জুম্মার নামাজ কয় রাকাত।কোরআন হাদিসের আলোকে

জুম্মার নামাজ কয় রাকাত
জুম্মার নামাজ কয় রাকাত

প্রতিদিনের জোহরের নামাজের নিয়ম অনুযায়ী জুম্মার নামাজের নিয়ম একটু ভিন, এক্ষেত্রে জুম্মার নামাজ কয় রাকাত এই সম্পর্কে বলা হয়েছে , জুম্মার নামাজ মোট দশ রাকাত , এখন জুম্মার নামাজ সম্পর্কে বিস্তারিত জানবো

জুম্মার নামাজ কয় রাকাত

এক্ষেত্রে কিছু নফল নামাজ অতিরিক্ত আদায় করার ক্ষেত্রে কিছু নিয়মকানুন রয়েছে এ জুম্মার দিনে, সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ হলো খুতবা দেওয়ার জন্য জোহরের চার রাকাত নামাজের পরিবর্তে দুই রাকাত নামাজ রয়েছে আর দুই রাকাতের যে ফজিলত রয়েছে সেটি খুতবার মধ্যে এজন্য জুম্মার দিন মুসলমান হিসাবে আযান দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মসজিদের দিকে যাওয়া

জুম্মার নামাজ কয় রাকাত
জুম্মার নামাজ কয় রাকাত

জুম্মার নামাজের রাকাত সংখ্যা
জুম্মা দিন জোহরের নামাজের পরিবর্তে দুই রাকাত জুম্মার নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের উপর ফরজ, ইহার ওয়াক্ত যোহরের ওয়াক্ত সময়, জুম্মার দিন দুপুরে গোসল করিয়া পরিষ্কার পোশাক পরিধান করিয়া আযানের সাথে সাথে মসজিদে উপস্থিত হইয়া জুম্মার নামাজ আদায় করতে হয়

 

• চার রাকাত জুম্মাার কাবলা্ল সুন্নাত

• তারপর দুই খুতবা পাঠ

• দুই রাকাত জুমার ফরজ নামাজ, জামাতের সাথে

• চার রাকাত বাদাল জুমা আদায় করতে হয়,

• জুম্মার দিন সময় থাকলে খুতবা আরম্ভের পূর্বেও মসজিদে প্রবেশের সাথে সাথে
তাহিয়্যাতুল অজু দুই রাকাত আদায় করতে হয়,
তারপরও যোহরের সুন্নত ও নফল নামাজ আদায় করা উত্তম কিন্তু ওই নামাজগুলো জুমার নামাজের সাথে সম্পৃক্ত হয়

দুই-রাকাত তাহিয়্যাতুল অজু নিয়ত সমূহঃ

আরবি-উচ্চারন
نَوَايْتُ اَنْ اُصَلِّىَ لِلَّّهِ تَعَالَى رَكْعَتَىْ صَلَوةِ التَّحِيَّةُ الْوُضُوْءِ سُنَّةُ رَسُوْلِ اللَّهِ تَعَالَى مُتَوَجِّهًا اِلَى جِهَةِ الْكَعْبَةِ الشَّرِيْفَةِ اَللَّهُ اَكْبَرُ

 

বাংলা উচ্চারণ

নাওয়াইতুয়ান উসাল্লিয়া লিল্লাহি তা’আলা রাক’আতাই সালাতিল তাহিয়্যাতুল অজু সুন্নাতু রাসূলিল্লাহি তা’য়াল মোতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শারিফাতি আল্লাহু আকবর

বাংলা অর্থ
কিবলামুখী হয়ে দুই রাকাত তাহিয়্যাতুল ওযুর নামাজ আদায় করার উদ্দেশ্যে নিয়ত করিলাম আল্লাহু আকবার
হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করিয়াছেন
জুমার দিনে যে ব্যক্তি গোসল করে এবং তার সাধ্য অনুযায়ী পবিত্রতা হাসিল করে এবং নিজের তেল ব্যবহার করে অথবা নিজের ঘরের সুগন্ধি থেকে সুগন্ধি ব্যবহার করে অথবা নামাজের জন্য বের হয় এবং অন্যদেরকে কষ্ট দিয়ে নামাজের কাতার এর সামনের দিকে না যায় এবং খুতবার সময় চুপ থাকে এবং সে যে পরিমাণ নির্ধারণ হয়েছে সেই পরিমাণ সালাত আদায় করে তাহলে তার ওই ঝুমা হতে পরবর্তী জুমা পর্যন্ত সময়ের যাবতীয় গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়

জুম্মার নামাজ কয় রাকাত
জুম্মার নামাজ কয় রাকাত

আমাদের নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাপ্তাহিক পবিত্র জুম্মার নামাজ সম্পর্কে বলেছেন
তোমাদের কেউ জুমার নামাজ আদায় করতে আসলে তার পূর্বে সে যেন গোসল করে

দয়ার নবি হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অন্য এক হাদিসে বলেছেন
আমি যদি আমার আদরের উম্মতের জন্য কষ্টকর মনে না করতাম, তাহলে আদরের উম্মাত দের প্রত্যেকের নামাজের সময় মিসওয়াক করার হুকুম দিতাম

