দোয়ায়ে মাসুরা । দোয়া মাসুরা কখন পড়তে হয়, দোয়া মাসুরা বাংলা আরবি উচ্চারণ ও অর্থসহ ফজিলত, দোয়া মাসুরা আরবি, দোয়া মাসুরা অর্থ,। অনুবাদ উচ্চারণ সহ আলোচনা করা হয়
নামাজ শেষ হওয়ার ঠিক আগে দোয়া মাসুরা পাঠ করা হয়। তারপরে সালাম জানাই। প্রত্যেক মুসলিমের এই দুআটি মনে রাখা উচিত। তবে যদি কোনও কারণে আমার মনে না থাকে তবে তার জায়গায় অন্য কয়েকটি দুআও পাঠ করা যায়।
সালাতে যেসব জায়গায় আল্লাহ্ দোয়া কবুল করে থাকেন তার মধ্যে একটি হল সালাম ফিরানোর আগে। দোয়া মাসুরা মুলত ক্ষমা প্রার্থনার দোয়া। আসুন দোয়াটি আমরা জেনে নেই।
দোয়া মাসুরা আরবি উচ্চারণঃ
আরও পড়ুন কালেমা শাহাদাত আরবি বাংলা ও অর্থ কি
তাশাহুদ বাংলা উচ্চারণ আরবি অর্থ সহ নাযিলের পেক্ষাপট
হাসি নিয়ে কবিতা (কুরআন হাদিসের আলোকে)
রাগ নিয়ে উক্তি-রাগ নিয়ে ইসলামিক উক্তি
দোয়া মাসুরা বাংলা আরবি উচ্চারণ ও অর্থসহ ফজিলত
আরবি দোয়া শব্দের অর্থ ই হল ডাকা , আহ্বান করা, ও প্রার্থনা করা, কোনো কিছু চাওয়া ইত্যাদি।
রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘দোয়া ছাড়া আর কিছুই আল্লা হর সিদ্ধান্ত কে বদলা তে পারে না।
___(তিরমিজি, হাদিস নম্বর ২১৩৯।)
দোয়ায়ে মাসুরা আরবি উচ্চারণ:
اللهم إني ظلمت نفسي ظلما كثيرا ولا يغفر الذنوب إلا أنت، فاغفر لي مغفرة من عندك وارحمني إنك أنت الغفور الرحيم
দোয়ায়ে মাসুরা বাংলা উচ্চারণ:
আল্লাহুম্মা ইন্নী যালামতু নাফসী যুল্মান কাসীরাওঁ ওয়ালা ইয়াগ ফিরুয যুনূবা ইল্লা আন্তা; ফাগফির লী মাগফিরাতাম মিন ইন্দিকা ওয়ার হামনী ইন্নাকা আন্তাল গফুরুর রাহীম।
দোয়ায়ে মাসুরা বাংলা অনুবাদ:
হে আল্লাহ্! আমি আমার নিজ আত্মার উপর বড়ই অত্যাচার করেছি, গুনাহ মাফকারী একমাত্র তুমিই; অতএব তুমি আপনা হইতে আমাকে সম্পূর্ণ ক্ষমা কর এবং আমার প্রতি দয়া কর। তুমি নিশ্চয়ই ক্ষমাশীল দয়ালু।
দোয়ায়ে পড়ার নিয়মঃ
এই দোয়া টি আমরা সাধারণত নামাযের শেষের দিকে বৈঠকে বসে আত্তাহিয়াতু পড়ার পর, দুরুদে ইব্রাহিম পড়ার পর এই দোয়া টি পড়ে থাকি । নামাযে নিয়ত বাঁধার পর সানা (সুবাহাকাল্লাহুম্মা) পড়তে হয় । এর পর সূরা ফাতিহা পড়তে হয় ।
তারপর সূরা ফাতিহার সাথে অন্য যেকোন সূরা মিলিয়ে পড়তে হয় । এরপর রুকুতে গিয়ে সুবহা-না রব্বিয়াল আ`যিম পড়তে হয় । এরপর রুকু থেকে উঠে সোজা হয়ে দাড়াতে হয় । তারপর সিজদায় যেতে হয়, সেজদায় সুবহা-না রব্বিয়াল আ‘লা পড়তে হয় । এভাবে দুই সেজদার পড় উঠে দাঁড়িয়ে হাত বাঁধতে হয় ।
ইসতেগফা করাসব সময় জবানে ইসতেগফার জারি রাখা। অর্থাৎ ‘আসতাগফিরুল্লাহ, আসতাগফিরুল্লাহ’ পড়া। কেননা যে ব্যক্তি বেশি বেশি ইসতেগফার করে, সে মুসতাজেবুদ দাওয়াহ হয়ে যায়। যার দোয়া আল্লাহ কখনো ফেরত দেন না।اَسْتَغْفِرُ الله – اَسْتَغْفِرُ الله উচ্চারণ :
আসতাগফিরুল্লাহ, আসতাগফিরুল্লাহ।اَسْتَغْفِرُ اللهَ الَّذِىْ لَا اِلَهَ اِلَّا هُوَ الْحَيُّ الْقَيُّوْمُ وَ اَتُوْبُ اِلَيْهِ উচ্চারণ : ‘আসতাগফিরুল্লাহাল্লাজি লা ইলাহা ইল্লা হুয়াল হাইয়্যুল কাইয়্যুমু ওয়া আতুবু ইলাইহি।’
