মেয়েদের রাগ ভাঙ্গানোর উপায়,প্রিয়জন অভিমান করে আছে? অভিমান ভাঙানোর সবচেয়ে সুন্দর উপায় হল প্রিয়জনের পছন্দের উপহার দেওয়া। উপহার পেতে আমরা সকলেই ভালোবাসি। উপহার ছোট বা বড় হয় না। ভালোবেসে দেওয়া সব উপহারই কিন্তু মূল্যবান হয়।
তাই তোমার প্রিয়জনের রাগ ভাঙাতে ফুল ,চকোলেট, কার্ড অথবা সে যেটা সব থেকে বেশি পছন্দ করে এরকম কিছু জিনিস দিতে পারো। যা মুহূর্তের মধ্যে তোমার প্রিয়জনের মুখে হাসি ফোটাবে। আর সঙ্গে সঙ্গেই সব রাগ গলে জল হয়ে যাবে।
মেয়েদের রাগ ভাঙ্গানোর উপায়
রাগ তার ওপরেই করা যায়। যাকে অনেক ভালোবাসা যায়।
বন্ধু বলে ডাকো যারে, সে কি তোমায় ভুলতে পারে। যেমন ছিলাম তোমার পাশে, আজও আছি ভালোবেসে।
তুমি যেতে চাইলে উড়িয়ে দেব। সব করতে পারি তবে জোর খাটাতে না। হ্যাঁ এটাই আমি।
অনেকদিনের কোনো না-পূরণ করা চাহিদা পূরণ করা:-
বললে হয়তো বিশ্বাস হবে না — এটা খুব সত্যি যে, ভালোবাসার মানুষের কাছে অনেক আবদার থাকে , অনেক শখ জমানো থাকে । আর সেগুলি সব শীঘ্রই পূরণ করা সম্ভব হয় না অনেকেরই পক্ষে । যদি কখনো প্রিয় মানুষটির সেরকম কোনো চাওয়া বা জমে থাকা কোনো ইচ্ছে পূরণ করে সারপ্রাইজ দেওয়া যায় ; তাহলে সেই প্রিয়জন তোমার দায়িত্ববোধ সম্পর্কে সন্দেহমুক্ত হবে ।
আর সেটা রাগ ভাঙানোর পাশাপাশি সম্পর্ককে চিরস্থায়ী করবে । হতে পারে পছন্দের কোনো উপহার , হতে পারে তার প্রিয় কোনো পোশাক , কিংবা ঘুরতে যাওয়া, ভালো কোনো খাবার। দেরি না করে ভেবে ফেলো কোনটি করতে যাচ্ছ প্রিয়জনের রাগ ভাঙানোর জন্য ।
বিজ্ঞানীরা গবেষণা করে প্রমাণ করেছেন যে, ক্রুদ্ধ হলে মানুষের ভ্রু বিস্তৃত হয়ে যাওয়া, নাসারন্ধ্র প্রসারিত হওয়া এবং চোয়ালের পুরুত্ব বেড়ে যাওয়ার মত পরিবর্তনগুলো মানুষ উত্তরাধিকারসূত্রে পেয়েছে
রাগ হলে আমাদের শরীরে প্রতিক্রিয়া –
ক্রোধকে বোঝার জন্য আমাদের ভাবতে হবে যে এটি আমাদের মধ্যে কী ধরণের শারীরিক পরিবর্তন ঘটায়, এর ফলে আমাদের আচরণে কী পরিবর্তন আসে, ক্রোধের বশবর্তী হয়ে আমরা কী চিন্তা করি এবং কী চিন্তা করতে পারি না।
তোমার নিজের পাঁচটি দোষ বলতে বলা , যা শুধরে নিতে চাও:-
এটা এক অভিনব সাইকোলজিক্যাল ট্রিটমেন্ট। যে প্রিয়জন খুব কম রাগে। কিন্তু একবার রাগ করলে দীর্ঘক্ষণ থাকে। কিংবা তোমার প্রিয়জন যদি খুব বেশি রাগ করে থাকে তাহলে এই উপায়টি তোমার জন্য।কি করতে হবে এবার বলি। তোমাকে বলতে হবে “আমি নিজেকে একটু শুধরে নিতে চাই ।
তাই আমার এমন পাঁচটি দোষ বলো, যেগুলো শুধরে নেওয়া খুব দরকার।” … এরপর তোমার প্রিয়জন একটা করে তোমার দোষ বলবে আর তুমি কাউন্ট করবে। এক একটা দোষ বলবে আর দেখবে তোমার উপর তার রাগগুলো ঝরে পড়বে আর নিজে তোমার প্রতি বেশি অনুরুক্ত হতে থাকবে। এটা আসলে পার্গেশন পদ্ধতি, যা মনোবিদেরা প্রয়োগ করে থাকেন। বিশ্বাস না হয় পরোখ করেই দেখো এর ম্যাজিকটা ।
