সূরাতুল কদর বাংলা আরবি উচ্চারণ ও অর্থসহ ফজিলত

সূরাতুল কদর বাংলা আরবি উচ্চারণ ও অর্থসহ ফজিলত
সূরাতুল কদর বাংলা আরবি উচ্চারণ ও অর্থসহ ফজিলত

সূরা কদর বাংলা তরজমা , লাইলাতুল কদর , সূরা ক্বদর , এগুলো সহ সূরাতুল কদর বাংলা আরবি উচ্চারণ ও অর্থসহ ফজিলত আমরা আজকে বিস্তারিত আলোচনা করব

নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে থেকে হেরা গুহায় যে রাতে আল্লাহ ফেরেশ্তা ও অহী নিয়ে এসেছিলেন সেটি ছিল রামাদান মাসের একটি রাত । এই রাতকে এখানে কদরের রাত বলা হয়েছে। সূরা দেখানে এটাকে মুবারক রাত বলা হয়েছে ।

 

সূরাতুল কদর বাংলা আরবি উচ্চারণ ও অর্থসহ ফজিলত
সূরাতুল কদর বাংলা আরবি উচ্চারণ ও অর্থসহ ফজিলত

 

বলা হয়েছে, “অবশ্যি আমরা একে একটি বরকতপূর্ণ রাতে নাযিল করেছি।” [সূরা আদ-দোখান: ৩] এ আয়াত থেকে পরিষ্কার জানা যায় যে, কুরআন পাক লাইলাতুল-কদরে অবতীর্ণ হয়েছে। এর এক অর্থ এই যে, সমগ্র কুরআন লওহে মাহফুয থেকে লাইলাতুল-কদরে অবতীর্ণ করা হয়েছে, অতঃপর জিবরাঈল একে ধীরে ধীরে তেইশ বছর ধরে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কাছে পৌছাতে থাকেন।

দ্বিতীয় অর্থ এই যে, এ রাতে কয়েকটি আয়াত অবতরণের মাধ্যমে কুরআন অবতরণের ধারাবাহিকতা সূচনা হয়ে যায়।
সংগৃহীত

আরও পড়ুন     জানাজার নামাজের নিয়ম দোয়া আরবিতে উচ্চারণ ও অর্থসহ ফজিলত

সুরা কাফিরুন বাংলা আরবি উচ্চারণ ও অর্থসহ ফজিলত

 রোজার নিয়ত বাংলা উচ্চারণ ও আরবি ও অর্থসহ ফজিলত

 

~নবী করিম (সা.) বলেছেন, মাহে রমজানের শেষ দশকের বেজোড় রাতগুলোতে তোমরা শব-ই-কদর সন্ধান করো। (সহিহ বোখারি)

সূরা সম্পর্কিত তথ্যঃ

 

এতে প্রত্যেক মানুষের বয়স, মৃত্যু, রিফিক, বৃষ্টি ইত্যাদির পরিমাণ নির্দিষ্ট ফেরেশতাগণকে লিখে দেয়া হয়। [সা‘দী] পবিত্র কুরআনের অন্যত্র বলা হয়েছে, فِيْهَا يُفْرَقُ كُلُّ امْرٍحَىِىيْمٍ [সূরা আদ-দোখান: ৪]

সূরাতুল কদর বাংলা আরবি উচ্চারণ ও অর্থসহ ফজিলত
সূরাতুল কদর বাংলা আরবি উচ্চারণ ও অর্থসহ ফজিলত

এ আয়াতে পরিষ্কার বলা হয়েছে যে, পবিত্র রাত্ৰে তাকদীর সংক্রান্ত সব ফয়সালা লিপিবদ্ধ করা হয়। এই রাত্ৰিতে তাকদীর সংক্রান্ত বিষয়াদি নিম্পন্ন হওয়ার অর্থ এ বছর যেসব বিষয় প্রয়োগ করা হবে, সেগুলো লওহে মাহফুয থেকে নকল করে ফেরেশতাগণের কাছে সোপর্দ করা। নতুবা আসল বিধি-লিপি আদিকালেই লিপিবদ্ধ হয়ে গেছে। [ইমাম নববী: শারহু সহীহ মুসলিম, ৮/৫৭]

