পৃথিবীর সবচেয়ে ভালো মানুষ কে , মুসলমানদের কাছে পৃথিবীর সবচেয়ে প্রিয় মানুষ মহানবী হযরত মুহাম্মদ (স)। বিশ্বের সর্বকালের সেরা মহামানব হিসেবে মুসলিম সম্প্রদায়ের কাছে প্রশ্নাতীতভাবে স্বীকৃত। এবার ইন্টারনেট জায়ান্ট ‘গুগল’ ডটকমের র্যাংকিংয়েও বিশ্বসেরা মানুষ হিসেবে তালিকায় প্রথম স্থানে তারই নাম রয়েছে।
গুগলে best man, best human, best human in the world, ‘who is the best man in the world- ইত্যাদি লিখে সার্চ করলে প্রথমেই চলে আসে হযরত মুহাম্মাদ (সা.) এর নাম।
মাইকেল হার্টসের লেখা ‘বিশ্ব সেরা ১০০ মনীষী’ গ্রন্থে প্রথম স্থানেই রয়েছে হযরত মুহাম্মদ (স)-এর নাম। ১৯৭৮ সালে প্রকাশিত ওই বইটি বিভিন্ন মহলে ব্যাপক হইচই ফেলে দেয়।
পৃথিবীর সবচেয়ে ভালো মানুষ কে
গুগলের এ তথ্য এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ‘Best Man In The World ’Prophet Muhammad’. অর্থাৎ ‘নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, বিশ্বের সেরা মহামানব’ ইত্যাদি হ্যাশট্যাগে ভাইরাল হয়েছে।
পৃথিবীর সবচেয়ে ভালো মানুষ কে? (Prithibir bhalo manush ke)
পৃথিবীর সবচেয়ে ভালো মানুষ হযরত মুহাম্মদ(সাঃ)। তিনি ছিলেন আল্লাহর বন্ধু, তাকে আবার আল্লাহর প্রেরিত রাসূলও বলা হয়। তিনি সবসময় মানুষের উপকার করতেন,এমনকি সবসময় মানুষের উপকারে নিয়োজিত ছিলেন।‘পৃথিবীর সবচেয়ে ভালো মানুষ’ হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) প্রতিনিয়ত মানুষের কল্যান ও মঙ্গল করে গেছেন।
মানুষ তার ভালো ব্যবহার ও ভালো কাজের দ্বারা স্মরণীয় হয়ে থাকে, তেমনি, ‘পৃথিবীর সবচেয়ে ভালো মানুষ’ হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) তার ভালো ব্যবহার ও ভালো কাজের দ্বারা আমাদের মনে একটা বিরাট জায়গা জুড়ে স্মরণীয় হয়ে রয়েছেন।পৃৃৃথিবী সৃৃষ্টির মূল কারণই ছিলেন তিনি।
প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর সংক্ষিপ্ত জীবনী
আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছিলেন আখেরি নবী।
অর্থাৎ তিনি ইসলাম ধর্মের সর্বশেষ নবী এবং তারপর আর কোন নবী এই পৃথিবীতে আসবেনা।
তিনি ছিলেন এই পৃথিবীর বুকে রাজনৈতিক সামাজিক এবং ধর্মীয় শ্রেষ্ঠ নেতা।
তার এই বিশেষত্বের অন্যতম কারণ হচ্ছে আধ্যাত্মিক ও জাগতিক উভয় জগতেই চূড়ান্ত সফলতা অর্জন।
তিনি ইসলাম ধর্মীয় জীবনে যেমন সফল ছিলেন তেমন একইভাবে তিনি রাজনৈতিক জীবনেও সফল ছিলেন।
সমগ্র আরব জাতিকে একত্রিত করার জন্য এবং ইসলামের পথে নিয়ে আসার জন্য তিনি আপ্রাণ চেষ্টা করে গিয়েছেন।
আরবের মানুষের হাতে অনেক অত্যাচার জুলুম সহ্য করেও তিনি ইসলাম প্রচার করে গিয়েছেন।
