হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করিয়াছেন নামাজ বেহেশতের চাবি বিশেষ করে জুম্মার নামাজের ফজিলত গুরুত্ব আরো বেশি তিনি বর্ণনা করিয়াছেন পবিত্র জুম্মার নামাজের গুরুত্ব সম্পর্কে তার মুখনিঃসৃত বাণী আমাদেরকে, সাহাবায়ে কেরামের মাধ্যমে পৌঁছায়ে দিয়েছেন
জুম্মার নামাজের ফজিলত
মহান আল্লাহ পাক রাব্বুল আলামিন তার পবিত্র কোরআনুল কারিমে বলেছেন আমি মানুষ এবং জিনকে সৃষ্টি করেছি একমাত্র আমার ইবাদতের উদ্দেশ্যে আর তার মধ্যে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত হল জুম্মার নামাজ কারণ এর গুরুত্ব এবং ফজিলত সম্পর্কে মহান আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন কুরআনে এবং হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
জুম্মার নামাজের নিয়ত কুরআন হাদিছের আলোকে
তাঁর বিভিন্ন হাদিস আমাদেরকে বুঝিয়েছেন এজন্য পবিত্র জুম্মার নামাজের গুরুত্ব ও ফজিলত এর অনুপাত আমাদের আযানের সাথে সাথে মসজিদের দিকে যাওয়া
ইমাম তার মুসল্লিদের বয়ান পেশ করবেন সেটি মনোযোগ দিয়ে শোনা এবং সে অনুযায়ী আমল করা
ইসলামের ইতিহাসে প্রথম জুমার নামাজ
ইসলামের ইতিহাসে প্রথম পবিত্র জুমার নামাজ আদায় করেন হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর ইতিহাসে
জুম্মার নামাজ ফরজ হয় প্রথম হিজরীতে, হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম হিযরত কালে কুবাতে অবস্থান শেষে শুক্রবার দিনের মদিনায় পৌঁছান , এবং বনি সালেম গোত্রের উপত্যাকায় পৌঁছে যোহরের ওয়াক্তে হলে সেখানেই তিনি জুমার নামাজ আদায় করেন এটা ইতিহাসের প্রথম জুমার নামাজ
জুম্মার নামাজ কে ফরজ করা হয়েছে জোহরের নামাজের পরিবর্তে, জুমার দুই রাকাত ফরজ নামাজে ইমামের খুতবা কে জোহরের চার রাকাত ফরজ নামাজের স্থলা ভিষিক্ত করা হয়েছে সপ্তাহের জুম্মার খতিবদের যাবতীয় প্রয়োজনীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে কোরআন আর হাদিসের আলোকে নির্দেশনা ও সমাধান মূলক উপদেশ দেবেন তার খুতবাই, এটাই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে
জুমার নামাজের ফজিলত ও আদায়কারীদের পুরস্কার
মসজিদে যারা প্রবেশ করে তাদের নাম ফেরেশতারা লিপিবদ্ধ করে
জুমার দিন যারা আগে মসজিদে আসে তাদের নামের তালিকা সম্পর্কে হযরত মুহাম্মদ সাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করিয়াছেন
জুমার দিন মসজিদের দরজায় ফেরেশতারা এসে উপস্থিত হয় সেখানে দাঁড়িয়ে তারা সবসময়ই যারা আগে আসে তাদের নাম লিখতে থাকে, প্রথমে যারা মসজিদে আসেন তাদের জন্য উট দ্বিতীয় সময়ে যারা আসেন তাদের জন্য গরু এবং তৃতীয় সময়ে যারা আসেন তাদের জন্য ছাগল
চতুর্থ সময় যারা আসেন তাদের জন্য মুরগী এবং সর্বশেষ যারা আসেন তাদের জন্য রয়েছে ডিম কুরবানী বা দান করার সওয়াব এগুলো লিখতে থাকেন আর যখন ইমাম খুতবা দেওয়ার জন্য মিম্বরের উপরে উঠে পড়েন ঠিক তখন ফেরেশতারা তাদের খাতা বন্ধ করে মনোযোগ দীয়ে খুতবা শুনতে থাকেন (বুখারী ৯২৯)দশ দিনের গুনাহ মাফ হয়
জুম্মার নামাজ
জুমার দিনে যারা ভদ্রতা বজায় রাখে আদব রক্ষা করে তাদের জন্য দশ দিনের গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয় এ সম্পর্কে হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করিয়াছেন
