পেট ব্যাথা কমানোর ঔষধ , পেট ব্যথা একটি সাধারণ ব্যাধি যা কমবেশি সবারই হয়ে থাকে একটু ভালো-মন্দ খাবার খাওয়ার পর ঠিকঠাকভাবে হজম না হলে পেটে বদহজম হয়। আবার কোন কোন ক্ষেত্রে গ্যাস, কোষ্ঠকাঠিন্য ,ডায়রিয়া, ফুট পয়জনিং গ্যাস্ট্রিক আলসার এপেন্ডি সাইডের ব্যথা পিত্তথলি পাথর প্যানক্রিয়াসের সংক্রমণে এছাড়া নানা কারণে পেটে ব্যথা হতে পারে। তবে পেট ব্যথার মূল কারণ হচ্ছে বদহজম কিংবা গ্যাস।
আজকে আমরা পেট ব্যথা দূর করার কিছু ওষুধ সম্পর্কে আলোচনা করব আশা করি সবাই মনোযোগ সহকারে পড়বেন।
অ্যান্টাসিডস:
অ্যান্টাসিড (ইংরেজি: Antacid) ওষুধ যা পেটের অতিরিক্ত অ্যাসিড উপশম করে এবং সাধারণত অম্বল এবং বদহজম প্রতিরোধে ব্যবহৃত হয়। অ্যান্টাসিডগুলি কোষ্ঠকাঠিন্য বা ডায়রিয়ার চিকিত্সার জন্যও ব্যবহৃত হয়। বর্তমানে বাজারজাত করা অ্যান্টাসিড হল অ্যালুমিনিয়াম, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং সোডিয়াম লবণ।
H2 ব্লকার:
হিস্টামিন H2-রিসেপ্টর বিরোধী, সাধারণত H2 ব্লকার নামে পরিচিত, পাকস্থলীর অ্যাসিডের উৎপাদন কমায় এবং অম্বল এবং বদহজম উপশম করতে পারে।H 2 A 150Mg Tablet হিস্টামিন (H2) রিসেপ্টর ব্লকার নামে পরিচিত একটি ড্রাগ ক্লাসের অন্তর্গত। এই ওষুধটি কার্যকরভাবে পাকস্থলী এবং অন্ত্রের আলসারের চিকিৎসা করে এবং পাকস্থলীতে উৎপন্ন অ্যাসিডের পরিমাণ কমিয়ে কাজ করে।
পেট ব্যাথা কমানোর ঔষধ
প্রোটন পাম্প ইনহিবিটরস (পিপিআই):
পিপিআই শক্তিশালী অ্যাসিড হ্রাসকারী এবং গ্যাস্ট্রোইসোফেজিয়াল রিফ্লাক্স ডিজিজ (জিইআরডি) এবং পেপটিক আলসারের মতো অবস্থার চিকিত্সার জন্য ব্যবহৃত হয়।প্রোটন-পাম্প ইনহিবিটর (ইংরেজি: Proton-pump inhibitor (PPI)) হল এক ধরনের ওষুধ যার প্রধান কাজ হল পাকস্থলীর প্যারিটাল কোষ থেকে অ্যাসিড নিঃসরণ কমানো। এসিড নিঃসরণ কমাতে উপলব্ধ সবচেয়ে শক্তিশালী এবং কার্যকর ওষুধগুলির মধ্যে এগুলি।
অ্যান্টিস্পাসমোডিক ওষুধ:
যেমন হায়োসাইমাইন বা ডাইসাইক্লোমিন এর মতো অ্যান্টিকোলিনার্জিক এই ওষুধগুলি গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল ট্র্যাক্টের পেশীগুলিকে শিথিল করতে সাহায্য করতে পারে, ক্র্যাম্পিং এবং খিঁচুনি কমাতে পারে যা পেটে ব্যথা হতে উপশম করে।
ব্যথানাশক বিভিন্ন ওষুধের অনেক ক্ষতিকারক দিক আছে। তাই খুব বেশি জরুরি না হলে ব্যথানাশক ওষুধ খাওয়া একেবারেই উচিত নয়। এক্ষেত্রে আপনার পেটের ব্যথা নিরাময়ে বেছে নিতে পারেন প্রকৃতিক সমাধাণ। তা হলে তা আপনার শরীরের কোনো ক্ষতি না করে সহজেই দূর করতে পারবেন পেটে ব্যথার সমস্যা।
