হরমোন বেশি হলে কি বাচ্চা হয় না,অভিজ্ঞতাদের পরামর্শ অনুযায়ী

হরমোন বেশি হলে কি বাচ্চা হয় না , হরমোন হচ্ছে শরীর থেকে নিঃসৃত এক ধরনের রস, যা এক জায়গা থেকে নিঃসৃত হয়ে সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। আমাদের শরীরের নানা শারীরবৃত্তীয় কাজে হরমোন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, গর্ভধারণও এর মধ্যে একটি।

 


হরমোনের তারতম্যের জন্য বাচ্চা নিতে যে সমস্যা হয়—


♦ ডিম ফুটতে সমস্যা (অ্যানওভুলেশন)

♦ পিসিওএস

♦ প্রলাক্টিন হরমোন বেড়ে যাওয়া

♦ অতিরিক্ত ওজন

 




পুরুষ হরমোনের কারণে বন্ধ্যত্ব

♦ হাইপোগোনাডিজম বা টেস্টোস্টেরন হরমোন কম থাকা

♦ থাইরয়েড হরমোনের সমস্যা

♦ ডায়াবেটিস

♦ অতিরিক্ত ওজন



অনেক হরমোন আছে, যা নারীর গর্ভধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। পুরুষেরও কিছু হরমোন আছে, যেগুলোর তারতম্যের জন্য অনেক সময় গর্ভধারণ হয় না।



টেস্টোস্টেরন হরমোনের অভাবে পুরুষের যৌন চাহিদা, মানসিক শক্তি ইত্যাদি ক্রমশ পরিবর্তিত হতে থাকে। গড়ে ৩০ বছর বয়স হওয়ার পরে এর মাত্রা প্রতিবছর ১% করে কমে; সাধারণত ৭০ বছর বয়স্ক পুরুষের শরীরে এর মাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে অর্ধেক কমে যায়। কারও কারও এ মাত্রা আরও কমে যেতে পারে।

 

হরমোন বেশি হলে কি বাচ্চা হয় না



টেস্টোস্টেরন হরমোনের মাত্রা কমে গেলে নানা রকম লক্ষণ-উপসর্গ দেখা যায়। যেমন-

 



* পুরুষের স্বাভাবিক যৌনাচরণের পরিবর্তন। অনেকের অণ্ডকোষ দুটি আকারে-আকৃতিতে ছোট হয়ে যায় এবং যৌন দুর্বলতা দেখা দেয়।



* মানসিক পরিবর্তন : কর্মস্পৃহা অনেক কমে যায়। কাজের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলার পাশাপাশি অনেকে আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলেন। যৌবনের যে উৎসাহ-উদ্দীপনা, মনের জোর, সব জয় করার এক উদগ্র বাসনা; টেস্টোস্টেরনের পরিমাণ কমার ফলে তা কোথায় যেন উবে যায়। অনেকে কোনো কাজে একভাবে মনঃসংযোগ করতে পারেন না, স্মৃতিশক্তি ক্ষীণ হয়ে আসে; এমনকি অনেকে বিভিন্ন মাত্রার বিষণ্ণতায় ভুগতে পারেন।

 



অনেক সময় অন্যান্য শারীরিক অসুখ যেমন- থাইরয়েড গ্রন্থির সমস্যা, বিষণ্ণতা রোগ, অতিরিক্ত মদ্যপান ইত্যাদি কিংবা ওষুধ সেবনের পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া হিসাবেও এ রকম হতে পারে। সুতরাং একজন চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া যুক্তিসঙ্গত।

 



*পুরুষের পরিণত বয়সে টেস্টোস্টেরন কমে যাওয়ার ফলে পুরুষত্বের ইতি বা অ্যান্ড্রোপজও কোনো অসুখ নয়। এটি জীবনের একটি পরিবর্তিত ধাপ বা পর্যায় মাত্র। এটাকে স্বাভাবিকভাবে মেনে নিয়ে জীবনের এই নতুন পর্যায়টিকে উপভোগ করা এবং আনন্দমুখর করে তোলা লক্ষ্য হওয়া উচিত। শেষ বয়সে স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় পুনরায় টেস্টোস্টেরন তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা নেই। তবে কতগুলো বিষয় খেয়াল রাখা উপকারী



* চিকিৎসকের সঙ্গে এ বিষয়ে সরাসরি কথা বলা উত্তম। সমস্যাগুলো যদি বয়স বাড়ার কারণে না হয়ে অন্য কোনো অসুখ-বিসুখ কিংবা ওষুধের পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়ার কারণে হয়, তাহলে তার সমাধান করা যেতে পারে।



