বাসর রাতে কি কথা বলতে হয় , আপনার স্ত্রী আপনার সারাটাজীবন পাশে থাকবে আর আপনি তার সাথে সারাজীবন মিলন করতে পারবেন।ডাক্তার আপনাকে পরামর্শ দেওয়ার সময় আপনার যে রোগগুলি আছে বা আপনি যেসব ওষুধগুলি গ্রহণ করছেন সে সম্পর্কে আপনাকে ডাক্তারের সাথে অবশ্যই আলোচনা করতে হবে,এই পরামর্শ কে গুরুত্ব দিতে হবে এবং সারাদিন এর ক্লান্তি শেষে আপনি যখন বাসর রাত এ ঢুকবেন তখন হয়তো ক্লান্ত থাকবেন কিন্ত বিশেষ ভাবে বলা আছে যে আপনার এবং আপনার স্ত্রীর এর মিলন টা এমন ভাবে করুন যেনো সেই মিলন টা আপনারা দুই দম্পতি মনে রাখতে সক্ষম হন।
বাসর রাতে কি কথা বলতে হয়
আর আমাদের ইসলামিক ভাবে নিয়ম আছে দুই জনে সহবাসে ঢোকার পর অজু করে দুই রাকাত নফল রাকাত নামাজ পরবেন একসাথেই এবং মোনাজাত এ আল্লাহর কাছে অবশ্যই বলতে হবে যে আপনি আপনার জীবন সঙ্গীকে নিয়ে যেনো সারাটাজীবন সুখে থাকতে পারেন।ডাক্তার আপনাকে পরামর্শ দেওয়ার সময় আপনার যে রোগগুলি আছে বা আপনি যেসব ওষুধগুলি গ্রহণ করছেন সে সম্পর্কে আপনাকে ডাক্তারের সাথে অবশ্যই আলোচনা করতে হবে,এই পরামর্শ কে গুরুত্ব দিতে হবে
“হে আল্লাহ আমার এবং আমার দম্পতিকে যে সন্তান দান করবেন সে যেনো শয়তান মুক্ত হয় এবং একজন মুমিন হয়ে এই পৃথিবীতে ধাবিত হয়”
আর এই নামাজ পরা শেষে আপনার স্ত্রী বিছানায় গিয়ে বসে পরবে আর আপনি তার মুখের কাপড়টি সরিয়ে দিবেন এবং আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করবেন।
সৎভাবে সংসার করার নিয়ত করা
স্ত্রীর ব্যাপারে আল্লাহকে ভয় করা এবং স্ত্রীও স্বামীর ব্যাপারে আল্লাহকে ভয় করা। আল্লাহ তায়ালা বলেন,
وَعَاشِرُوهُنَّ بِالْمَعْرُوفِ فَإِنْ كَرِهْتُمُوهُنَّ فَعَسَى أَنْ تَكْرَهُوا شَيْئًا وَيَجْعَلَ اللَّهُ فِيهِ خَيْرًا كَثِيرًا
আর তোমরা তাদের সাথে সৎভাবে জীবন যাপন করবে। তোমরা যদি তাদেরকে অপছন্দ কর তবে এমন হতে পারে যে, আল্লাহ্ যাতে প্রভূত কল্যাণ রেখেছেন তোমরা তাকেই অপছন্দ করছ। (সূরা নিসা ১৯)
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘যে নারী পাঁচ ওয়াক্ত নামায পড়ে, রমযান মাসে রোযা রাখে, নিজের যৌনাঙ্গ হেফাযতে রাখে, স্বামীর আনুগত্য করে; তাকে বলা হবে: তুমি জান্নাতের যে দরজা ইচ্ছা হয় সে দরজা দিয়ে জান্নাতে প্রবেশ কর।’ (মুসনাদে আহমাদ ১১৬১)
আপনি যদি বাস্রর রাতে শারিরিক মিলন করতে আগ্রহ প্রকাশ করেন তবে সেটা নিয়ে প্রস্তুত নিতে শুরু করেন , তবে আপনার স্ত্রী প্রুস্তুত আসে কিনা সেই বিষয় টা একটু খেয়াল করে নিবেন। কারন অনেক মেয়েরা প্রথম রাতে এই বিষয় নিয়ে অনেক চিন্তিত থাকে বা প্রুস্তুতি থাকে না।
দুই জনের মত যদি এক হয়ে যায় তাহলে কেবল এই বিষয় নিয়ে এগিয়ে যাবেন। অনেক পুরুষ আছে যারা এই বিয়ের প্রথম রাতে এই বিষয় নিয়ে ভয়ে থাকে। কি করব না করবো, কিভাবে শুরু করব, আমি কি পারব, নানান চিন্থা মাথায় উকি দেই।
সহবাস করতে চাইলে দোয়া পড়া
স্বামী যখন স্ত্রী সহবাস করতে চাইবে তখন বলবে:
بِسْمِ اللّهِ اللّهُمَّ جَنِّبْنَا الشَّيْطَانَ وَ جَنِّبِ الشَّيْطَانَ مَا رَزَقْتَنَا
‘আল্লাহর নামে শুরু করছি, হে আল্লাহ! আমাদেরকে তুমি শয়তান থেকে দূরে রাখ এবং আমাদেরকে তুমি যা দান করবে (মিলনের ফলে যে সন্তান দান করবে) তা থেকে শয়তানকে দূরে রাখ।’
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, এরপরে যদি তাদের দু’জনের মাঝে কিছু ফল দেয়া হয় অথবা বাচ্চা পয়দা হয়, তাকে শয়তান কখনো ক্ষতি করতে পারবে না। (বুখারী ৪৭৮৭)
আপনি এই ভয় বা চিন্তা গুলো মাথা থেকে ঝেড়ে পেলে দিবেন। আপনি কোন তাড়াহুড়া করবেন না শুধু শান্ত থাকবেন। তাড়াহুড়া না করে আসতে আসতে দুই জনে দুই জনের কাছাকাছি আসবেন। দুই জন দুই জনকে আসতে আস্থে স্পর্শ করবেন।
তবে এই শারীরিক সম্পর্ক করার আগে একটা কথা মাথায় রাখবেন, আপনাদের সময়ের চেয়ে নিজেদের উপভোগ জিনিসটা বেশি জরুরী। তাই আপনারা কোন তাড়াহুড়া করবেন না। তবে আমার মতে বিয়ের প্রথম রাতে শারীরিক সম্পর্ক না করাই ভাল। কারন ওই দিন উভয় অনেক ক্লান্ত থাকে। তাই শারীরিক সম্পর্ক অনেক অংশে নিজেদের চাহিদা মত হয় না। এটা একান্ত আপনাদের নিজেদের পার্সোনাল বিষয়।
এখন ইসলামিক ভাবে এতটুকু কাজ শেষ এখন আপনাদের শরীর যদি সুস্থ্য থাকে কিংবা ক্লান্ত না থাকে তাহলে আপনারা দুইজন মিলন করতে পারেন।
তবে বিয়ের সময় সারাদিন কাজ কর্ম করার কারণে ক্লান্ত থাকে তাই বেশি ক্লান্ত থাকলে মিলন না করে আপনারা ঘুমিয়ে যেতে পারেন।
আর আপনার স্ত্রী আপনার একজন সারাজীবনের বন্ধু আপনি চাইলে তার সাথে গল্প করে কাটিয়ে দিতে পারেন এতে আপনার স্ত্রী অনেক খুশি হবে।
আর আমাদের সমাজে অনেকজন এ বলে বাসর রাত এ বিড়াল মারতে না পারলে বউ থাকবে না আরো বিভিন্ন প্রকার কথা বা মন্তব্য মাত্র।
স্ত্রীর মাথায় হাত রেখে দোয়া করা
আমর বিন শুয়াইব থেকে তিনি তাঁর পিতা থেকে তিনি তাঁর দাদা থেকে তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেন, তোমাদের কেউ যখন কোন নারীকে বিয়ে করে তখন সে যেন স্ত্রীর মাথার অগ্রভাগ ধরে বলে–
اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ خَيْرَهَا وَخَيْرَ مَا جَبَلْتَهَا عَلَيْهِ ، وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّهَا وَمِنْ شَرِّ مَا جَبَلْتَهَا عَلَيْهِ
(অর্থ- হে আল্লাহ! আমি তাঁর কল্যাণটুকু এবং যে কল্যাণের ওপর তাকে সৃষ্টি করেছেন, অভ্যস্ত করেছেন সেটা প্রার্থনা করি। আর তার অনিষ্ট থেকে ও যে অনিষ্টের ওপর তাকে সৃষ্টি করেছেন, অভ্যস্ত করেছেন তা থেকে আশ্রয় চাই)। (সুনানে আবু দাউদ ২১৬০)
আব্দুল্লাহ বললেন, মিল-মহব্বত আল্লাহর পক্ষ থেকে আসে। দূরত্ব ও ঘৃণা শয়তানের পক্ষ থেকে আসে। আল্লাহ যা হালাল করেছেন শয়তান সেটাকে তোমাদের কাছে অপছন্দনীয় করে তুলতে চায়। যখন সে তোমার কাছে আসবে তখন তাকে তোমার পিছনে দুই রাকাত নামায পড়ার নির্দেশ দিবে। (মুসান্নাফ ইবনু আবি শাইবা ১৭১৫৬)
(সূত্র: বিভিন্ন ওয়েবসাইট)