তাহাজ্জুদ নামাজের সময় ।কোরআন হাদিসের আলোকে

তাহাজ্জুদ নামাজের সময়
তাহাজ্জুদ নামাজের সময়

তাহাজ্জুদের মূল সময় মূলত রাত তিনটা থেকে শুরু করে ফজরের আযানের আগ পর্যন্ত থাকে, তাহাজ্জুদ নামাজের সময় সম্পর্কে কোরআন হাদিসের আলোকে নিচে আলোকপাত করা হলো,পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের পরে এই নামাজের গুরুত্ব সর্বোচ্চ

যে সমস্ত ইবাদতের মধ্য দিয়ে আল্লাহর খুব নিকটবর্তী হওয়া যায় তার মধ্য অন্যতম নামাজ হলো সালাতুল তাহাজ্জুদ

মাঝরাতের পরে রাতের দুই তৃতীয়াংশ সময় চলে গেলে সলাতুত তাহাজ্জত নামাজের ওয়াক্ত শুরু হয়, রাত ২ টার পর থেকে ফজরের নামাজের সময় আরম্ভ হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত, সালাতুত তাহাজ্জোতের ওয়াক্ত থাকে, ফজরের সময় শুরু হলে তাহাজ্জুদের সময় শেষ হয়ে যায়

 

এ বিষয়ে হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জামানায় সালাতুল তাহাজ্জুদ নামাজের জন্য আলাদাভাবে আযান দেওয়া হত এখনো আমাদের মক্কা ও মদীনা শরীফে এই প্রথা চালু আছে

তাহাজ্জুদ নামাজের সময় তাহাজ্জুদ নামাজের সময়

তাহাজ্জুদ নামাজের সময়

* গভীর রাতে
* রাতের দুই তৃতীয়াংশ সময় চলে গেলে
* কিছু সময় ঘুমিয়ে
* এশার সালাতের পর থেকে
* ফজরের সালাতের আগ পর্যন্ত
* রাত বারোটার পরে পড়লে ভালো হয়
* মূল সময় রাত তিনটায়

সর্বোপরি তাহাজ্জুদ নামাজ ও সালাতের সময় হল রাতের দুই তৃতীয়াংশ পর থেকে এই সালাত আদায় করা যাবে এই সালাতের গুরুত্ব অনেক এই সালাতের মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য লাভ করা যায় এবং কাল কেয়ামতের ময়দানে এই নামাজি হবে ওই পুলসিরাত পার হবার একমাত্র মাধ্যম কারণ মহান আল্লাহ পাক রাব্বুল আলামীনের ফরজ নামাজের পরে এই নামাজের গুরুত্ব বহন করে প্রতিদিন এই নামায পড়ার অভ্যাস তৈরি করুন দেখবেন আপনার শারীরিক দুর্বলতা কাটিয়ে সুস্থ সবল দেহ নিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে পারবেন এটি পরীক্ষিত

এটি ইসলামিক ফাউন্ডেশন এর তাহাজ্জত নামাজের সময় সূচী আলোকে আলোকপাত করা হয়েছে সালাতুল তাহাজ্জুদ নামাজ ও সালাতের সময় সম্পর্কে জেনে বুঝে আমল করলে আল্লাহ তা’আলা কবুল করবে ইনশাআল্লাহ

একা একা তাহাজ্জত নামাজ পড়া উত্তম, অন্যসব সুন্নাত ও নফল নামাযের মত তাহাজ্জত নামাজের সূরা আস্তে আস্তে পড়তে হয় সে ক্ষেত্রে ইকামতের কোন প্রয়োজন হয় না

তাহাজ্জুদ নামাজের সময়

 