যুক্তরাষ্ট্রের উইসকনসিন বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের প্রধান প্রফেসর রায়ান মার্টিন, যিনি ক্রোধ বিষয়ে গবেষণা করেন, বলেন রাগ হলে মানুষের সহানুভূতিশীল স্নায়ুবিক কার্যক্রম শুরু হয়।
“রাগ হলে আপনার হৃৎস্পন্দন বেড়ে যায়, শ্বাস-প্রশ্বাস ঘন হয়ে যায়, আপনি ঘামতে শুরু করবেন এবং পরিপাক ক্রিয়া ধীরগতিতে চলতে শুরু করে।”
মানুষ যখন মনে করে যে তার সাথে অবিচার করা হচ্ছে, তখন শরীরের স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া হিসেবে এধরণের উপসর্গ প্রকাশ পায়।
কোনো পেইন্টিং বা মজার বড় কোনো ছবি এঁকে বা কিনে দেওয়া:-
তোমার প্রিয়জনকে যদি খুব ভালোবাসো , আর সে রাগ করায় তোমার কাজ কর্ম ঘুম উবে যাবার জোগাড়। তোমার হাতে সময় যদি কম থাকে বা তুমি যদি কর্মব্যস্ত হয়ে থাকো, তাহলে তুমি এটা করে দেখতেই পারো। যে কোনো মানুষ এখন বড় পেইন্টিং পছন্দ করেন। তোমার প্রিয়জনকে বড় কোনো ছবি বিশেষ করে তার প্রিয় ফুল, বা স্থান বা সেরকম কিছু এনে উপহার দাও ।
যাদের আঁকার দক্ষতা আছে তারা নিজের হাতে এঁকেই দিতে পারো। সেটা কিন্তু তার চোখের সামনে দেয়ালে বা কোথাও রাখতে হবে । বার বার তোমার উপহারটি চোখে পড়লে তোমার প্রিয়জন তোমার নানা কথা ভাবতে থাকবে আর অভিমানের মোম গলতে শুরু করবেই করবে ।
একই সাথে মস্তিষ্কও ভিন্ন আচরণ করা শুরু করে।
“মানুষ যখন তীব্রভাবে কিছু অনুভব করে, তখন চিন্তা ভাবনার অধিকাংশই ঐ একটি বিষয় কেন্দ্রিক হয়ে থাকে।”
তখন তারা ‘টিকে থাকা’ বা ‘প্রতিশোধ নেয়ার’ বিষয়টিকেই বেশী প্রাধান্য দেয়।
কোনো বিশেষ একটি অবিচার বা অন্যায়ের বিষয়ে চিন্তা করা বা তার বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করার সময় অন্য কোনো বিষয় নিয়ে মানুষের মস্তিষ্ক চিন্তা করতে চায় না – এটিও অভিযোজনেরই অংশ।
কাগজে কলমে চিঠি লিখে দেওয়া:-
এই পদ্ধতি আধুনিক ডিজিটাল যুগের মানুষের জন্য , বিশেষ করে শিক্ষিত যারা, তাদের কাছে খুব কার্যকরী কৌশল। কারণ মুখে যা বলা যায় না, তা অনেক সময় লিখে বোঝানো যায় । আর লেখায় যে গভীরতা থাকে মুখের কথায় তা থাকে না। সেটা নিশ্চয় জানো যে লিখিত কোনো বার্তা না পেলে মৌখিক কথায় কোনো প্রাতিষ্ঠানিক কাজই হয় না।
প্রিয়জনের খুব গাঢ় অভিমান কিংবা তোমার উপর কোনো গুরুতর দোষ আরোপিত হয়েছে — বিষয়টা যদি এমন হয়ে থাকে , তাহলে কাগজ কলম নিয়ে বসে যাও চিঠি লিখতে। আর মন প্রাণ উজাড় করে গভীর ভালোবাসায় ভরা চিঠিটি লিখে দাও তোমার প্রিয়জনকে। দেখবে চোখের জলে একসা হয়ে তোমার কাছে ছুটে আসবে তোমার প্রিয়জন ।