জুম্মার নামাজ কয় রাকাত

অপর এক হাদীসে হযরত মুহাম্মদ সাল্লাহু সাল্লাম বলেছেন
মুসলিম জনগোষ্ঠীর উম্মতেরা এই জুমার দিন এমন একটি দিন, মহান আল্লাহ পাক রাব্বুল আলামীন তোমাদের জন্য ঈদের দিন বানিয়েছেন, অতএব তোমরা এই দিনে গোসল করো এবং তোমরা অবশ্যই মিসওয়াক করো

হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
জুমার নামাজের খুতবা দিচ্ছিলেন, এমত অবস্থায় এক ব্যক্তি মসজিদে প্রবেশ করিলেন, তখন হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কি নামাজ আদায় করেছো সেই ব্যক্তি বলল, হে আল্লাহর রাসূল না আমি নামাজ আদায় করি নাই তখন আমাদের নবী তাকে নির্দেশ দিলেন, তুমি দু’রাকাত নামাজ পড়ে নাও
নাওয়াইতুয়ান উস্কিতা আন জুম্মাতি ফারদুল্লাহি তায়ালা মুতাওয়াজ

হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করিয়াছেন জুমার নামাজের সময় তিন ধরনের লোক হাজির হয়
1 এক ধরনের লোক আছে যারা সবসময় মসজিদে প্রবেশ করে তামাশা করে এই ধরনের লোকদেরকে মসজিদে আসার বিনিময়ে তাদের তামাশা ছাড়া আর কিছুই পাবে না
2 আরেক ধরনের লোক আছে যারা এই নামাজে হাজির হয়ে শুধু মোনাজাত করে আর আল্লাহর কাছে যা চাই তাকে কিছু দেন আর যাকে ইচ্ছা দেন না
3 এ প্রকার লোক হল যারা জুমআর দিনে উপস্থিত হয় চুপচাপ থাকে এবং মনোযোগ সহকারে খুতবা শ্রবণ করে কারও ঘাড় ডিঙ্গিয়ে সামনে যায়না কাউকে কষ্ট দেয় না আর তারা দুই জুম’আর মধ্যবর্তী সাত দিন সহ আরও তিনদিন যোগ করে মোট দশ দিনের গুনাহার খাতা আল্লাহ তায়ালা মাফ করে দেন (আবু দাউদ ১১১৩)

জুম্মার নামাজ কয় রাকাত
জুম্মার নামাজ কয় রাকাত

পবিত্র জুমার চার রাকাত এবং পরে চার রাকাত নামাজ সুন্নাতে মুয়াক্কাদা হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও সাহাবায়ে কেরামদের আমন দ্বারা প্রমাণিত, তবে জুম্মার পরে চার রাকাত সুন্নত এর সঙ্গে আরো দুই রাকাত নামাজ পড়া উত্তম

এই প্রসঙ্গে হযরত আলী রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু হতে বর্ণিত তিনি বলেন হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জুম্মার নামাজের আগে চার রাকাত এবং পবিত্র জুমার নামাজের পর চার রাকাত নামাজ আদায় করতে চান না কাছে এসে সালাম ফেরাতে (আল মুজামুল আওসাদ১৬১৭)

হযরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু হতে বর্ণিত তিনি বলেন হযরত মুহাম্মদ সাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জুম্মার নামাজের আগে একসঙ্গে চার রাকাত নামাজ আদায় করতেন (সুনানু ইবনে মাজাহ ১১২৯)

হযরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু হতে বর্ণিত তিনি বলেন হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বর্ণনা করেছেন কোন লোক জুমার নামাজ আদায় করবে সে যেন এরপর চার রাকাত নামাজ আদায় করে (মুসলিম তিরমিজি)

হযরত আলী রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু হতে বর্ণিত তিনি তার বাবার সূত্র বর্ণনা করেন হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পবিত্র জুমার নামাজের পর দুই রাকাত নামাজ আদায় করতেন (মুসলিম , তিরমিজি ৫২১)

মহান আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন মুসলমানদের জন্য বছরে মাত্র দুইটা রাখছি কিন্তু আমাদের উম্মতের জন্য কিছু সুখবর দিয়েছে যে আমাদের সাপ্তাহিক ঈদ হল জুম্মার দিন আর এই জুম্মার দিনে আমাদের পোশাক পরিষ্কার করে সুন্দর পোশাক পরিধান করে জায়নামাজ নিয়ে তাড়াতাড়ি গোসল সেরে আযানের সাথে সাথে মসজিদের দিকে যাওয়া

আমরা যারা মুসলমান তাদের মিলবন্ধন হওয়ার একটি মাধ্যম হলো শুক্রবারের জুম্মার নামাজ আরে জুম্মার নামাজের সম্পর্কে কোরআন ও হাদিসে খুব সুন্দর ভাবে উল্লেখ রয়েছে বিশেষ করে আমাদের নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই জুম্মার নামাজ সম্পর্কে খুব সুন্দর ভাবে বিভিন্ন তাৎপর্য সম্পর্কে বলেছেন