তায়াম্মুমের ফরজ কয়টি

তায়াম্মুমের ফরজ কয়টি,তায়াম্মুম কখন করবে? এক তায়াম্মুম দ্বারা একাধিক ফরজ- নফল নামাজ পড়া জায়েজ আছে কি না? নামাজের সময় শুরু হওয়ার আগে তায়াম্মুম করবে। এক তায়াম্মুম দ্বারা একাধিক ফরজ-নফল নামাজ পড়া জায়েজ আছে।



তায়াম্মুমের ফরয ৩টি-


পাক হওয়ার নিয়ত করা (নামাজ পড়া বা কোরআন তিলাওয়া‌তের জন্য প‌বিত্রতা অর্জ‌নের নিয়্যত করা)।


দুই হাত একবার মাটিতে রে‌খে/মেরে তা দিয়ে মুখমন্ডল মাসেহ করা।


দুই হাত আবার মাটিতে রে‌খে/মেরে দুই হাতের কনুই মাসেহ করা (হিন্দিয়-১/৫০, আলমগীরী ১/২৫-২৬)।
.

 


তায়াম্মুমের সুন্নত-


বিসমিল্লাহ বলা
প্রথমে দুই হাত পরে দুই হাত কনুই মাসেহ করা।


মাটিতে হাতের তালু মারা পিঠের দিক নয়।
মাটিতে হাত মারার পর মাটি ঝেড়ে ফেলা।


দুই হাতের আংগুল প্রসারিত করে মাটিতে মারা যাতে হাতে ধুলা লাগে।
অন্তত তিন আংগুল দিয়ে চেহারা ও হাত মাসেহ করা।


প্রথমে ডান হাত ও পরে বাম হাত মাসেহ করা।
চেহারা মাসেহ করার পর দাড়ি খেলাল করা।



অযু বা গোসলের পরির্বতে নিম্নোক্ত অবস্থায় তায়াম্মুম করতে হয়।

 


আশেপাশে ১.৭ কিলোমিটারের মধ্যে পানি পাওয়া না যায়।
পানি পেতে যদি শত্রুর, সাপ কিংবা বিপদজনক পশুর আক্রমণের ভয় থাকে।


এত অল্প পানি থাকে যে তা গোসল বা অযুতে ব্যবহার করলে খাওয়ার পানির সংকট হবে।
কেউ তার সুচিন্তিত অভিজ্ঞতা অথবা বিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শে জানতে পারে যে, পানি ব্যবহার তার স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।


পানি কিনে ব্যবহার করার মত যথেষ্ট অর্থ না থাকে।
পানির দাম খুব বেশি হয়।


তায়াম্মুমের ফরজ কয়টি


.
?যা কিছু দ্বারা তাইয়াম্মুম সঠিক হবে-

 


মাটি
বালি


বিভিন্ন ধরনের পাথর, যেমন কালো পাথর, মারমার (মার্বেল) পাথর, চুনা পাথর ইত্যাদি।
মাটি জাতীয় সব জিনিসের উপর তায়াম্মুম করা যেতে পারে, যেমন পোড়া কাদা মাটি- ইট ও কলস।
.

 


?কখন তায়াম্মুম করা জায়েজ আছে?


যদি পানি পাওয়া না যায়।
পানি যদি এক ক্রোশ দূরে থাকে (এক ক্রোশ হলো, চার হাজার কদম।)
পাওয়া গেলেও নাগালের বাইরে।

 


পানি ব্যবহারে ভীষণ ক্ষতির আশংকা।
(সুস্থ ব্যক্তি) অসুস্থ হয়ে পড়ার বা (রুগ্ন ব্যক্তির) রোগ নিরাময়ে বিলম্ব হওয়ার কিংবা রোগ বেড়ে যাওয়ার আশংকা থাকলে।


শত্রু, হিংস্র প্রাণীর ভয় বা পিপাসার ভয় থাকে কিংবা বালতি বা রশি পাওয়া না যায়।
যে সব নামাজের কাজা নেই (যেমন জানাযা ও ঈদের নামাজ ইত্যাদি) তা ওজু করে না পাওয়ার আশংকা থাকলে।



فَلَمْ تَجِدُواْ مَاء فَتَيَمَّمُواْ صَعِيدًا طَيِّبًا فَامْسَحُواْ بِوُجُوهِكُمْ وَأَيْدِيكُم مِّنْهُ مَا يُرِيدُ اللّهُ لِيَجْعَلَ عَلَيْكُم مِّنْ حَرَجٍ وَلَـكِن يُرِيدُ لِيُطَهَّرَكُمْ وَلِيُتِمَّ نِعْمَتَهُ عَلَيْكُمْ لَعَلَّكُمْ تَشْكُرُونَ


