সপ্তাহে কতবার সহবাস করা উচিত,অভিজ্ঞতাদের পরামর্শ অনুযায়ী

সপ্তাহে কতবার সহবাস করা উচিত , সহবাস একটি যৌন সুখের নাম। পৃথিবীতে যতো সুখ আছে তন্মধ্যে এটি অদ্বিতীয়। স্বামী-স্ত্রীর যৌন মিলনের মাধ্যমে কাঙ্খিত এ সুখটি উপলব্ধি হয়।




সহবাস নিয়ে আমাদের অনেকের মধ্যে অনেক রকমের নেতিবাচক কথা রয়েছে। আজ আমরা জানবো, সহবাসের ৭টি উপকারিতা এবং সহবাসের সঠিক নিয়ম। তো আর কথা নয় – সরাসরি যাচ্ছি মূল আলোচনায়।




বিবাহের প্রথম প্রথম দু’ তিন মাস নরমালি কমপক্ষে একদিন পরপর সহবাস করা উচিত। কেউ কেউ তো প্রতিদিন করে থাকে। এটা উত্তম, তবে নিজের স্বাস্থ্যের প্রতি লক্ষ্য রেখে। তবে ধীরে ধীরে এই অনুপাত কমে আসবে। এমনিতেই আসবে। আপনি টের ও পাবেন না।

 

সংসারের নানা ঝামেলা – টানাপোড়ন, আপসের ছোটবড় কথা কাটাকাটি, মান-অভিমান এর কারণ। বিবাহের প্রথমে যেই উথালপাতাল প্রেম-আবেগ বা শারিরিক টান যাই বলেন, সেটা একপর্যায়ে স্তিমিত হয়। স্থির হয়।

 


জীবন তখন একটা স্বাভাবিক ছন্দে ফিরে আসে। নদীর শান্ত ভাটার মত থাকে মনের অবস্থা। এমন অবস্থায় পৌঁছতে কমপক্ষে মাস আড়াই-তিনেক লাগে। তারপর একটা বন্ধুত্বসুলভ প্রেম থাকে, মায়া থাকে, কাছে থাকবার আকুল ইচ্ছা থাকে। জীবনের এমন পিরিয়ডে সাপ্তাহে অন্তত দুইবার সহবাস করা উচিত।

 

এটা মেন্টালি ও ফিজিকালি আপনারা দুজন কতটা কানেক্টেড আছেন তার প্রমাণ। নয়ত আপনার জীবনসংগীনি মনে করবে, তিনি আপনার কাছে ‘পানসে’ ‘পুরনো’ হয়ে গেছেন। সাপ্তাহে অন্তত দুইবার সহবাসে ফোরপ্লের মাত্রা ও পরিমাণ আগের মত রাখাও গুরুত্বপূর্ণ। আর প্রতিরাতে সহবাস না করলেও চুমু খেতে ভুলবেন না। ?




ইসলাম ধর্মে মানব জীবনের সকল বিধি-বিধান দেওয়া রয়েছে। স্বামী-স্ত্রীর যৌন মিলনের জন্যে রয়েছে সঠিক নিয়ম। কিভাবে সহবাস করতে হবে, কিভাবে সহবাস করা হারাম, কখন সহবাস করা নিষিদ্ধ ইত্যাদি নিয়ম বা পদ্ধতিগুলো কুরআন এবং হাদিসে বর্ণনা করা হয়েছে।



আর সহবাস কখন কিভাবে করলে এর থেকে উপকার পাওয়া যাবে এসব নিয়ে আলোচনাও করা হয়েছে বিভিন্নভাবে।



বিশেষজ্ঞদের মতে, ভোর বেলায় সহবাসের ফলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি ছাড়াও অনেক উপকার পাওয়া যায়। বিভিন্ন গবেষণা থেকেও এটা প্রতীয়মান হয়েছে।

 


সপ্তাহে কতবার সহবাস করা উচিত



রাত বা অন্য সময়ের চেয়ে ভোরে মিলনের ফলে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই কমে যায় বলে জানান বিশেষজ্ঞরা। এরই সাথে সাথে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও অনেক বেড়ে যায়।



এসময় নারী এবং পুরুষ উভয়েরই যৌন হরমোনগুলোর মাত্রা থাকে তুঙ্গে। তবে এসময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকতে হয়। তাই ঘুমাতে যাওয়ার সময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন হওয়া খুবই জরুরি।



ভোরবেলার যৌন মিলন শরীরে অ্যান্টিবডি গঠন করতে সাহায্য করে, শরীরের রক্ত সঞ্চালন সঠিক থাকে। শরীরে ক্লান্তি আসে না।



এছাড়াও সকালের মিলনের ফলে আর্থ্রাইটিস ও মাইগ্রেনের মত রোগ কম হয়। তাই, প্রতিটি স্বামী-স্ত্রীর উচিত মিলনের সময় হিসেবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ফজরের আগের সময়টাকে বেছে নেওয়া উচিত।

 


বিজ্ঞান বলছে


●যাঁদের বয়স ২০ থেকে ৩০ বছর, তাঁরা সপ্তাহে ৩ বার সহবাস করতে পারেন।
●যাঁদের বয়স ৩০-৪০ বছর তাঁরা সপ্তাহে ২ বার সহবাস করতে পারেন।
●যাঁদের বয়স ৪০-৫০ বছর তাঁরা সপ্তাহে ১ বার করে সহবাস করতে পারেন।
●যাঁদের বয়স ৫০-৬০ বছর, তাঁরা ১৫ দিনে কিংবা ৩০ দিনে ১ বার সহবাস করতে পারেন।