 

 

সূরাতুল কদর আরবি

 

(১) إِنَّا أَنْزَلْنَاهُ فِي لَيْلَةِ الْقَدْرِ

(২) وَمَا أَدْرَاكَ مَا لَيْلَةُ الْقَدْرِ

(৩) لَيْلَةُ الْقَدْرِ خَيْرٌ مِنْ أَلْفِ شَهْرٍ

(৪) تَنَزَّلُ الْمَلَائِكَةُ وَالرُّوحُ فِيهَا بِإِذْنِ رَبِّهِمْ مِنْ كُلِّ أَمْرٍ

(৫) سَلَامٌ هِيَ حَتَّى مَطْلَعِ الْفَجْرِ

সূরা কদর বাংলায় উচ্চারণ:

 

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম

(১) ইন্না য় আন্যাল্না-হু ফী লাইলাতিল্ ক্বদ্র্।

(২) অমা য় আদ্র-কা মা-লাইলাতুল্ ক্বদ্র্।

(৩) লাইলাতুল্ ক্বদ্রি খাইরুম্ মিন্ আল্ফি শাহ্র্।

(৪) তানায্যালুল্ মালা-য়িকাতু র্অরূহু ফীহা- বিইয্নি রব্বিহিম্ মিন্ কুল্লি আম্র্।
(৫) সালা-মুন্ হিয়া হাত্তা- মাতলাই’ল্ ফাজর্।

 

সূরা কদর এর বাংলা অর্থ:

 

পরম করুণাময় অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে

(১) নিশ্চয়ই আমি এটি নাযিল করেছি ‘লাইলাতুল ক্বাদরের রাতে ।’

(২) তোমাকে কিসে জানাবে ‘লাইলাতুল ক্বাদর’ কী?

(৩) ‘লাইলাতুল কদর’ হাজার মাস অপেক্ষা উত্তম।

(৪) সে রাতেই ফেরেশ তারা ও রূহ ( জিবরাইল ) তাদের রবের অনুমতি ক্রমে সকল সিদ্ধান্ত গুলো নিয়ে অবতরণ করে।

(৫) শান্তিময় সেই রাত, ফজরের সূচনা পর্যন্ত।

 

সূরা কদর বাংলা আরবি উচ্চারণ ও অর্থসহ ফজিলত

 

‘আয়িশাহ্ (রাযি.) হতে বর্ণিত। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা রমাযানের শেষ দশকের বেজোড় রাতে লাইলাতুল কদরের অনুসন্ধান কর। (২০১৯, ২০২০, মুসলিম ১৩/৪০, হাঃ ১১৬৯, আহমাদ ২৪৩৪৬)

সূরাতুল কদর বাংলা আরবি উচ্চারণ ও অর্থসহ ফজিলত
সূরাতুল কদর বাংলা আরবি উচ্চারণ ও অর্থসহ ফজিলত

বিভিন্ন সহীহ হাদীসে ২১, ২৩, ২৫, ২৭ ও ২৯ তারিখে লাইলাতুল ক্বদর অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা উল্লেখিত আছে। হাদীসে এ কথাও উল্লেখিত আছে, যে কোন একটি নির্দিষ্ট বিজোড় রাত্রিতেই তা হয় না।

(অর্থাৎ কোন বছর ২৫ তারিখে হল, আবার কোন বছর ২১ তারিখে হল এভাবে। আমাদের দেশে সরকারী আর বেসরকারীভাবে জাঁকজমকের সঙ্গে ২৭ তারিখের রাত্রিকে লাইলাতুল ক্বদরের রাত হিসেবে পালন করা হয়। এভাবে মাত্র একটি রাত্রিকে লাইলাতুল ক্বদর সাব্যস্ত করার কোনই হাদীস নাই। লাইলাতুল ক্বদরের সওয়াব পেতে চাইলে ৫টি বিজোড় রাত্রেই তালাশ করতে হবে।

বর্তমানে রাত্রি জাগরণের জন্য মসজিদে সকলে সমবেত হয়ে বিভিন্ন ওয়াজ মাহফিলের যে ব্যবস্থা করা হয়ে থাকে সেটিও নবাবিষ্কৃত কাজ। কারণ আল্লাহর হজরত মুহাম্মাদ সাল্লাহু আলাহি ওয়াসাল্লাম তাঁর সময়ে সাহাবীদের নিয়ে মসজিদে জাগরিত হয়ে বর্তমানে প্রচলিত পদ্ধতিতে ইবাদাত না করে নিজ নিজ পরিবারকে জাগিয়ে কিয়ামুল লাইল পালন করতেন ।

হাজার মাসের চেয়েও দামী যে রাত..!!