বাংলায় অনুবাদ- অতঃপর পানি না পাও, তবে তোমরা পবিত্র মাটি দ্বারা তায়াম্মুম করে নাও-অর্থাৎ, স্বীয় মুখ-মন্ডল ও হস্তদ্বয় মাটি দ্বারা মুছে ফেল। আল্লাহ তোমাদেরকে অসুবিধায় ফেলতে চান না; কিন্তু তোমাদেরকে পবিত্র রাখতে চান এবং তোমাদের প্রতি স্বীয় নেয়ামত পূর্ণ করতে চান-যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর।



কি জিনিস দ্বারা তায়াম্মুম করা জায়েজ? এর জন্য শর্ত কি?
মাটি, বালি, চুনা, লাল পাথর, কালো পাথর ও মর্মর পাথর এবং মাটি জাতীয় সব জিনিসের উপর তায়াম্মুম করা যেতে পারে।

 



তবে শর্ত হলো, তা পাক হতে হবে।

তায়াম্মুমের রোকন ও শর্ত কয়টি ও কি কি?
তায়াম্মুমের রোকন দুইটি- (১) মাটি বা মাটি জাতীয় জিনিসের উপর দুইবার হাত মারা (২) চেহারা ও উভয় হাত মাসেহ করা।


গোসলের পরিবর্তে তায়াম্মুম
ফরয গোসলের পরিবর্তে তায়াম্মুম করে দেহপবিত্রকরণের বিধান রয়েছে।



তায়াম্মুরের শর্ত ছয়টি-



(১) নিয়ত করা (২) মাসেহ করা (৩) মাটি জাতীয় জিনিসের উপর তায়াম্মুম করা (৪) জিনিসটি পাক হওয়া

(৫) পানি না পাওয়া বা পানি ব্যবহারে সক্ষম না হওয়া এবং (৬) তিন বা ততোধিক আঙ্গুল দ্বারা মাসেহ করা।


মুখমণ্ডল বা হস্তদ্বয়ের কোন অংশ যদি মাসেহ করা না হয় তাহলে তার হুকুম কি?
মুখমণ্ডল বা হস্তদ্বয়ের নখ পরিমাণ অংশ যদি মাসেহ করা না হয় তাহলে তায়াম্মুম হবে না।

তাই হাতের আংটি নড়াচড়া করে নিতে হবে আঙ্গুল খেলাল করতে হবে।

তায়াম্মুম প্রবর্তনের ইতিহাস
মুহাম্মদ এর স্ত্রী আয়েশা সংশ্লিষ্ট একটি ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে পানির অভাবে মাটি দিয়ে তায়াম্মুম করার আদেশ জারী হয়।





তায়াম্মুম কখন করবে? এক তায়াম্মুম দ্বারা একাধিক ফরজ- নফল নামাজ পড়া জায়েজ আছে কি না?
নামাজের সময় শুরু হওয়ার আগে তায়াম্মুম করবে। এক তায়াম্মুম দ্বারা একাধিক ফরজ-নফল নামাজ পড়া জায়েজ আছে।


তায়াম্মুম কখন বাতিল হবে?


পানি ব্যবহারে সক্ষম হয়ে গেলে তায়াম্মুম বাতিল হয়ে যাবে। আর যদি নামাজরত অবস্থায় মুসল্লি পানি ব্যবহারে সক্ষম হয়ে যায়।

তায়াম্মুমের দোয়া

আরবী নিয়ত ও উহার অর্থ

تويت أن أتمم لرفع الحدث واستباحة للصلوة وتقرباً إلى الله تعالى .



উচ্চারণ ঃ নাওয়াইতু আন্ আতায়াম্মামা লিরাইল্ হাদাসি ওয়াইস্তিবাহাতাল্ লিছ্‌ ছালাতি ওয়াতাক্বাররোবান ইলাল্লাহি তায়ালা।


অর্থাৎ, আমি নাপাকী দূর করিবার, নামাজ শুদ্ধরূপে পড়িবার ও আল্লাহ্র নৈকট্য লাভের উদ্দেশ্যে তায়াম্মুম করিতেছি।



তাহলে তায়াম্মুম করে যে নামাজ শুরু করা হয়েছিল তা বাতিল হয়ে যাবে।


মুসল্লির শরীর বা পোশাক যদি নাপাক হয়ে যায় এবং পাক পানি ব্যবহারে সক্ষম না হয় তাহলে তার হুকুম কি?
মুসল্লির শরীর বা পোশাক যদি নাপাক হয় আর সে পানি ব্যবহারে সক্ষম না হয়, তাহলে তার জন্য নাপাকীসহ নামাজ পড়া জায়েজ।


(সূত্র: বিভিন্ন ওয়েবসাইট)