যে ব্যক্তি ভালোভাবে পবিত্র হল এবং মসজিদে এল অতঃপর মনোযোগ দিয়ে খুৎবা শুনতে চুপচাপ বসে রইল তার জন্য জুম’আর মধ্যবর্তী 7 দিন এর সাথে আরও তিনদিন যোগ করে মোট দশ দিনের গুনাহ মাফ করে দেওয়া হল পক্ষান্তরে খুতবার সময় যে ব্যক্তি পাথর বা অন্য কিছু নাড়াচাড়া করল সে ব্যাক্তি অনার্থ কাজ করেই থাকলো (মুসলিম ৮৫৭)
জুম্মার নামাজের এতোয় ফজিলত যে প্রতিটি পদক্ষেপে রয়েছে এক বছরের নফল রোজা ও এক বছরের সারারাত জেগে তাহাজ্জুতের নামাজ পড়ার সম পরিমাণ সওয়াব অর্জিত হয়
জুমার দিনের নফল নামাজ
হযরত কাতাদা রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু হতে বর্ণিত হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু জুমার আগে চার রাকাত এবং পবিত্র জুমার নামাজের পর চার রাকাত নামাজ আদায় করতেন
হযরত আবু ইসহাক রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু বলেন হযরত আলী রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু জুম্মার নামাজের পর রাকাত নামাজ আদায় করতেন আব্দুর রাজ্জাক এটি গ্রহণ করেছেন
হযরত আলী রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন জুমার নামাজের পর রাকাত নামাজ আদায় করতেন (সারাহু মায়ানিল আছার ৯৫)
হযরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু হতে বর্ণিত তিনি বলেন হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন যে ব্যক্তি জুমার নামাজ আদায় করবে সে যেন এরপর চার রাকাত নামাজ আদায় করে (মুসলিম শরীফের হাদীস ২০৭৫)
জুমার দিন দোয়া কবুল হয়
হযরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু বলেন, আমাদের সঙ্গে একদিন শুক্রবার এর ফজিলত ও বৈশিষ্ট্য নিয়ে আলোচনা করেছিলেন তখন তিনি বলেছিলেন, জুম্মার দিনে এমন একটি সময় আছে যে সময়টা যদি কোন মুমিন নামাজ আদায় রত অবস্থায় থাকে এবং মহান আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীনের কাছে কিছু চাই,
মহান আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন অবশ্যই তার জন্য সেই চাহিদা বা দোয়া কবুল করবেন এবং এরপর হযরত সাল্লাহু সাল্লাম তার হাত দিয়ে ইশারা করে সময়টির সংক্ষিপ্ত তার ইঙ্গিত দেন (বুখারী শরীফের হাদিস)
হযরত আবু দারদা আবু মুসা আশ’আরী রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন আমি আমার পিতাকে বলতে শুনেছি তিনি যখন জুম্মার নামাজের বিশেষ মুহূর্তের সম্পর্ক বলেছেন ইমামের মিম্বারের বসার সময় থেকে নামাজ শেষ করা পর্যন্ত সময় টি সেই বিশেষ মুহূর্ত
(মুসলিম ও মিশকাত শরীফের হাদিস)
পবিত্র জুম্মার দিনে নতুন কাপড় পড়ে নামাজে যাওয়া আযানের সাথে সাথে, মসজিদের দিকে ধাবিত হওয়া , সব থেকে ভালো হয় যে রাস্তা দিয়ে তুমি মসজিদের দিকে যাবে অন্য যে কোন এক রাস্তা দিয়ে তোমার বাড়িতে তুমি ফিরবে আর রাস্তা যদি ভিন্ন না হয় সে ক্ষেত্রে একপাশ দিয়ে তুমি মসজিদের দিকে যাবে জিকির করতে করতে
আর একপাশ দিয়ে তুমি জিকির করতে করতে তোমার বাসায় পৌঁছাবে তাহলে কাল কেয়ামতের ময়দানে ওই রাস্তা তোমাকে সাক্ষী দিবে মহান আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীনের দরবারে