তাহাজ্জুদ নামাজের সময় কোন দোয়া পড়লে মনের ইচ্ছা পূরণ হয়

তাহাজ্জুদ নামাজের সময় কোন দোয়া পড়লে মনের ইচ্ছা পূরণ হয় , তাহাজ্জুদ নবীজি (সা.) সব সময় পড়তেন। তাই এটি সুন্নত, অতিরিক্ত হিসেবে নফল;অভিজ্ঞতাদের পরামর্শ অনুযায়ী ….

নবীজি (সা.)-এর জন্য এটি অতিরিক্ত দায়িত্ব ছিল। পাঁচ ওয়াক্ত নির্ধারিত নফলের মধ্যে তাহাজ্জুদ সর্বোৎকৃষ্ট আমল। হজরত আলী (রা.) বলেছেন: ‘ওয়া মান তলাআল উলা ছাহারাল লায়ালি,’ অর্থাৎ যাঁরাই ইবাদতে আধ্যাত্মিক জগতে আল্লাহর নৈকট্য লাভে ঊর্ধ্বারোহণ করেছেন; তাঁরাই রাত জেগে তাহাজ্জুদ পড়েছেন।

তাহাজ্জুদ নামাজের সময় কোন দোয়া পড়লে মনের ইচ্ছা পূরণ হয়



তাহাজ্জুদ নামাজ রাতের শেষভাগে পড়তে হয়। এই নামাজ পড়ার আলাদা কোনও নিয়ম নেই। শুধু নিয়ত করে অন্য সুন্নত ও নফল নামাজের মতো দুই রাকাত করে পড়তে হয়। যত রাকাত ইচ্ছে নামাজ আদায় করা যায়, তবে দুই রাকাত করে নামাজ হতে হবে ।অভিজ্ঞতাদের পরামর্শ অনুযায়ী  দুই রাকাত শেষে সালাম ফিরাবে, আবার দুই রাকাত পড়বে…। এভাবে যত রাকাত সম্ভব

। -(শায়খ আবদুল আজিজ ইবনে আবদুল্লাহ বিন বাজ; কাইফিয়্যাতু সালাতুত তাহাজ্জুদ ওয়া কিয়ামুল লাইল, ফাতাওয়া নুরুন আলাদ দারব, খণ্ড : ১০, পৃষ্ঠা : ২১-২৪)




(দিওয়ানে আলী, নাহজুল বালাগা)। তাই তাহাজ্জুদ হলো মোক্ষ লাভের মোক্ষম মাধ্যম। অভিজ্ঞতাদের পরামর্শ অনুযায়ী হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুল (সা.) বলেন: ‘ফরজ নামাজগুলোর পর উত্তম নামাজ হলো রাতের তাহাজ্জুদ।’ (মুসলিম, আলফিয়্যাহ, পৃষ্ঠা: ৯৭, হাদিস: ৪০৫)।


হজরত আব্দুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাতে তাহাজ্জুদের উদ্দেশ্যে যখন দাঁড়াতেন, তখন দোয়া পড়তেন-


আরবি :


اللَّهُمَّ لَكَ الْحَمْدُ أَنْتَ قَيِّمُ السَّمَوَاتِ وَالأَرْضِ وَمَنْ فِيهِنَّ وَلَكَ الْحَمْدُ، لَكَ مُلْكُ السَّمَوَاتِ وَالأَرْضِ وَمَنْ فِيهِنَّ،
وَلَكَ الْحَمْدُ أَنْتَ نُورُ السَّمَوَاتِ وَالأَرْضِ، وَلَكَ الْحَمْدُ أَنْتَ الْحَقُّ، وَوَعْدُكَ الْحَقُّ، وَلِقَاؤُكَ حَقٌّ، وَقَوْلُكَ حَقٌّ، وَالْجَنَّةُ حَقٌّ، وَالنَّارُ حَقٌّ،


وَالنَّبِيُّونَ حَقٌّ، وَمُحَمَّدٌ صلى الله عليه وسلم حَقٌّ، وَالسَّاعَةُ حَقٌّ، اللَّهُمَّ لَكَ أَسْلَمْتُ، وَبِكَ آمَنْتُ وَعَلَيْكَ تَوَكَّلْتُ، وَإِلَيْكَ أَنَبْتُ، وَبِكَ خَاصَمْتُ، وَإِلَيْكَ حَاكَمْتُ، فَاغْفِرْ لِي مَا قَدَّمْتُ وَمَا أَخَّرْتُ، وَمَا أَسْرَرْتُ وَمَا أَعْلَنْتُ، أَنْتَ الْمُقَدِّمُ وَأَنْتَ الْمُؤَخِّرُ، لاَ إِلَهَ إِلاَّ أَنْتَ ـ أَوْ لاَ إِلَهَ غَيْرُكَ




