স্নাতক মানে কি পাস , যে ছাত্র শিক্ষা শেষে ব্রহ্মচর্য সমাপনসূচক স্নান করেছে; বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্র্যাজুয়েট; স্নানকারী বা স্নানার্থী লোক। আক্ষরিকভাবে “স্নাতক” শব্দটির অর্থ হল, (জ্ঞানের) জলে স্নান বা অবগাহন করা।
উচ্চশিক্ষার তিন বা চার বছর মেয়াদী একটি শিক্ষাক্রম সফলভাবে সম্পন্ন করার পর সাধারণত বিশ্ববিদ্যালয় বা উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষার্থীকে অর্জ্জিত শিক্ষার যোগ্যতা নির্দেশক যে উপাধি বা ডিগ্রী প্রদান করা হয় সেটিই হল “স্নাতক” বা “স্নাতক সম্মান”, যাকে ইংরেজিতে ব্যাচেলর্স ডিগ্রি (Bachelor’s Degree) বলা হয়ে থাকে।
এই ডিগ্রিটি Honours/ Hons. Degree নামেও প্রচলিত। এই ডিগ্রী অর্জনকারী শিক্ষার্থীকে বাংলায় স্নাতক এবং ইংরেজিতে গ্র্যাজুয়েট (Graduate) বলা হয়।
স্নাতক মানে কি পাস
স্নাতক মানে অনার্স (সম্মান) পাস। অর্থাৎ যে কোন একটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স (সম্মান) পাশ করলে তাকে স্নাতক বলা হয়। স্নাতকের ইংরেজি শব্দ গ্রাজুয়েট। অন্যদিকে যিনি মাস্টার্স পাশ করেন তাকে বলা হয় স্নাতকোত্তর পাস। স্নাতকোত্তর এর ইংরেজি শব্দ পোস্ট গ্রাজুয়েট।
প্রাইমারি, মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক পাস করার পর যেকোনো একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক ডিগ্রি নেওয়ার জন্য ভর্তি হতে হয়। বাংলাদেশে সাধারণত চার বছর মেয়াদি অনার্স (সম্মান) ডিগ্রী আছে। যিনি এই অনার্স ডিগ্রী অর্জন করবেন তাকে স্নাতক বা গ্রাজুয়েট বলা হয়।
স্নাতক এর ধরণ:
উচ্চশিক্ষার স্থানভেদে স্নাতক ৩ বছরের কিংবা ৪ বছরের হয়ে থাকে। শুধুমাত্র চিকিৎসা বিষয়ক স্নাতক সাধারনভাবেই ৫ বছরের জন্য হয়ে থাকে।
বাংলাদেশ, ভারত, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া সহ অধিকাংশ ব্রিটিশ শিক্ষাব্যবস্থা প্রভাবিত অঞ্চলে স্নাতক ডিগ্রী ২ ধরণের হয়ে থাকে।
সম্মান (অনার্স) – সাধারণত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রাপ্ত হয়ে থাকে।
সাধারণ (কোর্সে উত্তীর্ণ) – কলেজ/ ডিগ্রী কলেজ থেকে প্রাপ্ত হয়ে থাকে।
অনার্স ও ডিগ্রীর মধ্যে পার্থক্য রয়েছে।
অনার্স হচ্ছে স্নাতক সম্মান আর ডিগ্রি হচ্ছে শুধু স্নাতক। অনার্স ৪ বছর মেয়াদি এবং ডিগ্রি ৩ বছর মেয়াদি। অনার্সে মূলত যেকোন এক বিষয়ের উপর খুঁটিনাটি পড়ানো হয় থাকে তাই তারা ওই বিষয়ের উপর দক্ষ হয়ে গড়ে উঠে। আর ডিগ্রি আলাদাভাবে কয়েকটি বিষয়ের কিছু কিছু অংশ পড়ানো হয়। তাই ডিগ্রীর ছাত্রছাত্রীরা পঠিত কয়েকটি বিষয় সম্পর্কে কিছু কিছু জ্ঞান লাভ করতে পারে। সার্টিফিকেটের মান ডিগ্রীর চাইতে অনার্সের টার বেশি।
মাস্টার্স হচ্ছে ডিগ্রি করার পর ২ বছর মেয়াদি একটা কোর্স এবং অনার্স করার পর ১ বছর মেয়াদি একটা কোর্স যাকে স্নাতকোত্তর বলা হয়। চাকরির ক্ষেত্রে অনার্স সম্পর্ন কারীদের সরাসরি অনেক ব্যাংক বা কোম্পানিতে চাকরিতে নিয়োগ দিয়ে থাকে কিন্তু ডিগ্রি সম্পর্ন কারীরা মাস্টার্স সম্পর্ন না করলে নিয়োগ দেয়া হয়না।
অনার্স শেষ করে সরাসরি বিসিএস দেয়া যায় কিন্তু ডিগ্রি করে মাস্টার্স না করলে বিসিএস দেয়া যায়না। তবে ডিগ্রি করে মাস্টার্স করলে উভয়ের মান এবং অগ্রাধিকার সমান হয়ে যায়।
স্নাতক এর ভাগ:
পঠিত বিষয়ের মূল ধারা অনুসারে বিভিন্ন ধরণের স্নাতক সম্মান ডিগ্রি বিদ্যমান রয়েছে।
যেমন –
Arts & Humanities বা কলা ও মানবিক ধারায় স্নাতক উপাধি – Bachelor of Arts (B.A)
Fine arts বা চারুকলায় স্নাতক উপাধি – Bachelor of Fine Arts (B.F.A)
Social science বা সামাজিক বিজ্ঞানে অর্জিত স্নাতক উপাধি – Bachelor of Social Science (B.S.S)
Science বা বিজ্ঞানে স্নাতক উপাধি – Bachelor of Science (B.Sc)
Business বা ব্যবসায় স্নাতক – Bachelor of Commerce (B.Com)
Business Administration বা ব্যবসা প্রশাসনে স্নাতক – Bachelor of Business Administration (B.B.A)
Engineering বা প্রকৌশল বিষয়ক স্নাতক – Bachelor of Science in Engineering (BSE/B.Sc.Eng/ B.E)
Law বা আইন বিষয়ক স্নাতক – Bachelor of Laws (L.L.B) [ল্যাটিন – Legum Baccalaureus]
Medical বা চিকিৎসা বিষয়ক স্নাতক – Bachelor of Medicine and Bachelor of Surgery (M.B.B.S) [ল্যাটিন – Medicinae Baccalaureus Baccalaureus Chirurgiae]
(সূত্র: বিভিন্ন ওয়েবসাইট)