গভীর রাতে উঠে তাহাজ্জত নামাজের আগে ও পরে পবিত্র কোরআন তিলাওয়াত করা খুবই উপকারী, আর সব থেকে বড় কথা হচ্ছে মহান আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন তাঁর বান্দাদেরকে শেষ রাতে সবথেকে নিকটবর্তী স্থানে এসে তাঁর বান্দাদেরকে ডাকতে থাকেন কে আছ উঠো আমার কাছে ক্ষমা চাও , আমি তাকে ক্ষমা করে দিব কে আছো ওঠো আমার কাছে সাহায্য চাইবে আমি তাকে সাহায্য করিব , এভাবে প্রতিনিয়ত মহান আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন তার বান্দাদেরকে ক্ষমা করার জন্য সাহায্য দেওয়ার জন্য রোগমুক্তি থেকে শেফা দেওয়ার জন্য ডাকতে থাকে্‌ ,
তাহাজ্জত নামাজের ক্ষেত্রে অনেকেই প্রশ্ন করে থাকেন এই তাহাজ্জত নামাজ কখন পড়ব, কোন সময় পড়বো তাহাজ্জুদ সালাতের সময় সূচী হল প্রতিদিন এশার নামাজের পর থেকে শুভে সাদিক পর্যন্ত এই নামাজের সময়  থাকে

তাজ্জতের নামাজ দুই রাকাত থেকে শুরু করে ১২ রাকাত পর্যন্ত পড়ার কথা উল্লেখ আছে হাদিসে, আপনি প্রতিদিন নিয়মিত ভাবে দুই রাকাত করে নামাজ পড়ার অভ্যাস তৈরি করুন, যদি আপনার শরীর সুস্থ থাকে তবে দুই দুই রাকাত করে আপনি তাহাজ্বতের নামাজ পড়তে পারবেন প্রথমে অভ্যাস করুন দুই রাকাত পড়ার তারপরে চার রাকাত কিভাবে করে এই নামাজের সংখ্যা বৃদ্ধি করুন এবং মহান আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীনের কাছে আপনার চাওয়া পাওয়ার কথা খুব সুন্দর ভাবে উল্লেখ করুন , আশা করি মহান আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন আপনার দোয়া কবুল করবেন
খন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর রহমতুল্লাহি আলাইহি তার ফিকহুল আকবর এই তাহাজ্জুদ নামাজের সময় বিষয়ে বর্ণনা করেছেন

এই তাহাজ্জুদ নামাজ ও সালাতের সময় এশার পর থেকে ফজরের উন্মেষ পর্যন্ত সময়ে, নফল সালাত আদায় করলে তা কিয়ামুল লাইল হবে,

সালাতুল তাহাজ্জুদ অর্থ হলো ঘুম থেকে উঠা এবং রাতে ঘুম থেকে উঠে কিয়ামুল লাইল করা কেউ যদি সকাল সকাল ঘুমিয়ে যেয়ে অর্থাৎ ৯ থেকে ১০ টার দিকে ঘুমিয়ে গেলে এবং বারোটা বা একটার দিকে উঠে নামাজ পরলে তাহাজ্জুদের নিয়ত করে , তাহলে সে কিয়ামুল লাইল অর্থাৎ তাহাজ্জুদের ফজিলত সে পাবে

আর যদি কেউ ঘুম থেকে না উঠে রাত একটা , দুইটা , তিনটার সময় এই নামায আদায় করে তবে তা কিয়ামুল লাইল জন্য হলেও তাহাজ্জুদ বলে গণ্য হবে না
আমরা যে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করি এই নামাজ ফরজ হওয়ার আগে হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উপর তাহাজ্বতের নামাজ বাধ্যতামূলক ছিল তার জীবদ্দশায় তিনি কখনও এই নামাজ হতে বিরত থাকে নি তবে তার উম্মতের জন্য এই নামাজ গায়রে মক্কা বলে বর্ণনা করেছেন এই নামাজ আদায় করলে পূর্ণ লাভ করা যায় কিন্তু কেউ যদি আদায় না করে তার জন্য কোন গুনা নাই

হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এটি আদায় করেছেন এ ক্ষেত্রে এটি সুন্নত তবে কিছু কিছু জায়গায় বা মতান্তরে এটি নফল ইবাদত

 

তাহাজ্জুদ নামাজের সময় তাহাজ্জুদ নামাজের সময়

তাহাজ্জুদ নামাজ ও সালাতের সময়

এই নামাজ আদায় করতে যেয়ে শরীরের ওপরে বেশি চাপ দিয়ে অসুস্থতার মধ্য আবার পড়ে গেলে চলবেনা কারণ এটি কোন কোন সময় সুন্নাত বলা হয়েছে মতান্তরে নফল ও বলা হয়েছে

হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাতুল তাহাজ্জুদ এর নামাজ দুই দুই রাকাত করে আদায় করতেন তিনি কখনও চার রাকাত পড়তেন কখনো আবার ৬ রাকাত কখনো ৮ রাকাত কখনো আবার ১২ রাকাতও পড়তেন, হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বেশি বেশি করে এই নামাজ আদায় করতেন তবে শারীরিক সক্ষমতা না থাকলে আপনি এই নামাজ প্রথমে দুই রাকাত করে পড়তে পারেন পরবর্তীতে এটা বৃদ্ধি করতেও পারেন তবে এটি যেহেতু আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীনের কাছে যাওয়ার একমাত্র মাধ্যম কারণ এই শেষ রাতেই মহান আল্লাহ তায়ালা তার বান্দাদের কাছে চলে আসেন , এতএব তাহাজ্জুদ নামাজ অনেক গুরুত্বপূর্ণ

এই তাহাজ্জুদ নামাজ ও সালাতের সময় সূচী তে প্রতিদিন পড়লে ভালো হয় তবে সুস্থতা নিয়ে আপনি পড়তে পারেন কিন্তু অসুস্থ হলে আপনি যেন এই নামাজের কার্যক্রম কমিয়ে আল্লাহর হুকুম পাঁচওয়াক্ত নামাজ সঠিক মতন আদায় করবেন

হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রিয় সাহাবী হযরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু হতে বর্ণিত তিনি বলেন যে ব্যক্তি সালের পর দুই বা ততোধিক রাকাত নামাজ পড়ে নাই সে হবে তাহাজ্জুদের ফজিলত এর অধিকারী

হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোন সূরা দিয়ে এই নামাজ আদায় করতেন কোন বাধ্যবাধকতা নাই বা কোনো নির্দিষ্ট তো নাই যে কোন সূরা পড়তে হবে কোন সূরা পড়া যাবে কোন সূরা পড়া যাবে না তারও কোন বাধ্যবাধকতা নাই

মহান আল্লাহ পাক রাব্বুল আলামিন দিন এবং রাত কে সময় দাঁরা ভাগ করে দিয়েছেন, দিনের বেলায় ঠিক সময় মতই সূর্য উঠে এবং সময়মত সূর্য ডোবে অর্থাৎ সময়ের গুরুত্ব এখানেই মহান আল্লাহ পাক রাব্বুল আলামিন তাঁর বান্দাদের জন্য উত্তম মাধ্যম হিসেবে পরিলক্ষিত করেছেন

মহান আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন তাঁর বান্দাদের জন্য পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ কি ফরজ করেছেন এটাও যদি কেউ সঠিক মতন আদায় করে তাহলে তার সময়ের প্রতি আনুগত্য আপনা আপনি হইবে

যারা আল্লাহ এবং তাঁর রসূলকে বিশ্বাস করে তারা যদি ঠিক সময় মত করে নামাজ আদায় করে তাহলে তাদের মনের অশান্তি দূর হয়ে যাবে এটা মহান আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন তাঁর বান্দাদের জন্য একটা নিয়ম হিসাবে দিয়েছেন এই নামাজি হল বেহেশতের চাবিকাঠি

এতএব তাহাজ্জুদ নামাজ অনেক গুরুত্ব