার গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রেরণ করেন যা কোরআন এবং হাদিস সম্মতিক্রমে আর এক সপ্তাহের স্বভাব নিয়ে মুসল্লীরা তাদের জীবন পরিচালনা করবে আর এটা করতে পারলেই তখন মানুষের জীবনটা অনেকটা সুন্দর হবে
পবিত্র কোরআন শরীফে উল্লেখ আছে মহান আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন বলেনঃ হে বিশ্বাসীগণ তোমাদের যখন জুম্মার নামাজের জন্য আহ্বান করা হয়, তখন আল্লাহকে স্মরণ করো এবং ক্রয় বিক্রয় থেকে বিরত থাকো, যদি তোমরা বুঝে থাকো তবে এতেই তোমাদের অনেক বড় কল্যানকর,
যখন নামাজ পড়তে হয় তখন পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ে এবং আল্লাহর করুনাই রিজিকের সন্ধান করো আর মহান আল্লাহ পাক রাব্বুল আলামীনকে বেশি বেশি স্মরণ করো এতেই তোমাদের মুক্তি রয়েছে
জুমার নামাজের নিয়ম
পবিত্র জুম্মার দিন জোহরের নামাজের পরিবর্তে দুই রাকাত পবিত্র জুমার নামাজ আদায় করা , প্রত্যেক মুসলমানের উপর ফরজ ইহার ওয়াক্ত হল
• যোহরের অক্তের সময়
• জুম্মার দিন দুপুরে
• গোসল করিয়া পরিষ্কার পোশাক পরিধান করিতে
• আযানের সাথে সাথে মসজিদে উপস্থিত হইতে হবে
• জুম্মার নামাজ আদায় করতে হয়
জুমার নামাজের রাকাতের সংখ্যা
• চার রাকাত কাবলাল জুমার নামাজ
• দুই খুতবা পাঠ শোনতে হবে
• দুই রাকাত ফরজ নামাজ
• চার রাকাত বাদাল জুমা আদায় করতে হবে।
• জুম্মার দিন সময় থাকলে তাহিয়্যাতুল অজু নামায পড়তে হবে
(নবীর সুন্নত ও নফল নামাজ আদায় করা উত্তম এই সুন্নত ও নফল নামাজগুলো পবিত্র জুমার নামাজের সাথে একটুও সম্পৃক্ত নয় )
কুরবানী করার সমান সওয়াব অর্জিত হয়
যে ব্যক্তি জুমার দিন সবার আগে মসজিদে যাই সে পশু কুরবানীর সমতুল্য সব পায়, এই সম্পর্কে হযরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু হতে বর্ণিত তিনি বলেন হযরত মুহাম্মদ সাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করিয়াছেন
যে ব্যক্তি জুমার দিন ফরজ গোসলের মত গোসল করে প্রথমদিকে মসজিদে উপস্থিত হয়, সে যেন একটি উট কুরবানির সওয়াব পেল দ্বিতীয় সময়ে যে লোক মসজিদে প্রবেশ করে সে যেন একটি গরু কুরবানীর সওয়াব পেল তৃতীয় ব্যক্তি মসজিদে প্রবেশ করার পর সে জন্য একটি ছাগল কোরবানির সওয়াব পেল
চতুর্থ সময় যে ব্যক্তি মসজিদে গেল সে জন্য একটি মুরগী কুরবানীর সওয়াব পেল পঞ্চম সময় যখন কোন ব্যক্তি মসজিদে প্রবেশ করল সে জন্য একটি ডিম কুরবানীর মতন সওয়াব পেল ইমাম যখন বেরিয়ে এসে বসে গেলেন খুতবার জন্য তখন ফেরেশতারা লেখা বন্ধ করে শুনতে বসে যায় (বুখারী ৮৮১)
জুমার দিনের নফল নামাজ
হযরত আবু হোরায়রা রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু হতে বর্ণিত তিনি বলেন হযরত মুহাম্মদ সাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করিয়াছেন যে ব্যক্তি গোসল করে জুমার নামাজ পড়ে এরপর সাধ্যমত নামাজ পড়ে খুতবা শুনতে চুপ থাকে তার দুই জুম’আর মধ্যবর্তী সাত দিন সহ, দশ দিনের গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয় মুসলিম