এ জন্য আজ জেনে নিন পেটব্যথা কমানোর কিছু প্রাকৃতিক সমাধান—
১. আদা বা আদা চা
প্রচীনকাল থেকেই ব্যথা কমাতে এবং বমি ভাব দূর করতে আদাকে প্রকৃতিক ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এতে অ্যান্টিইনফ্লেমেটরি ও প্রদাহ বিরোধী গুণ থাকায় এটি ব্যথা কমাতে সহায়তা করে। তাই প্রকৃতিকভাবে পেটের ব্যথা কমাতে আদা কুঁচি করে অথবা চিবিয়ে খেতে পারেন।
২. কলা ও আপেল
কলা ও আপেলে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে। আর এ কারণে এগুলো পেটের ব্যথা কমাতে সহায়তা করতে পারে। এ ছাড়া এটি বমি ভাব ও ডায়রিয়াতেও উপকারী হিসেবে কাজ করে।
৩. ভাত
ভাবে কোনো মশলা বা লবন থাকে না। তাই এটি পেটের ব্যথা থাকলে তা নিরাময়ে সহায়তা করতে পারে। পেটে ব্যথা হলে ভারি ও বেশি মশলা জাতীয় খাবার পরিহার করে একটু নরম করে ভাত খেতে পারেন। আর চেষ্টা করবেন এর সঙ্গে একটু হালকা ও পাতলা জাতীয় কিছু খেতে।
৪. টোস্ট
টোস্ট বিস্কুট বা ওভারকুক করা রুটি পেট ব্যথা কমাতে সহায়তা করতে পারে। এতে তেমন কোনো তেল থাকে না। আর এ ছাড়া একটু পোড়া রুটি বা টোস্ট বমি ভাব কমাতেও সহায়তা করে।
৫. পুদিনা পাতা
পেটের ব্যথা ও বমি ভাব কমাতে এবং পেট খারাপের জন্য অনেক সহায়ক একটি প্রাকৃতিক সমাধাণ হচ্ছে পুদিনা পাতা। এটির প্রকৃতিক ব্যথানাশক বৈশিষ্ট রয়েছে। তাই পেট ব্যথা কমানোর প্রাকৃতিক সমাধাণ হিসেবে চায়ের সঙ্গে বা চিবিয়ে পুদিনা পাতা খেতে পারেন।
৬. অ্যাপেল সিডার ভিনেগার
অ্যাপেল সিডার ভিনেগারে অ্যাসিড স্টার্চ থাকায় তা হজম করতে সাহায্য করে অন্ত্রের ব্যকটেরিয়াকে সুস্থ রাখে। আর এ কারণে এটি পেটের ব্যথা কমাতে সহায়তা করতে পারে।
এর জন্য এক কাপ পানিতে এক চামুচ অ্যাপল সিডার ভিনেগার ও এক চামুচ মধু মিশিয়ে পান করলে উপকার পাবেন।
৭. হিটিং প্যাড
পেটের ব্যথা কমাতে পেটে হালকা গরম করার মতো হিটিং প্যাড ব্যবহার করতে পারেন। এটি যে কোনো ধররনের ক্রাম্পিং বা ব্যথা নিরাময়ে অনেক উপকারী ভূমিকা পালন করে। পাশাপাশি এটি বমিভাব কমাতেও সহায়তা করে।
এর জন্য আপনি গরম পানির ব্যাগ বা বোতলে হালকা গরম পানি নিয়ে পেটে ধরে রাখলেই অনেকটা স্বস্তি পাবেন। তবে এট খুব বেশি সময় ও অতিরিক্ত পরিমাণে ব্যবহার করবেন না। অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে তা ত্বকের ক্ষতি করতে পারে।
তথ্যসূত্র: হেলথলাইন ডটকম