তাহাজ্জুদের সময় হলো মধ্যরাতের পর বা রাতের দুই-তৃতীয়াংশ অতিবাহিত হওয়ার পর থেকে তথা রাত দুইটার পর থেকে ফজরের ওয়াক্ত আরম্ভ হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত।অভিজ্ঞতাদের পরামর্শ অনুযায়ী  সাহ্‌রির সময় শেষ হলে তথা ফজরের ওয়াক্ত শুরু হলে তাহাজ্জুদের ওয়াক্ত শেষ হয়। রাসুল (সা.)-এর জমানায় তাহাজ্জুদের জন্য আলাদা আজান দেওয়া হতো।



উচ্চারণ :

আল্লাহুম্মা লাকাল হামদু আংতা কায়্যিমুস সামাওয়অতি ওয়াল আরদি ওয়া মান ফিহিন্না ওয়া লাকালহামদু। লাকা মুলকুস সামাওয়অতি ওয়াল আরদি ওয়া মান ফিহিন্না। ওয়া লাকাল হামদু আংতা নুরুস সামাওয়াতি ওয়াল আরদ। ওয়া লাকাল হামদু আংতাল হাক্কু। ওয়া ওয়া’দুকাল হাক্কু।



ওয়া লিক্বাউকা হাক্কু। ওয়াল ঝান্নাতু হাক্কু। ওয়ান নারু হাক্কু। ওয়ান নাবিয়্যুনা হাক্কু। ওয়া মুহাম্মাদুন সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামা হাক্কু। ওয়াস সাআতু হাক্কু। আল্লাহুম্মা লাকা আসলামতু। ওয়াবিকা আমাংতু ওয়া আলাইকা তাওয়াক্কালতু।

ওয়া ইলাইকা আনাবতু। ওয়া বিকা খাসামতু। ওয়া ইলাইকা হাকামতু। ফাগফিরলি মা কাদ্দামতু ওয়া মা আখ্খারতু। ওয়া মা আসরারতু ওয়া মা আ’লাংতু। আংতাল মুকাদ্দিমু ওয়া আংতাল মুআখ্খিরু। লা ইলাহা ইল্লা আংতা। লা ইলাহা গাইরুকা।’ (বুখারি)




এখনো মক্কা শরিফ ও মদিনা শরিফে এই নিয়ম প্রচলিত আছে। তাহাজ্জুদ একাকী পড়াই উত্তম; জামাতে পড়া অনেক মুজতাহিদ ফকিহ মকরুহ বলেছেন। তাই অন্য সব সুন্নত ও নফলের মতো তাহাজ্জুদ নামাজের কিরাআতও সিররি; অর্থাৎ তাহাজ্জুদে সুরা কিরাত নিম্ন স্বরে পড়তে হয় এবং এর জন্য ইকামাতেরও প্রয়োজন হয় না।



প্রথমে আপনি দুই দুই রাকাত করে তাহাজ্জুদের

নামাজ পরবেন,অবশ্যই ধিরে ধিরে, পারলে

আরো বেশি পরুন,তার পর দুরুধ ইস্তেগফার

পাঠ করুন, পারলে একটু কোরআন তেলওয়াত

করুন, তার পর জিকির আজকার করুন, তারপর

আল্লাহর কাছে সেজদা দিয়ে চোখের পানি ছেড়ে

দিয়ে কান্না করে দুয়া করুন, ইনশাআল্লাহ আল্লহ

আপনার দোয়া কবুল করবেন।।।



কিভাবে দোয়া করবেন সেটা আপনার ব্যাপার।অন্য সময় যেভাবে দোয়া করেন সেভাবেই করবেন।তাহাজ্জুদের নামাযের সময় দোয়া করার জন্য আলাদা কোনো নিয়ম নেই।তবে,দোয়া করার নিয়ম হলোঃ দোয়ার আগে দুরুদ শরীফ পড়ে নেয়া ও নামাযের ছুরতে বসে দোয়া করা।

(সূত্র: বিভিন্ন ওয়েবসাইট)