রিসালাত শব্দের অর্থ কি

রিসালাত শব্দের অর্থ কি , রিসালাতের সংজ্ঞা – ইসলামী শরীয়তের পরিভাষায়, মহান আল্লাহ তায়ালার পবিত্র বাণী মানুষের নিকট পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব ও কর্তব্যকে বলা হয় রিসালাত। যিনি রিসালাতের দায়িত্ব পালন করেন বা পালন করেছিলেন তিনাকে বলা হয় রাসুল। রাসুল শব্দের বহুবচন হচ্ছে রুসুল এবং রুসুলগণ রিসালাতের দায়িত্ব পালন করেছিলেন।



বস্তুত রিসালাতে বিশ্বাস না করলে কেউ মুমিন হতে পারে না। কেননা মানুষের জ্ঞান সীমাবদ্ধ। এ স্বল্প জ্ঞান দ্বারা অনন্ত, অসীম আল্লাহতালা এর পূর্ণ পরিচয় লাভ করা সম্ভব নয়। তাই নবী-রাসূলগণ মানুষের নিকট আল্লাহ তায়ালার পরিচয় তুলে ধরেছেন। আল্লাহর পূর্ণাঙ্গ ক্ষমতা ও গুণাবলির বর্ণনা প্রদান করেছেন। তারাই হওয়া এবং পরকালীন কল্যাণের জন্য আল্লাহ তাআলা প্রদত্ত জীবন বিধান ও দিকনির্দেশনা নিয়ে এসেছেন।


হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে আল্লাহ তাআলা পৃথিবীতে না পাঠালে নবী ও রাসূল সম্পর্কে আমরা কিছুই জানতে পারতাম না। এমনকি আল্লাহতালার সপ্তাহ সিফাতের পরিচয় লাভ করতে পারতাম না।

 

রিসালাত শব্দের অর্থ কি

 

মূলত নবী-রাসূলগণের আনীত বাণী ও বন্যার ফলে মানুষের পক্ষে তা সম্ভব হয়েছে। সুতরাং নবী-রাসূলগণের এসমস্ত সংবাদ বা রিসালাতে বিশ্বাস করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কেননা রিসালাত কি অস্বীকার করলে মহান আল্লাহকে প্রকারান্তরে অস্বীকার করা হয়। অতএব মানবজীবনে রিসালাতে বিশ্বাস করা ঈমানের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হিসেবে নির্ধারিত।


নবুয়তের ধারা
আল্লাহ তায়ালা যুগে যুগে অসংখ্য নবি রাসুল প্রেরণ করেছেন৷ সর্বপ্রথম নবি ছিলেন হযরত আদম (আ.) আর সর্বশেষ নবি ও রাসুল হলেন হযরত মুহাম্মদ (স.) এঁদের মাঝখানে আল্লাহ তায়ালা আরও বহু নবি রাসুল প্রেরণ করেছেন৷ নবি রাসুলদের আগমনের এই ধারাবাহিকতাই নবুয়তের ক্রমধারা বলা হয়৷ দুনিয়াতে আগত সকলে গোষ্ঠী বা জাতির জন্যই আল্লাহ তায়ালা নবি রাসুল বা পথপ্রদর্শনকারী পাঠিয়েছেন৷


وَلِـكُلِّ قَوْمٍ هَادٍ٥
অর্থঃ আর প্রত্যেক সম্প্রদায়ের জন্যই পথপ্রদর্শক রয়েছে৷ (সূরা আর রাদ আয়াত ৭)৷


রিসালাতের উদ্দেশ্য বা নবী রাসুল প্রেরণের উদ্দেশ্য


মানবজাতির হেদায়েতের জন্য এবং ইসলামের পরিপূর্ণ প্রতিষ্ঠার জন্য আল্লাহ তা’আলা যুগে যুগে অনেক নবী রাসূল প্রেরণ করেছেন। নবুয়াত ও রিসালাতের দায়িত্ব গ্রহণ করার মাধ্যমে তাদেরকে বেশ কিছু উদ্দেশ্য ও কাজ সাধন করতে হতো। রিসালাতের কতিপয় কিছু উল্লেখযোগ্য উদ্দেশ্য উল্লেখ করা হলোঃ


রিসালাত মানুষের নিকট আল্লাহ তা’আলা পরিচয় তুলে ধরে। অর্থাৎ আল্লাহ তা’আলা এর জাত-সিফাত, ক্ষমতা ও নিয়ামত ইত্যাদি বিষয় পরিচয়।
সত্য ও সুন্দর জীবনের দিকে আহ্বান করাই হচ্ছে রিসালাতের উদ্দেশ্য।


আল্লাহ তাআলার ইবাদত ও ধর্মীয় নানা বিধি-বিধান এর জ্ঞান দেওয়া রিসালাতের উদ্দেশ্য।
পরকালীন জীবন সম্পর্কে ধারণা প্রদান করাই হচ্ছে রিসালাতের প্রধান উদ্দেশ্য।