এই হাদীসগুলো থেকে আমরা বুঝতে পারি জুমার দিন সব থেকে তাড়াতাড়ি মসজিদে যাওয়া সর্বোত্তম ইবাদত এবং আরো বুঝতে পারি জুম্মার নামাজের মধ্যবর্তীকালীন যে খুতবা প্রদান করে ওই ইমাম সাহেব, ওই খুতবার গুলো যেন মুসল্লীরা খুব সুন্দরভাবে শোনে এবং সে সময় যেন কেউ নামাজ আদায় না করে
জুমার আগে ও পরে সুন্নত নামাজ
জুমার নামাজের নিয়ম
হযরত ইবনে মাসউদ রাযিআল্লাহু তা’আলা আনহু হতে বর্ণিত তিনি বলেন হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জুমার নামাজের আগে চার রাকাত এবং জুমার নামাজের পর চার রাকাত নামাজ আদায় করতেন (তিরমিজি ৫২৩)
যাদের উপর জুম্মার নামাজ ফরজ নয়
জুম্মার নামাজ পড়তে পারবে না বা জুম্মার নামাজ কাদের উপর ফরজ নয় মূলত নাবালকদের উপর জুমআর নামায পড়া ফরজ নয় এবং যারা পাগল যাদের হুস নাই, তাদের উপরে এই নামায পড়া ফরজ নয় বিশেষ করে আমাদের সমাজে যাদের সঠিক জ্ঞান নাই
মহান আল্লাহ পাক রাব্বুল আলামীন তাঁর বান্দাদের জন্য বছরে দুইবার ঈদে মিলিত হবার সুযোগ করে দিয়েছেন কিন্তু মুসলমানের জন্য আরেকটি বড় সুযোগ হলো সাপ্তাহিক একদিন সেটা হল জুমার দিন এই দিন সম্পর্কে মহান আল্লাহ পাক রাব্বুল আলামিন তার পবিত্র কোরআনে এবং হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর হাদীস বিভিন্ন ফজিলত সম্পর্কে আমরা জানতে পারি
যেমন এই দিনের ফজিলত হলো মহান আল্লাহ পাক রাব্বুল আলামিন এই পৃথিবীর সৃষ্টির পূর্ণতা দান করেছিলেন
হযরত আদম আলাই সালাম এবং হযরত সাল্লাম এর একত্রে জান্নাতে বসবাস করার সুযোগ তৈরি করেছিলেন এবং এই দিনে মুসলিম উম্মাহ সাপ্তাহিক ঈদ উপলক্ষে মসজিদে একত্র হয় বলে, জুম্মার দিন বলা হয়
প্রতিটি কাজে রয়েছে সৌন্দর্য আর এই সৌন্দর্য মেনে চললে সে কাজ হয় প্রতিটি মানুষের কাছেই আদর্শ আরে আদর্শকে ধারণ করে প্রজন্মের পর প্রজন্ম চলতেই থাকে আর সেই অনুপাত ক্রমে চৌদ্দশ বছর আগের থেকে হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদেরকে যে ব্যবস্থা যে নিয়ম যে রীতিনীতি দিয়ে গিয়েছেন সেই রীতিনীতি সে সুন্দর জীবন ব্যবস্থাপনাকে আঁকড়ে ধরতে আমরা এগিয়ে চলেছি
এভাবেই হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাদিস এবং মহান আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীনের কুরআনের বাণী যা ইমাম সাহেব মুসল্লিদের কে সুন্দর ভাবে বুঝাতে থাকেন এবং বলতে থাকেন যা তারা পরবর্তী জুম্মা পর্যন্ত সে তার জীবনকে শৃংখলার ভিতর দিয়ে না নিয়ে গিয়ে সুন্দর ব্যবস্থাপনার মধ্যে জীবনকে প্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্যে এগিয়ে যায়