নামাজের ফরজ কয়টি

নামাজের ফরজ কয়টি ? নামাজের অত্যাবশ্যকীয় ফরজ ইবাদত হল ১৩ টি। অর্থাৎ নামাজের মধ্যে অত্যাবশ্যকীয় ফরজ ১৩টি নিয়ম আপনাকে মেনে চলতে হবে এবং এই নিয়মের মধ্যে আপনাকে নামাজ আদায় করতে হবে।



নামাজের ফরয ১৩ টি

[৭ টি নামাজের বাহিরে ]

১/ শরীর পাক

২/কাপড় পাক

৩/ নামাজের জায়গা পাক



৪/ সতর ডাকা

৫/ কেবলামুখী হওয়া

৬/ নামাজের ওয়াক্ত চেনা

৭/ নিয়্যাত করা



সুতরাং প্রত্যেক মুমিন মুসলমানের উচিত নামাজের ভিতরে ফরজগুলো যথাযথভাবে আদায়ের মাধ্যমে নামাজ আদায় করা। হে আল্লাহ! সমগ্র মুসলিম উম্মাহকে সঠিকভাবে নামাজ আদায় করার তৌফিক দান করুন । (আমীন)

[ ৬ টি নামাজের ভিতরে ]

১/ তাকবীরে তাহরিমা বা আল্লাহু আকবার বলা

২/ দাঁড়াইয়া নামাজ পড়া

৩/ কেরাত পড়া

৪/ রুকু করা

৫/ সেজদা করা

৬/ শেষ বৈঠক


নামাজি ব্যক্তির নিজস্ব কোনো কাজের মাধ্যমে (যেমন—সালাম ফেরানো ইত্যাদি) নামাজ থেকে বের হওয়াও একটা ফরজ। [আল বাহরুর রায়িক, ১ : ৫১৩]

 

নামাজের ফরজ কয়টি



নামাজের কোনো ফরজ বাদ পড়লে নামাজ বাতিল হয়ে যায়। সাহু সিজদা করলেও নামাজ সহিহ হয় না। [আল বাহরুর রায়িক, ১ : ৫০৫) ফাতাওয়া শামি, ১ : ৪৪৭, হিদায়া, ১ : ৯৮]



নামাজের ওয়াজিব ১৪টি

১/ সুরা ফাতিহা পড়া

২/ সুরা ফাতেহার সঙ্গে সুরা মিলানো

৩/ রুকু ও সেজদায় দেরী করা

৪/ রুকু হইতে সোজা হইয়া দাঁড়ানো

৫/ দুই সেজদার মাঝখানে সোজা হইয়া বসা



৬/ দরমিয়ানী বৈঠক

৭/ দুই বৈঠকে আত্ত্যাহিয়াতু পড়া

৮/ ঈমামের জন্য কেরাত আস্তের জায়গায় আস্তে পড়া এবং জোড়ের জায়গায় জোড়ে পড়া

৯/ বিতিরের নামাজে দোয়া কুনুত পড়া

১০/ দুই ঈদের নামাজে ছয় তকবীর বলা ৷



১১/ ফরজ নামাজের প্রথম দুই রাকাত কেরাতের জন্য নির্ধারিত করা ৷

১২/ প্রত্যেক রাকাতের ফরজ গুলির তরতীব ঠিক রাখা ৷

১৩/ প্রত্যেক রাকাতের ওয়াজিব গুলির তরতীব ঠিক রাখা ৷

১৪/ আস্আলামু আ’লাইকুম ও’রাহ…বলিয়া নামাজ শেষ করা


আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, জনৈক ব্যক্তি মসজিদে প্রবেশ করে নামাজ আদায় শেষে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে সালাম দিলে তিনি তাকে সালামের জওয়াব দিয়ে বলেন, তুমি ফিরে যাও এবং সালাত আদায় কর।

 

কেননা তুমি সালাত আদায় করনি। এভাবে লোকটি তিনবার সালাত আদায় করল ও রাসূল (ছাঃ) তাকে তিনবার ফিরিয়ে দিলেন। তখন লোকটি বলল, হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)! যিনি আপনাকে সত্য সহকারে প্রেরণ করেছেন, তাঁর কসম করে বলছি, এর চাইতে সুন্দরভাবে আমি সালাত আদায় করতে জানিনা।

 

অতএব দয়া করে আপনি আমাকে সালাত শিখিয়ে দিন! (অতঃপর তিনি তাকে ধীরে-সুস্থে ছালাত আদায় করা শিক্ষা দিলেন)। (মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/৭৯০, ‘সালাতের বিবরণ’ অনুচ্ছেদ-১০)।