•|হাদিস শরিফে বর্ণিত আছে, যে ব্যক্তি ঈমানের সঙ্গে ও সওয়াব হাসিলের উদ্দেশ্যে কদরের রাতে দণ্ডায়মান হয়, তার অতীতের সব গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে। (সহিহ বোখারি ও মুসলিম)

 

—এ মহিমান্বিত রাত সম্পর্কে পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তায়ালা আল- ক্বদর নামে একটি সূরা নাযিল করেছেন:

 

১.নিঃসন্দেহ আমি এটি অবতীর্ণ করেছি মহিমান্বিত রজনীতে।

২.আর শবে-কদর (মহিমান্বিত রাত) সমন্ধে আপনি জানেন কি?

৩.শবে-কদর (মহিমান্বিত রাত) হল এক হাজার মাস অপেক্ষা উত্তম।

৪.ঐ রাতে ফিরিশতাগণ ও রুহ অবতীর্ণ হয় প্রত্যেক কাজে তাদের পালনকর্তার নির্দেশক্রমে

[সূরা আল-ক্বদর ]

★রমজানের শেষ দশকের ভিতরে কোনো একটি রাত শবে কদর। ইনশাআল্লাহ আমরা চেষ্টা করবো এ মহিমান্বিত রাতটিকে পাওয়ার!

—রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, তোমরা রমজানের শেষ ১০ রাতে শব-ই-কদর সন্ধান করো। (সহিহ বোখারি ও মুসলিম)

~মহিমান্বিত এ রজনী স্থানান্তরশীল। অর্থাৎ প্রতি বৎসর একই তারিখে বা একই রজনীতে তা হয় না এবং শুধুমাত্র ২৭ তারিখেই এ রাতটি আসবে তা নির্ধারিত নয়। আল্লাহর হিকমত ও তার ইচ্ছায় কোনো কোণ বছর তা ২৫ তারিখে , কোনো বছর ২৩ তারিখে , কোনো বছর ২১ তারিখে , আবার কোনো কোন বছর ২৯ তারিখে ও হয়ে থাকে ।

শবে কদরের নামাজ লাইলাতুল কদরে বিশেষ কোনো নামাজের পদ্ধতি নেই।

লাইলাতুল কদরের রাতে নামাজ দুই রাকাত করে যত সুন্দর করে পড়া যায়, যত মনোযোগ সহকারে পড়া যায় ততই ভালো। আল্লাহ সুবহানাআলাতায়ালার প্রতি যত খুশু খুজুসহকারে নামাজ আদায় করা যায়, ততই ভালো।

দুই রাকাত, দুই রাকাত করে আপনি যত খুশি পড়তে পারবেন। এছাড়া বিশেষ কোনো সূরা পড়তে হবে-এটা লোকমুখে প্রচলিত আছে, তবে এর কোনো ভিত্তি নেই। এই রাতে কোরআন তেলাওয়াত করবেন। বেশি বেশি দোয়া পড়বেন। ইস্তেগফার পড়বেন। তওবা করবেন। এই রাতে ভালো কাজ করবেন আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য। এই রাতে যে দোয়া বেশি পড়বেন

 

শবে কদরের রাতে যত বেশি পারেন নামাজ, কোরআন তেলাওয়াত, জিকির ও দোয়া করতে হবে। যেন আল্লাহ্‌ তা’য়ালা আমাদের আগের গুনাহ মাফ করে দেন এবং রহমত ও বরকত দান করেন। এ রাত নামাজসহ বিভিন্ন ইবাদতের মধ্যদিয়ে কাঁটিয়ে দিন।