নিয়মিত যৌন মিলনের উপকারিতা:




১. যে নারীরা প্রায়ই যৌন মিলন করেন তাদের স্মৃতিশক্তি প্রখর হয়। আর্কাইভ অফ সেক্সুয়াল বিহেভিওর এর এক সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, নারীরা যত বেশি যৌন মিলন করেন ততই তারা কোনো শব্দ মুখস্থ করার ক্ষেত্রে পারদর্শী হন। তাদের স্মৃতিশক্তি প্রখর হয়।

 



২. নিয়মিত যৌন মিলন রক্তচাপ ঠিক রাখার জন্য ভালো। সাথে সাথে এটি দুশ্চিন্তা রোধ করতেও সমান কার্যকরী।

 


৩. ভালো যৌন স্বাস্থ্য মানে উন্নত শারীরিক স্বাস্থ্য। সপ্তাহে একবার কিংবা দুবার নিয়মিত যৌন মিলনে শরীরে IGA অ্যান্টিবডির স্তর বৃদ্ধি করে, যা আপনার বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়।

 


৪. ৩০ মিনিটের শারীরিক মিলনে ৮৫ ক্যালরি পর্যন্ত দহন করতে পারে। এরকম ৪২ বার মিলনে মোট ৩৫৭০ ক্যালরি দহন করতে সমর্থ, যা ১ পাউন্ড ওজন কমানোর জন্য যথেষ্ট। সুতরাং ওজন কমানোর জন্য যৌন মিলন খুবই উপকারী।

 


৫. নিয়মিত যৌন মিলন আপনার আয়ু বাড়ায়। এর মাধ্যমে শরীরের সব অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ এবং সব তন্ত্র খুব ভালো ভাবে কাজ করে। কারণ শারীরিক কার্যকলাপ শরীরের বিভিন্ন কোষের মধ্যে অক্সিজেনের মাত্রা বৃদ্ধি করে বিভিন্ন অঙ্গগুলিকে সচল রাখতে সাহায্য করে।

 



৬. শারীরিক মিলনের ফলে মাথা এবং হাড়ের জয়েন্টের ব্যাথার ক্ষেত্রে আরাম পাওয়া যায়। অর্গাজমের আগে অক্সিটোসিন হরমোনের স্তর সামান্য থেকে পাঁচ গুন বেড়ে যাওয়ায় এন্ড্রোফিন হরমোন নিঃসৃত হয় ফলে মাথা ব্যথা, মাইগ্রেন আর আর্থাইটিস এর ব্যথা থেকে আরাম পাওয়া যায়।

 


৭. মানসিক শান্তি আনার ক্ষেত্রে নিয়মিত শারীরিক মিলনের অভ্যাস সবচেয়ে ভালো। কারণ নিয়মিত শারীরিক মিলনের ফলে মন উত্ফুল্ল থাকে ফলে মানসিক অশান্তি কম হয়।

 



 কোন বয়সে কতবার!

 


যৌনমিলনের হার পুরুষ ও নারীর বয়সের উপর নির্ভর করে। বয়সের সঙ্গে নারী ও পুরুষের যৌনজীবনের সরাসরি সম্পর্ক আছে। বয়স যত বাড়ে  যৌনমিলনের হার তত কমে। সদ‍্যবিবাহিত দম্পতিরা প্রথমদিকে দিনে ২ থেকে ৩ বার সহবাস করলেও, কয়েক মাসের মধ্যে যৌনমিলনের হার  দিনে এক বার অথবা দু’দিনে এক বারে থিতু হয়।

 


গবেষণায় দেখা গেছে,


●১৮ থেকে ২৯ বছর বয়সী দম্পতিরা বছরে গড়ে ১১২ বার শারীরিক মিলনে লিপ্ত হন। অর্থাৎ এক সপ্তাহে দু’বারের একটু বেশি।
●৩০ থেকে ৩৯ বছর বয়সী দম্পতিরা বছরে গড়ে ৮৬ বার যৌনমিলন করেন। অর্থাৎ এক মাসে ৭ বার।
● ৫০ থেকে ৫৯ বছর বয়সী দম্পতিরা বছরে ৬৯ বার শারীরিক মিলনে লিপ্ত হন। এঁদের যৌনমিলনের হার গড়ে মাসে ৬ বারের একটু কম।



পরিশেষে বলা যায়, অন্তিম সুখের সন্ধান যদি কেউ করে তবে সে যেন তার স্ত্রীর মাঝে সুখ খুঁজে। যৌন মিলন হলো সব দিক থেকেই একটি উত্তম উপায় মানসিক প্রশান্তির ক্ষেত্রে।

 


তাই নিয়ম অনুযায়ী সপ্তাহে দুই-চার বার ভোরবেলা মিলন করা হলে শরীর মন সব ঠিক থাকে। মনের মধ্যে খারাপ চিন্তা আসে না এবং উপরে বর্ণিত উপকারিতাগুলো কাজে দেয়।


(সূত্র: বিভিন্ন ওয়েবসাইট)