ভারতীয় উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের অন্যতম সুমধুর ও সুবিখ্যাত রাগ হল রাগ-মল্লার বা রাগ-মালহার।কথিত আছে এই রাগ গেয়ে প্রাচীন কালে বৃষ্টি নামানো হত।এটিকে বর্ষাকালের রাগ হিসাবে উল্লেখ করা হয়। কথিত আছে সঙ্গীত সম্রাট তানসেন এই রাগ সৃষ্টি করেন। তাই সঙ্গীতজ্ঞ মিয়াঁ তানসেনের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে শুদ্ধ মল্লারকে “মিয়াঁ কি মালহার” বলে অভিহিত করা হয়।
শুদ্ধ মল্লারের পাশাপাশি মূল স্বরের সামান্য হেরফের করে এর কয়েকটি অন্যরূপ দেখতে পাওয়া যায়। যেমন গৌর মালহার, মেঘ মালহার, রামদাসি মালহার, সুর মালহার, দেশ মালহার, নাত মালহার, ধুলিয়া মালহার, মীরা কি মালহার। রাগ মল্লারের বিভিন্ন রূপকে যুগ অনুসারে কালক্রমে শ্রেণীবদ্ধ করা হয়েছে। ১৫ শতকের পূর্বে: প্রাচীনা, ১৫তম -১৮শ শতাব্দী: মধ্যকালীনা, ১৯ শতক — তারপরে: আর্বচীনা।
হালকাভাবে নয় : গভীর ভাবে Sorry বলা:-
Sorry তো আমরা কথায় কথায় বলে থাকি। শব্দটার বহুল প্রয়োগের ফলে এর গভীর মাহাত্ম্যটাই নষ্ট হয়ে যায় । ফলে প্রিয়জন রাগ করলে শুধু Sorry তে কাজ হয় না । তাই এই Sorry বলার পদ্ধতিটি বদলে নাও । যেমন- ” সেদিনের আচরণের জন্য আমি খুবই মর্মাহত ।
তোমার ভেতরের ভালো মানুষটাকে আমি সম্মান দিতে পারিনি । আমায় ক্ষমা করে দিও । ” এই ধরণের বাংলা শব্দগুলি আসলে “Sorry ” বা “দুঃখিত” শব্দগুলোর থেকে বেশি গভীরভাবে হৃদয়কে নাড়া দিয়ে থাকে । তুমি তোমার মতো ক’রে গভীরভাবে “Sorry ” বলো । কিন্তু শব্দগুলি বদলে দাও । দেখো কিরকম সুফল পাও ।
বউ,,,,একটি অতিপরিচিত শব্দ। কারো কাছে এটি পেইন আবার কারো কাছে এটি সুখ শান্তির শব্দ। আপনি চাইলে এটিকে নিজের মতো করে সুখ শান্তির আবার চাইলে দুঃখের সাগর তৈরি করতে পারেন। সব কষ্ট দুর করার জন্য বউয়ের ভালোবাসাই যেমন যথেষ্ট, তেমনি সব সুখ নিমিষেই পানি করতে বউয়ের জুরি হয় না। বউ যেমন বন্ধু,তেমনি এক প্রকার বউ আছে যেটি থাকলে শত্রুর প্রয়োজন নেই।
উপরের কথা গুলো কেবল মাত্র বিবাহিতরাই বুঝতে পারবে। যারা অবিবাহিত আছেন,তাদের কাছে কথা গুলি শুধু শুধুই মনে হবে। অবিবাহিতদের কাছে বউয়ের সজ্ঞা অন্য। যেটি বিবাহিতরা প্রায়ই ভূলে গেছেন।
লং ড্রাইভ এ যাওয়া:-
ঘুরতে যাওয়া আর লং ড্রাইভে যাওয়া এক নয়। কেননা ঘুরতে যাওয়ার আগে সব ঠিক ঠাক করা থাকে , শুধু যাওয়াটাই বাকি । আর লং ড্রাইভে থাকে অ্যাডভেঞ্চার এর সুযোগ। অর্থাৎ ঘোরার বা ভালোলাগার বিষয়ের খোঁজ করা । কোনোকিছুই ঠিক করা থাকে না সেখানে। আর মজাটাই এখানে। প্রিয়জন খুব রাগ করে আছে ? কথাই বলছে না ? বেশ, তাহলে আয়োজন করো লং ড্রাইভের।