শুরুতে আরবের মানুষের অবস্থা এতটাই ভয়াবহ ছিল যে তারা প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আহবানে সাড়া দেয়নি।
তবে মহান আল্লাহ তায়ালা সঠিক পরিকল্পনাকারী। তিনি মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে চেষ্টা চালিয়ে যাওয়ার জন্য ক্ষমতা এবং শক্তি দিয়েছিলেন।
শেষ পর্যন্ত আরবের মানুষ আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ডাকে সাড়া দিতে বাধ্য হয়েছিল।
মা আমেনার কোল আলো করে ৫৭০ খ্রিস্টাব্দের ১২ রবিউল আউয়াল মাসে আমাদের প্রিয় নবী মক্কায় জন্মগ্রহণ করেন।
তিনি ৬৩ বছর বয়সে ৬৩২ খ্রিস্টাব্দে ইন্তেকাল করেছিলেন।
যে সময় আরব জাতি একটি ঘোর অন্ধকারে নিমজ্জিত ছিল ঠিক তখনই মহান আল্লাহতালা আমাদের প্রিয় নবীকে পৃথিবীতে প্রেরণ করেছিলেন।
সে সময় আরব যাতে মানুষ ছিল অপকর্মে এবং মূর্তিপূজায় লিপ্ত। আরবের সব জায়গায় দেখা গিয়েছিল অরাজকতা এবং বিশৃঙ্খলা। এ যুগকে বলা হয় ‘আইয়ামে জাহেলিয়াত’।
এ থেকে মানুষকে মুক্তি দিতে, তাদের আলোর পথ দেখাতে আল্লাহতায়ালা মুহাম্মদ (সা.)-কে এ পৃথিবীতে পাঠান।
পবিত্র কোরআনে বর্ণিত আছে, ‘মহানবীকে সৃষ্টি না করলে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন পৃথিবী সৃষ্টি করতেন না।’
মুহাম্মদ কে ছিলেন?
মুহাম্মদ ছিলেন ইসলামের প্রতিষ্ঠাতা এবং ইসলামের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ কোরানের ঘোষণাকারী। তিনি তার সমগ্র জীবন কাটিয়েছেন যা এখন সৌদি আরবের দেশ, মক্কায় তার জন্ম প্রায় 570 সিই থেকে শুরু করে 632 সালে মদিনায় তার মৃত্যু পর্যন্ত। ইসলামিক ঐতিহ্য অনুসারে, কোরান, ঈশ্বরের (আল্লাহর) বক্তৃতার আক্ষরিক প্রতিলিপি হিসাবে বোঝা যায়, 610 সালে শুরু হওয়া প্রধান দূত গ্যাব্রিয়েলের মাধ্যমে মুহাম্মদের কাছে পর্যায়ক্রমে অবতীর্ণ হয়েছিল।
মুহাম্মদের কোন পরিবার ছিল?
ইসলামিক ঐতিহ্য অনুসারে, মুহাম্মদের জন্মের আগেই তার বাবা মারা যান এবং তার মা মারা যান যখন তিনি ছোট ছিলেন। সাধারণত তার জীবদ্দশায় তার 14 জন স্ত্রী বা উপপত্নী ছিল বলে কথিত আছে। যদিও বহুবিবাহ তখন আরবি সমাজে প্রচলিত ছিল, তিনি তার প্রথম স্ত্রী খাদিজার সাথে একগামী বিয়ে করেছিলেন, বিয়ের প্রায় 25 বছর পর তার মৃত্যুর আগ পর্যন্ত।
খাদিজার সাথে তার চারটি কন্যা এবং কমপক্ষে দুটি পুত্র ছিল (যারা উভয়েই শিশু অবস্থায় মারা গিয়েছিল) এবং সম্ভবত পরবর্তী স্ত্রী বা উপপত্নী মারিয়াহ দ্বারা আরেকটি পুত্র (যিনিও অল্প বয়সে মারা গিয়েছিলেন)। তার কনিষ্ঠ কন্যা, ফাতিমাহ, মুসলিম সম্প্রদায়ের নেতা হিসাবে মুহাম্মদের উত্তরসূরিদের মধ্যে চতুর্থ, মুহাম্মদের চাচাতো ভাই আলীকে বিয়ে করেছিলেন।
মুহাম্মদের জীবনের ঐতিহ্যবাহী ঘটনাগুলো কি কি?