রিসলাতে বিশ্বাসের গুরুত্ব?
ইসলামি জীবনদর্শনে রিসালাতে বিশ্বাস স্থাপন করা অপরিহার্য৷ তাওহিদে বিশ্বাসের সাথে সাথে প্রত্যেক মুমনি ও মুসলিমকেই রিসালতে বিশ্বাস করতে হয়৷ ইসলামের মূলবাণী কালিমা তায়্যিবাতে এ বিয়ষটি সুন্দরভাবে বিবৃত হয়েছে৷ এ কালিমার প্রথমাংশ لَٓا اِلٰهَ اِلَّا اللّٰهُ (লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু অর্থ আল্লাহ ব্যতীত কোন মাবুদ নেই)৷ দ্বারা তাওহিদের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে৷ আর সাথে সাথে দ্বিতীয়াংশ
مُحَمَّدٌرَّسُوْلَ اللّٰهِ


(মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ: অর্থ মোহাম্মদ (স.) আল্লাহর রাসুল) দ্বারা রিসালাতের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে৷ সুতরাং তাওহিদে বিশ্বাস স্থাপনের ন্যায় রিসালাতেও বিশ্বাস স্থাপন করতে হবে৷

 



রিসালাত কি?


ইসলামী পরিভাষায়, মহান আল্লাহ তায়ালার পবিত্র বাণী মানুষের নিকট পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব কে রিসালাত বলা হয়। আরজে নিয়ে দায়িত্ব পালন করেন তাকে বলা হয় রাসুল। রাসূল শব্দের বহুবচন হল রুসুল।

 




রিসালাতে বিশ্বাস এর গুরুত্ব


প্রতিটি মুসলমানের ইসলামী জীবন দর্শনে রিসালাতে বিশ্বাস স্থাপন করা অপরিহার্য। তাওহিদা বিশ্বাসের সাথে সাথে প্রত্যেক মুমিন-মুসলিম কেই রিসালাতে বিশ্বাস করতে হয়। ইসলামের মূল বাণী কালিমা তাইয়্যেবাতে এ বিষয়টি সুন্দরভাবে বর্ণনা করা হয়েছে।

 

কালিমার প্রথম অংশ – “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ” যার অর্থ আল্লাহ ছাড়া কোন মাবুদ নাই। বৈশাখ কালিমার এই অংশ দ্বারা তাওহীদের ঘোষণাা দেওয়া হয়েছেে। সুুতরাং তাওহীদের বিশ্বাসের স্থাপনের নেয় রিসালাতে বিশ্বাস স্থাপন করতে হবে।

 



নবি রাসুল প্রেরণের উদ্দেশ্য?


আল্লাহ তায়ালা যুগে যুগে অসংখ্য অগণিত নবি রাসুল প্রেরণ করেছেন৷ তাঁদের উদ্দেশ্যহীনভাবে দুনিয়ায় প্রেরণ করা হয়নি বরং তাঁরা নবুয়ত ও রিসালাতের দায়িত্ব পালন করেছেন নবুয়ত ও রিসালাতের দায়িত্ব পালনের জন্য তাঁদের বেশ কিছু কাজ করতে হতো৷

 

এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কতিপয় কাজ হলো তাঁরা মানুষের নিকট আল্লাহ তায়ালার পরিচয় তুলে ধরতেন৷ অর্থাৎ আল্লাহ তায়ালার জাত সিফাক ক্ষমতা নিয়ামত ইত্যাদি বিষয়ের কথা মানুষের নিটক প্রকাশ করেতেন৷
সত্য ও সুন্দর জীবনের দিকে আহবান জানাতেন৷ আল্লাহ তায়ালার ইবাদাত ও ধর্মীয় নানা বিধি বিধান শিক্ষা দিতেন৷

 


পরকাল সম্পর্কে ধারণা প্রদান করতেন৷



পৃথিবীতে আল্লাহ তায়ালার মনোনীত বান্দা৷ আল্লাহ তায়ালা স্বয়ং তাঁদের নবুয়ত ও রিসালাতের দায়িত্ব পালনের জন্য নির্বাচিত করেছেন৷ আল্লাহ তায়ালা বলেন


اَللّٰهُ يَصْطَفِىْ مِنَ الْمَلٰٓءِكَةِ رُسُلًاوَّمِنَ النَّـاسِ اِنَّ اللّٰهُ سَمِيْعٌ بَصِيْرٌ٥
অর্থঃ আল্লাহ তায়ালাই ফেরশতাদের মধ্যে থেকে এবং মানুষের মধ্যে থেকেও রাসুল মনোনীত করেন
আল্লাহ তো সর্বশ্রোতা সম্যক দ্রষ্টা৷ (সূরা আল হাজ্জ আয়াত ৭৫)



(সূত্র: বিভিন্ন ওয়েবসাইট)