– দোয়া কবুল না হও য়ার পাঁচ কারণ ।
দোয়া মুমিনদের হাতিয়ার। দোয়ার মাধ্যমে অসম্ভবকেও সম্ভব করা যায়। এমনকি দোয়ার ফলে ভাগ্যও ঘুরে যায়।
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা আমার কাছে দোয়া করো। আমি তোমাদের দোয়া কবুল করব।
___(সূরা মুমিন, আয়াত ৬০।)
দোয়া সব ইবাদতের মূল।
দোয়া কবুলের অনেক শর্ত আছে। আল্লাহর উদ্দেশে একমাত্র তার সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য খালেস দিলে দোয়া করতে হবে।
অনেক মানুষ এমন রয়েছে যাদের দোয়া আল্লাহতায়ালা কবুল করেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন।
নিরাশ না হওয়া: দোয়ার পর আল্লাহর প্রতি পূর্ণ বিশ্বাস রাখতে হবে যে আল্লাহ আমার দোয়া কবুল করবেন। নেতিবাচক কোনো চিন্তা করা যাবে না। অন্যথায় এ দোয়া কবুল নাও হতে পারে।
হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) বলেছেন, তোমাদের প্রত্যেক ব্যক্তির দোয়া কবুল হয়ে থাকে। যদি সে তাড়াহুড়া না করে আর বলে যে, আমি দোয়া করলাম, কিন্তু আমার দোয়া তো কবুল হলো না।
___(বুখারি, হাদিস : ৬৩৪০)
হারাম থেকে বেঁচে থাকা: দোয়া কবুল হওয়ার অন্যতম শর্ত হচ্ছে হারাম খাদ্য, বস্ত্র, পানীয় ইত্যাদি পরিহার করা।
আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্ন করা: আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করা একটি বড় ধরনের পাপ। এই পাপের শাস্তি দুনিয়া ও আখিরাত উভয় জায়গাতেই ভোগ করতে হবে বলে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে।
হাদিসে এসেছে, ‘কোনো মুসলিম দোয়া করার সময় কোনো গুনাহের অথবা আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নের দোয়া না করলে অবশ্যই আল্লাহ তাকে এ তিনটির কোনো একটি দান করেন।
(১ হয়তো তাকে তার কাঙ্ক্ষিত সুপারিশ দুনিয়ায় দান করেন , (২) অথবা তা তার পরকা লের জন্য জমা রাখেন এবং (৩) অথবা তার কোনো অ কল্যাণ বা বিপদা পদ তার থেকে দূরে করে দেন ।
সাহা বিরা বলেন, তাহলে তো আমরা অনেক বেশি লাভ করব । তিনি বলেন , আল্লাহ এর চেয়েও বেশি দেন ।
___(আত-তারগীব, হাদিস : ১৬৩৩)
দোয়ায় পূর্ণ মনোযোগ না থাকা: দোয়ার সময় পূর্ণ মনোযোগ দিয়ে দোয়া করতে। আল্লাহ অবচেতন মনের দোয়া গ্রহণ করেন না।
দোয়ার সুন্নাত তরিকা হল-
আল্লাহর প্রশংসা এবং রাসূল (সা.)-এর ওপর দরূদ পড়ে দোয়া করা। বিনয় কাকুতি-মিনতি করে দোয়া করা এবং দোয়া কবুলের ব্যাপারে তাড়াহুড়া না করা।
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেছেন, ‘তোমরা নিজের প্রতিপালককে ডাক, কাকুতি-মিনতি করে এবং সঙ্গোপনে। তিনি সীমা অতিক্রমকারীদের পছন্দ করেন না’
___(সূরা আরাফ, আয়াত ৫৫।)
আশা ও ভয়ভীতি নিয়ে দোয়া করা। এ সম্পর্কে আল্লাহতায়ালা বলেছেন, ‘তাঁকে ডাকো ভয় ও আশা নিয়ে’
___(সূরা আরাফ, আয়াত ৫৬।)
সম্ভব হলে অজু করে কেবলামুখী হয়ে দোয়া করা। নিজের গোনাহের কথা স্বীকার করে আল্লাহর নেয়ামতের স্বীকৃতি দেয়া।