লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ অর্থ , ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার, ওয়া লা-হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ’।
অর্থ : ‘আল্লাহ তাআলা ছাড়া কোনো উপাস্য নেই, আল্লাহ সুমহান, আল্লাহর সাহায্য ছাড়া পাপমুক্তির কোনো পথ নেই, আল্লাহর সাহায্য ছাড়া ইবাদতের কোনো শক্তি নেই’।
ا إِلَهَ إِلا اللَّهُ وَحْدَهُ لا شَرِيكَ لَهُ لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ الْحَمْدُ لِلَّهِ وَسُبْحَانَ اللَّهِ وَلا إِلَهَ إِلا اللَّهُ وَاللَّهُ أَكْبَرُ وَلا حَوْلَ وَلا قُوَّةَ إِلا بِاللَّهِ
উচ্চারণ : লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা-শারিকালাহু-লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হামদু ওয়াহুয়া আলা কুল্লু শাইয়িন কাদির, আলহামদুলিল্লাহি ওয়া সুবহানাল্লাহি ওয়ালা ইলাহা ইল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার, ওয়ালা হাওলা ওয়া লা কুওয়াতা ইল্লাবিল্লাহ। -(বুখারি, ১০৮৯)
ا حَوْلَ وَلا قُوَّةَ إِلا بِاللهِ
(লা হাওলা ওয়ালা কুউওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ) অর্থ আল্লাহ ব্যতীত অনিষ্ট দূর করার এবং কল্যাণ লাভের কোন শক্তি কারো নেই) আজ এই দু’আটি পাঠ করার অনেক ফযীলতের মধ্যে কয়েকটি জানার চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ। যেমন:
.
(১) কোন ফেরেশতাই “লা –হাওলা ওয়ালা কু-ওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ” পাঠ না করে ঊর্ধ্বাকাশের দিকে গমন করেন না।(জামে’ আত-তিরমিজি,৩৫৮২ এর সনদ সহীহ মাকতূ)
দোআঃ লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ। অর্থঃ আল্লাহ ব্যতীত অনিষ্ট দূর করার এবং কল্যাণ লাভের কোন শক্তি কারো নেই। লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ পাঠ করার ফযীলতঃ কাইস ইবনু সাদ ইবনু উবাদাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তার বাবা তাকে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সেবার জন্য তার কাছে অর্পণ করেন।
তিনি বলেন, আমি নামাজরত থাকা অবস্থায় নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার কাছ দিয়ে গমন করলেন। তিনি নিজের পা দিয়ে আমাকে আঘাত ‘ইশারা’ করে বললেনঃ আমি তোমাকে কি জান্নাতের দরজাগুলোর একটি দরজা সম্পর্কে জানাব না? আমি বললাম, হ্যাঁ। তিনি বললেনঃ লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ আল্লাহ ব্যতীত অনিষ্ট দূর করার এবং কল্যাণ লাভের কোন শক্তি কারো নেই। (সূনান আত তিরমিজী হাদিস নম্বরঃ ৩৫৮১ হাদিসের মানঃ সহিহ)।
লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ আয়াত (আরবি)
لا حول ولا قوة إلا بالله العلي العظيم
লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ বাংলা উচ্চারণ
লা হাওলা অলা ক্বুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহিল আলিয়্যিল আযীম
একে জান্নাতের ধনভান্ডার বলা হয়েছে (বুখারী হা/৪২০৫; মিশকাত হা/২৩০৩)।
.
(৩) জান্নাতের দরজা বলা হয়েছে (তিরমিযী হা/৩৫৮১; ছহীহাহ হা/১৭৪৬)।
.
(৪) আরশের খনি হতে নেয়া হয়েছে বলা হয়েছে(সহীহ ইবনু হিব্বান হা. ২০৪১; সিলসিলা সহীহা,৫৩)
.
(৫) এটি পাঠ করে দো‘আ করলে দো‘আ কবুল হয় (সহীহ বুখারী হা/১১৫৪; মিশকাত হা/১২১৩)।
লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ অর্থ
আল্লাহ ছাড়া কোনো ভরসা নেই; কোনো ক্ষমতা বা শক্তি নেই, আল্লাহ সুমহান।
বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময় পাঠ করলে নিজেকে হেফাযত করা যায় এবং শয়তান দূরে সরে যায় (তিরমিযী হা/৩৪৩৭;সহীহুত তারগীব হা/১৬০৫)।
.
(৭) এটি নিয়মিত পাঠ করলে সমুদ্রের ফেনারাশি সমান গুনাহ হ’লেও ক্ষমা করে দেওয়া হয় (তিরমিযী হা/৩৪৬০;সহীহুত তারগীব হা/১৫৬৯)।
.
(৮) এটি পাঠ করলে জান্নাতে একটি করে বৃক্ষ রোপণ করা হয় (সহীহুত তারগীব হা/১৫৮৩)।
.
(৯) আযানের ফজিলতে হায়ইআ আলাস্ সালাহ, হায়ইআ আলাল ফালাহ’ দু’টির জবাবে – ‘লা হাওলা অলা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ বলতে বলা হয়েছে(সহীহ মুসলিম ৩৮৫ বুলুগুল মারাম,১৯)
.
(১০) রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বিখ্যাত সাহাবী আবূ যার (রাঃ)-কে সাতটি কাজ করতে আদেশ করেছেন তার মধ্যে একটি হল অধিক হারে – (লা- হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ) বলা (আহমাদ- ৫/১৫৯; সহীহ ইবনু হিব্বান হা. ২০৪১; তাবারানীর আল-মু’জামুস সগীর ৫ পৃষ্ঠা সিলসিলা সহীহা,৫৩)
লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ ইংরেজি
La hawla wala quwwata illa billahil aliyyil azim.
ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) আবু মূসা আল আশআর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বলেছেনঃ আমি কি তোমাকে এমন একটি কালিমাহ সম্পর্কে জানিয়ে দিব না যা জান্নাতের গুপ্তধন? কিংবা তিনি বলেছেন, জান্নাতের গুপ্ত ধনসমূহের মধ্য হতে একটি গুপ্তধনের কথা কি বলব না? তখন আমি বললাম, হ্যাঁ।
তারপর তিনি বললেন, লা- হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ। অর্থাৎ আল্লাহর সহযোগিতা ছাড়া কারো ভাল কর্ম করার এবং খারাপ কর্ম থেকে ফিরে আসার সামর্থ্য নেই। (সহীহ মুসলিম হাদিস নম্বরঃ ৬৭৬১ হাদিসের মানঃ সহিহ)।