বাসর রাত মানে কি , বাসর ঘরে প্রবেশের সময় সালাম দিয়ে প্রবেশ করুন। ঘরের দরজা বন্ধ করুন তারপর ঘরের লাইট যদি বন্ধ থাকে সুইচ অন করে দিন। তারপর গায়ের শেরওয়ানি খুলে আলমিরায় রাখুন। আপনার জন্য নির্ধারিত স্হানে গিয়ে বসুন।
নববধূর মুখের ঘোমটা সরিয়ে বলুন শোকর আলহামদুলিল্লাহ। তাকে জিগ্যেস করুন সে কেমন আছে। কিছু খাবে কিনা? কারন বিয়ের অনুষ্ঠানের কারণে অনেক সময় ঠিকমতো খাবার খাওয়ার সময় হয়ে উঠেনা অনেক সময় ঠিকমতো ঘুমানো যায়না তাই ক্লান্তি থাকতে পারে। দুজনেই একসাথে একটু মিষ্টিজাতীয় খাবার খেতে পারেন। তারপর দুজনেই দুরাকাত নামাজ আদায় করে আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করতে পারেন।
বাসর’ শব্দের অর্থঃ
বরকনের বিবাহরাত যাপন।
বরকনের ফুলশয্যার কক্ষ।
ফুলশয্যাঃ ফুল দিয়ে সাজানো শয্যা।
বাসরঃ বিবাহের পর বরবধুর ফুল বিছানো শয্যায় প্রথম একত্রশয়ানরূপ অনুষ্ঠানকে বাসর বলে। ধন্যবাদ।
ইসলামে বাসর রাতের কিছু বিধানের উল্লেখ আছে। যেগুলো একজন ঈমানদার নারী ও একজন মুমিন পুরুষের জন্য তা অত্যন্ত গুরুত্ববহ।
বিধানগুলো সম্পর্কে নিচে আলোচনা করা হলো-
(১) বিয়ের নিয়ত করা:
নারী এবং পুরুষের উভয়েরই উচিত বিয়ের মাধ্যমে নিজেকে হারাম কাজ থেকে বিরত রাখার নিয়ত করা। বিয়ের মাধ্যমে উভয়েই সদকার ছাওয়াব লাভ করবেন।
রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, তোমাদের সকলের স্ত্রীর সঙ্গমপথে রয়েছে ছাদকার সওয়াব। সাহাবায়ে কেরামগন রাসূল (সা.)-কে জিজ্ঞাসা করলেন যে হে রাসূলুল্লাহ জৈবিক চাহিদা মেটানোর জন্য সে কি নেকী লাভ হবে? রাসূল (সা.) সাহাবীদের জবাবে বললেন, ‘যদি কেউ সেই জৈবিক চাহিদা হারাম উপায়ে মেটায় তাহলে কি তার জন্য কোনো গুনাহ লেখা হত না? (অবশ্যই হতো) তেমনি সে চাহিদা হালাল উপায়ে মেটানোয়, তার জন্য নেকী লেখা হয়।’
বাসর রাত মানে কি
বাসর রাতে বউকে কিছু দেওয়ার চিন্তা করছেন এবং সেটি বিষয়ে আপনি কিছু পরামর্শ পেতে চান। নিম্নে কিছু বাসর রাতে বউকে দেওয়ার অনুশাসন সাজানো হলো:
সম্মান ও সহানুভূতি প্রদর্শন করুন: বাসর রাতে আপনি আপনার বউকে সম্মান ও সহানুভূতি প্রদর্শন করতে পারেন। এটি তাঁকে বোঝায় যে আপনি তাঁকে মান্য করেন এবং তাঁর জন্য গুরুত্ব রাখেন।
সুখ এবং স্বাস্থ্যকর পণ্য দিন: বাসর রাতে বউকে সুখ এবং স্বাস্থ্যকর পণ্য দেওয়া যায়, যেমন তাঁর পছন্দের খাবার, চা বা কফি, কিছু পাঠ বই বা একটি স্পার্টন শনাক্তকরণ। এটি তাঁকে আনন্দ এবং সন্তুষ্টি দেবে এবং বাসর রাতে তাঁর স্বাস্থ্য বৃদ্ধি করতে সাহায্য করবে।
(২) একসঙ্গে সালাত আদায় করা:
আবদুল্লাহ ইবন মাসউদ (রা.) কতৃক বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন যে, ‘স্ত্রী যখন স্বামীর কাছে যাবে, তখন স্বামী সামনে দাঁড়িয়ে যাবে এবং স্ত্রী তার পেছনে দাঁড়িয়ে যাবে। অতঃপর তারা একসঙ্গে দুই রাকাত সালাত আদায় করবে এবং মহান আল্লাহর কাছে দোয়া করবে-
‘হে আল্লাহ পাক আপনি আমার জন্য আমার পরিবারে বরকত দান করুন আর আমার ভেতরেও বরকত দিন পরিবারের জন্য। আপনি তাহাদের থেকে আমাকে রিজিক দান করুন আর আমার থেকে উনাদেরও রিজিকের ব্যবস্থা করে দিন। হে আল্লাহ আপনি আমাদের যতদিন একত্রে রাখেন কল্যাণের সঙ্গে একত্রে রাখুন আর বিচ্ছেদ হলে কল্যাণের পথেই বিচ্ছেদ ঘটাবেন।’
নিজের বাসর রাত্রে যা করব বলে ভেবেছি, সেটাই বলি, ভূল হলে ধরিয়ে দিবেন আর পছন্দ হলে আপনিও করতে পারেন:
প্রথমে ঘরে প্রবেশ করে সালাম দিবো;
তারপর তার পাশে বসে তার ঘোমটা উঠাবো;
আগের থেকে পকেটে বা ঘরের কোথাও কিংবা বাসর ঘরে সাজাতে ব্যবহৃত একটি গোলাপেতার হাতে তুলে দেব;
তারপর, তার নাম জিজ্ঞাসা করব (নাম তো অবশ্যই জানা থাকবে, তবুও), তারপর তাকে কী নামে ডাকলে সে খুশি হবে বা প্রিয়জনেরা তাকে কী নামে ডাকে সেটি জানতে চাইব।
(৩) স্ত্রীর মাথায় ডানহাত রেখে দোয়া পড়া:
রাসূলুল্লাহ (সা.) এই বিষয়ে বলেন-
তোমাদের কেউ যখন কোনো নারী (স্ত্রী), ভৃত্য বা বাহন থেকে উপকৃত হয় তবে তার মাথার অগ্রভাগে হাত রেখে বিসমিল্লাহ পড়ে দোয়া কর।
‘হে আল্লাহ পাক আপনার কাছে আমার স্ত্রীর এবং তার স্বভাবের কল্যাণ প্রার্থনা করছি এবং তার ও তার স্বভাবের অকল্যাণ থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি।’
(৪) নিষিদ্ধ কাজ থেকে বিরত থাকা:
আবূ হুরায়রা (রা.) কতৃক বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন যে-
‘যে ব্যক্তি কোনো ঋতুবতী নারীর সঙ্গে কিংবা স্ত্রীর মলদ্বারে সঙ্গম করে অথবা গনকের কাছে যায় এবং তার কথায় বিশ্বাস করে, সে যেন আমার প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছে তা অস্বীকার করলো।’ এর থেকে বোঝা যায় যে, মেয়েদের (স্ত্রীর) ঋতু চলাকালীন সময়ে তাদের সঙ্গে সঙ্গম থেকে দূরে থাকতে হবে।
(৫) ঋতুবতী স্ত্রীর সঙ্গে যা কিছুর অনুমতি রয়েছে:
স্বামীর জন্য ঋতুবতী স্ত্রীর সঙ্গে সঙ্গমপথ ও নিষিদ্ধ পথ ব্যবহার ছাড়া অন্য সব আচরণের অনুমতি রয়েছে। স্ত্রী পবিত্র হবার পর তার সঙ্গে সবকিছুই বৈধ। এসময় তার পাশে থাকা বা তার সঙ্গে সময় কাটানোতে কোনো সমস্যা নাই।
(৬) সঙ্গমের সময় দোয়া পড়া:
স্ত্রীর সঙ্গে সহবাসকালে উল্লেখিত দোয়া পড়া সুন্নাত। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘তোমাদের কেউ যদি স্ত্রীর সহিত সঙ্গমকালে বলে, (আল্লাহ পাকের নামে শুরু করছি, হে আল্লাহ আপনি আমাদেরকে শয়তানের হাত থেকে রক্ষা করুন আর আমাদের যা দান করেন তা থেকে দূরে রাখুন শয়তানকে) তবে সে মিলনের ফলে কোনো সন্তান হলে শয়তান ঐ সন্তানের কোনো ক্ষতি করতে পারবে না।’ এছাড়াও বীর্যপাতের সময় বীর্যপাতের দোয়া পড়া উচিত।
(৭) সঙ্গমের পর অযূ বা গোসল করা:
সহবাসের পর সুন্নাত হলো অযূ বা গোসল করে ঘুমানো। অবশ্যই গোসল করা উত্তম। আম্মার বিন ইয়াসার (রা.) রাসূলের একটি হাদিস বর্ণনা করেন যে, ‘তিন ধরনের ব্যক্তির কাছে ফেরেশতা যায় না আর তারা হলো: কাফির ব্যক্তির লাশ, জাফরান ব্যবহারকারী এবং অপবিত্র শরীর বিশিষ্ট ব্যক্তি, যতক্ষণ না সে অযূ করে।’
প্রেম করে বিয়ে করার পরেও সুখী না হওয়ার কারণ কী?
মূলত এটা পার্সন টু পার্সন ভেরি করে, আপনি হয়তো সুখী হতে পারছেন না কিন্তু অনেকেই অনেক সুখী, অনেক অনেক সুখি।
আর সুখেরও অনেক ডেফিনেশন আছে। আপনি সুখী বলতে কী বোঝাচ্ছেন? আপনি কেন সুখী নন? তার কাছ থেকে আপনার চাওয়া পাওয়া কি? কি পেলে আপনি সুখী হবেন?
আপনাকে আগে এগুলোর উত্তর খুঁজতে হবে।
আশা করি এগুলোর উত্তর পাইলে। আপনি নিজে থেকেই সলভ করতে পারনেন।আসল সমস্যাটা কোথায়!
সমস্যাটা আইডেন্টিফাই করলেই তো আপনি এর সলিউশন পাবেন।
(৮) স্ত্রী সঙ্গে কাটানো সময়ের গোপন তথ্য প্রকাশ না করা:
বিবাহিত ব্যক্তির আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কর্তব্য হলো স্ত্রীর সঙ্গে কাটানো সময়ের গোপন তথ্য কারো কাছে প্রকাশ না করা। এ সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘কিয়ামতের দিন আল্লাহর কাছে ওই ব্যক্তি সবচেয়ে নিকৃষ্ট বলে গণ্য হবে যে তার স্ত্রীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার মতো গোপন বিষয় প্রচার করে।’
(৯) বিবস্ত্র হয়ে সঙ্গম না করা:
সহবাস করার সময় একদম বিবস্ত্র হওয়া উচিত না কারণ এতে সন্তান নির্লজ্জ হয়ে জন্মগ্রহণ করে। সহবাসের সময় অবশ্যই গায়ের ওপর কোনো পাতলা চাদর বা অন্য কোনো বস্ত্র ব্যবহার করা উচিত।
পরিশেষে বলা যায় যে, ইসলামে সকল বিধান মেনে জীবন পরিচালনা করার মধ্যেই মানুষের কল্যাণ নিহিত। সুতরাং, প্রত্যেক নব-বিবাহিত দম্পতির উচিত, বাসর রাতের গুরুত্বপূর্ণ সময়কে আনন্দ-উৎসবের নামে অবহেলায় ও অনর্থক কাজে নষ্ট না করে নামাজ ও দোয়ার মাধ্যমে মহান আল্লাহর নিকট কল্যাণ কামনা করা।
আল্লাহ তায়ালা আমাদের সকলকেই উত্তম আমল করার তওফিক দান করুন। আল্লাহুম্মা আমিন
(সূত্র: বিভিন্ন ওয়েবসাইট)