যেতে যেতে গুনগুন করে গেয়েই ফেলো না — “এই পথ যদি না শেষ হয় , তবে কেমন হতো …. ” দেখো পরের লাইনটা নিশ্চয় তোমার প্রিয়জন গেয়েই উঠবে । আর তাতেই হবে কেল্লা ফতে। তাও যদি না হয়। তাহলে চলতে থাকো নতুন কোনো টপিকের খোঁজ পেয়ে যাবে নিশ্চয়।
সেটা আমি এখান থেকে তো বলে দিতে পারব না । আর না হয় ইউটিউবে গানটি চালিয়ে দাও “চলতে চলতে পথ পেয়েছি তোমায়/ বলতে বলতে মন বলে নি তোমায়।”দেখবে মুখে কুলুপ এঁটে রাখা প্রিয়জনও মুখ ফুটে কথা বলতে শুরু করবে।
এবার আসি বউয়ের রাগ করা বিষয়ের উপর। কয়েকটি কারন বলি যেটার কারনে রাগ করতে পারে।
১। স্বামীর কাছ থেকে পর্যাপ্ত সময় না পাওয়া।
২। স্বামীর অভাব অনটন দুর না হওয়া।(সব বউয়ের ক্ষেত্রে না)
৩। শশুর শাশুড়ীর কাজের চাপ।
৪। বাচ্চা কাচ্চার অতিরিক্ত দুষ্টামি।
৬। সময় মতো তার প্রয়োজনীয় জিনিস না পাওয়া।
৭। স্বামীর কাছ থেকে ভালো ব্যবহার না পাওয়া। ইত্যাদি আরো পারসোনাল কারন থাকতে পারে।
রাগ ভাঙ্গাতে যা করতে হবেঃ
বউ রাগ করলে খুব যে সহজে ভাংবে তা নয়। সময় নিতে পারে। সেটি নির্ভর করবে রাগের উপর বা রাগের কারনের উপর।
১। যদি আগে থেকেই জেনে থাকেন যে বউ রাগ করে আছে, তাহলে ছোট একটি গিফ্ট এনে রাগ কমাতে পারেন।
২। যে সময় বউ রাগ করবে। সেই সময়েই তাকে কিছু না বলা।
৩। তার প্রশংসা করা।
৪। রাগ করলে, তাকে শুনিয়ে শুনিয়ে তার পক্ষে কথা বলা।
৫। হুদাই একটা সমস্যার কথা বলা। যেমনঃ আপনার খুব পেট ব্যথা করছে।
যে কাজে বউ রাগ করে সেই কাজ যতসম্ভব এড়িয়ে চলা বা সামনে না করা। ইত্যাদি।
৬। আযগবি একটা খবর দেয়া। যেটা শুনে সে অন্য মনস্ক হয়ে যাবে।( এটা আপনাকে আগ থেকেই রেডি রাখতে হবে। রাগের সময় বলার জন্য। যদিও আপনি অনেক দিন আগে থেকেই জানেন)
প্রিয় স্থানে বেড়াতে যাওয়া:-
এবার আসি বেড়াতে যাওয়া প্রসঙ্গে। প্রিয়জন খুব বেশি রাগ করে আছে ? তোমায় ভুল বুঝে দূরে সরে যাচ্ছে ? বেশ তাহলে সময় বের করে তোমাদের দু’জনের প্রিয় স্থানে বেড়াতে চলে যাও। যে স্থানটি তোমার ভালোবাসার মানুষটির খুব প্রিয় । হয়তো সেখানে তোমাদের ভালোবাসার অনেক স্মৃতি জড়িয়ে আছে।
সেখানে গিয়ে হয়তো একটু নস্টালজিক হয়ে পড়তে পারো দুজনই। হয়তো মাথায় আসতে পারে “ইস! কত বদলে গেছে সে দিনগুলো । কত ভালো ছিলো আগেকার সেই সময় “। মনে হোক তাতে ক্ষতি নেই । এই নস্টালজিয়াকে দু’জন ভাগ করে নাও ।
গল্প শুরু করো । তবে গল্প থেকে যদি ঝগড়া শুরু হয়ে যায় , তাহলে আমাকে দোষ দিও না যেন । তবে তুমি কিন্তু অভিযোগ ক’রো না নতুন করে । তাকে বলতে দাও । দেখবে রাগ গলে জল হয়ে গেছে ।
(সূত্র: বিভিন্ন ওয়েবসাইট)