570 খ্রিস্টাব্দের দিকে মক্কায় জন্মগ্রহণকারী, মুহাম্মদ 595 সালে একজন ধনী বিধবা খাদিজাকে বিয়ে করেছিলেন। 610 সালে তিনি প্রধান দূত গ্যাব্রিয়েলের দর্শন লাভ করেছিলেন। তার প্রকাশ্য প্রচার তার গোত্রের অন্যান্য গোষ্ঠীর বিরোধিতা জাগিয়ে তোলে। তিনি মক্কা থেকে জেরুজালেমে তার অলৌকিক রাতের যাত্রা (ইসরা) করেছিলেন, যেখানে তিনি মুসা, যীশু এবং অন্যান্য নবীদের সাথে প্রার্থনা করেছিলেন।
তার গোত্রের সুরক্ষা প্রত্যাহার করার পর, তিনি 622 সালে মদিনায় পালিয়ে যান এবং 625 এবং 627 সালে মক্কার বাহিনীর দুটি আক্রমণ প্রতিহত করেন। তিনি 628 সালে মক্কার সাথে একটি যুদ্ধবিরতি সম্পন্ন করেন কিন্তু পরে এটি জমা দিতে বাধ্য হন। তিনি মক্কায় বিদায়ী তীর্থযাত্রার নেতৃত্ব দিয়েছিলেন, হজের নজির, 632 সালে, তার মৃত্যুর বছর।
পৃথিবীতে এমন একজন মানুষ এসেছিলেন , যার জন্যই এই পৃথিবী আর মানবগোষ্ঠীর জন্ম।যার জন্ম না হলে এসবের কিছুই সৃষ্টি হতো না ।যাকে লন্ডন মিউজিয়ামে the best man in the world as a man, as Muslim, as a leader, as an emperor ঘোষণা দিয়েছে, তিনি আমাদের শেষ নবী হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) । যার চরিত্র ছিলো ফুলের মতো পবিত্র । যার দয়া আর ক্ষমার কো তুলনা নেই । তার ন্যায়বিচার সকল শাশকের জন্য আদর্শ । যিনি সর্বাধিনায়ক হওয়া সত্ত্বেও অত্যন্ত সাধারণ জীবন যাপন করতেন ।তার প্রাতিষ্ঠানিক জ্ঞান না থাকা শর্তেও ছিলেন সবচেয়ে প্রজ্ঞাময় ।
পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ মানুষ কে সংক্ষেপে বলা মুস্কিল।এ বিষয় নিয়ে হয়ত একটা বিশদ রচনা লেখা যেতে পারে।আমার এ বিষয়ে এতটা জ্ঞান নেই তবু যতটুকু আমার মনে হয় ততটুকু বলছি-কেউবা বড় হতে চেয়েছেন রাজনীতি করে।এরকম অনেক রাজনীতিবীদের নাম উল্লেখ করা যেতে পারে।আবার রাজনীতির ধারালো ভিন্ন হতে পারে।কেউবা গণতণ্ত্রের পথ বেছে নিয়েছেন যেমন আমেরিকার সাবেক প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিংকন,কেউবা স্বৈরতণ্ত্রের পথ বেছে নিয়েছেন যেমন জার্মানির এডলব হিটলার।
কেউবা ধর্ম প্রচার করে নিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন।এ বিষয়ে বলতে গেলে অনেক নবী রাসুলগণের নাম উল্লেখ করা যায়। পৃথিবীতে যত নবী রাসুল এসেছেন তাঁরা সকলেই পরের মঙ্গলের জন্য নিজের জীবন বিলিয়ে দিয়েছেন।এক্ষেত্রে আমাদের প্রিয় নবী ও রাসুল হযরত মোহাম্মদ সা: এর নাম সর্বাগ্ৰে চলে আসে।তিনি যেভাবে কষ্ট করে দ্বীন প্রচার করেছেন অন্য কোন নবী বা রাসুল এতটা কষ্ট করেন নাই তাই তিনি শ্রেষ্ঠ হয়ে আজও সকলের মাঝে রয়েছেন।আবার অন্য ধর্মের লোকেরা এটা মানতে রাজি নয়।তাঁরা তাঁদের নিজেদের নবী রাসুলের নামই বলে থাকবেন নি:সন্দেহে। যাই হোক এ বিষয় নিয়ে বিতর্কে যেতে চাই না।
আবার অনেকে সারা জীবন পরের জন্য উৎসর্ঘ করেছেন।তেমন যুগোস্লাভিয়ার মাদার তেরেসা।
কাজেই শ্রেষ্ঠত্বের মানদন্ড যদি দেয়া হত তবে উত্তরটি লেখা সহজ হত।এ বিষয় নিয়ে বিশদ রচনা দেখলেও তা শেষ হবে না।
(সূত্র: বিভিন্ন ওয়েবসাইট)