১৯টি কারণে নামাজ ভঙ্গ হয়ে থাকে

১/ নামাজে অশুদ্ধ কোরআন পড়া ৷

২/ নামাজের ভিতর কথা বলা ৷

৩/ নামাজের ভিতর কাউকে সালাম দেওয়া

৪/ নামাজের ভিতর সালামের উত্তর দেওয়া



৫/ নামাজের মধ্যে বিনা ওজরে কাশি দেওয়া

৬/ নামাজের ভিতরে ওহ্ আহ্ শব্দ করা

৭/ নামাজের মধ্যে আমলে কাছির করা ( মোক্তাদি হয়ে ঈমামকে অনুসরন না করা)

৮/ নামাজের মধ্যে বিপদে ও বেদনায় শব্দ করা

৯/ নামাজের মধ্যে তিন তজবী পরিমান সতর খুলিয়া রাখা



১০/ মোক্তাতী ব্যতীত অপর ব্যক্তির লোকমা লওয়া

১১/ সুসংবাদ ও দুঃসংবাদের উত্তর দেওয়া

১২/ নাপাক জায়গায় সেজদা করা

১৩/ কেবলার দিক হইতে সীনা ঘুরিয়া যাওয়া

১৪/ নামাজের মধ্যে কোরআন শরীফ দেখিয়া পড়া

 



১৫/ নামাজের মধ্যে শব্দ করিয়া হাসা ৷

১৬/ নামাজের মধ্যে সাংসারিক বা দুনিয়াবী প্রার্থনা করা

১৭/ নামাজের মধ্যে হাচির উত্তর দেওয়া

১৮/ নামাজের মধ্যে খাওয়া ও পান করা

১৯/ ঈমামের আগে মুত্তাতীর নামাজে দাঁড়ান ।



হযরত উম্মে সালামা (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ)-এর যামানায় মহিলাগণ জামাতে ফরজ নামাজ শেষে সালাম ফিরানোর পরে উঠে দাঁড়াতেন এবং রাসূল (ছাঃ) ও পুরুষ মুসল্লিগণ কিছু সময় বসে থাকতেন। অতঃপর যখন রাসূল (ছাঃ) দাঁড়াতেন তখন তারাও দাঁড়াতেন। (বুখারী, মিশকাত হা/৯৪৮ তাশাহুদে দোয়া অনুচ্ছেদ-১৭)



এর দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, শেষ বৈঠকে বসা এবং সালাম ফিরানােটাই ছিল রাসূল (সাঃ) ও ছাহাবায়ে কেরামের নিয়মিত সুন্নাত। প্রকাশ থাকে যে, কঠিন অসুখ বা অন্য কোন বাস্তব কারণে অপারগ অবস্থায় উপরোক্ত শর্তাবলী ও রুকন সমূহ ঠিকমত আদায় করা সম্ভব না হলে বসে বা শুয়ে ইশারায় নামাজ আদায় করবে। (বুখারী; মিশকাত হা/১২৪৮)।



নামাজের সুন্নত কয়টি
ফরজ ও ওয়াজিব ব্যতীত ছালাতের বাকি সব আমলই সুন্নাত। যেমন-

(১) জুমার ফরজ নামাজ ব্যতীত দিবসের সকল নামাজ নীরবে ও রাত্রির ফরজ নামাজ সমূহ সরবে পড়া

(২) প্রথম রাকাতে কিরাতের পূর্বে আউযুবিল্লাহ চুপে চুপে পাঠ করা

(৩) সালাতে পঠিতব্য সকল দোয়া পাঠ করা

(৪) বুকে হাত বাঁধা

(৫) রাফউল ইয়াদাইন করা



(৬) আমীন বলা

(৭) সিজদায় যাওয়ার সময় মাটিতে আগে হাত রাখা

(৮) জালসায়ে ইস্তিরাহাত করা

(৯) মাটিতে দুই হাতে ভর দিয়ে উঠে দাঁড়ানো

(১০) সালাতে দাঁড়িয়ে সিজদার স্থানে নজর রাখা

(১১) তাশাহুদের সময় ডান হাত ৫৩ এর ন্যায় মুষ্টিবদ্ধ করা ও শাহাদাত আঙ্গুল নাড়াতে থাকা; এছাড়া ফরয ওয়াজিবের বাইরে সকল বৈধ কর্মসমূহ।



ভুলবশত ফরজ বাদ পড়ে গেলে কি করব?
ভুলবশত যদি ফরজ গুলো কোন কারণে ছুটে যায় তাহলে পরবর্তী সময়ে কি করতে হবে অর্থাৎ কি করলে নামাজ শুদ্ধ হয়ে যাবে?



আমাদের মধ্যে অনেকেই রয়েছেন যারা কিনা এটা সম্পর্কে ভাবেন যে নামাজের মধ্যে ফরজ ইবাদত কোন একটি বাতিল হয়ে গেলে সাহু সিজদা করলে নামায পুনরায় সঠিক হয়ে যাবে।

আপনার ধারণা যদি এরকম থেকে থাকে তাহলে আপনার ধারনাটি সম্পুর্ন ভুল।



(সূত্র: বিভিন্ন ওয়েবসাইট)