* জীবনাচরণ সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে। যেমন- স্বাস্থ্যকর এবং পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ, নিয়মিত ব্যায়াম ও শরীর চর্চা করা ইত্যাদি। সুস্থ জীবনাচরণ শারীরিক শক্তি ও মানসিক উদ্দীপনা বৃদ্ধির জন্য সহায়ক।



* বিষণ্ণতার জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে। টেস্টোস্টেরনের মাত্রা কমে গেলে পুরুষের কর্মস্পৃহা, মানসিক উৎসাহ-উদ্দীপনা হ্রাস পায়। বিষণ্ণতার কারণে অনেকের মেজাজ খিট খিটে হয়ে যায়, নিঃসঙ্গ থাকতে পছন্দ করেন এবং সামাজিক কর্ম থেকে নিজেকে গুটিয়ে নেন। অনেক সময় মাত্রাতিরিক্ত কাজ করার প্রবণতা, অতিরিক্ত নেশা করা কিংবা বিপজ্জনক কাজকর্ম করাও বিষণ্ণতার কারণে হতে পারে।

 



* টেস্টোস্টেরন প্রতিস্থাপন চিকিৎসায় অনেকে উপকৃত হয়ে থাকেন। তবে এর কার্যকারিতা নিয়েও বিতর্ক রয়েছে।




গর্ভধারণের ওপর যেসব হরমোনের প্রভাব ফেলে সেগুলো হলো—




ফলিকল স্টিমুলেটি হরমোন (এফএসএইচ) : এই হরমোন মাসিক নিয়ন্ত্রণ করে এবং ডিম্বাশয়ের ডিমের পরিপূর্ণতায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। যেসব নারীর ডিম্বাশয়ের কার্যকারিতা কম থাকে, তাদের (এফএসএইচ) হরমোন বেড়ে যায়।


লুটিনাইজিং হরমোন (এলএইচ) : ওভুলেশনের সময় ডিম ফুটতে এই হরমোন সহায়তা করে।


অ্যান্টি মুলারিয়নে হরমোন (এএমএইচ) : এই হরমোন ওভারির ফলিকল থেকে উৎপন্ন হয়।



ডিম্বাশয়ে কতগুলো ডিম আছে তার ধারণা এই হরমোন থেকে পাওয়া যায়। এই হরমোন কমে গেলে ডিমের সংখ্যা কমে গেছে বলে ধারণা পাওয়া যায়।
ইস্ট্রোজেন : এটি হচ্ছে নারীর প্রধান হরমোন, যার জন্য নারীর শারীরিক গঠন তৈরি হয়।

 


প্রজেস্টেরন : গর্ভাবস্থা বজায় রাখার জন্য এই হরমোন গুরুত্বপূর্ণ।


অ্যান্ড্রোজেন বা অ্যান্ড্রোজেনিক হরমোন হল সে সকল প্রাকৃতিক স্টেরয়েড হরমোন, যেগুলো মেরুদন্ডী প্রাণীদের মধ্যে পুরুষদের এন্ড্রোজেন রিসেপ্টর বন্ধিত করতে কাজ করে| এটি পুরুষের যৌনাঙ্গ গঠন এবং গৌন শারীরিক বৈশিষ্ট গঠনে কাজ করে। পুরুষদের প্রধান এন্ড্রোজেন হল টেস্টোস্টেরন।

 


টেস্টোস্টেরনের মাত্রা প্রাকৃতিকভাবে বাড়ানোর জন্য এখানে কিছু পদ্ধতি দেয়া রয়েছে।

 


ব্যায়াম এবং অনুশীলন
ব্যায়াম এবং অনুশীলন জীবনযাত্রা সম্পর্কিত রোগ প্রতিরোধের সবচেয়ে কার্যকর উপায়। মজার বিষয় হল এটি আপনার টেস্টোস্টেরনকেও বাড়িয়ে তুলতে পারে।

 


খাওয়া প্রোটিন এবং ফ্যাট
আপনার কি খাওয়া হয়েছে, এটি টেস্টোস্টেরন হরমোনের উপর প্রভাব ফেলে।
অতএব, আপনর মনোযোগ দিতে হবে আপনার দীর্ঘমেয়াদী ক্যালোরি যুক্ত খাবার খাওয়া এবং খাদ্য কৌশলে।




ভ্রূণের বেড়ে ওঠার পরিবেশ তৈরি করে দেয় এই হরমোন। এই হরমোন কমে গেলে মিসক্যারেজ হয়ে যেতে পারে।

 


থাইরয়েড হরমোন : এই হরমোনের কমবেশির জন্য বাচ্চা ধারণ করা কঠিন হতে পারে। হরমোনের মাত্রা স্বাভাবিকের মধ্যে এনে বাচ্চা নেওয়ার চেষ্টা করতে হবে।



প্রলাক্টিন : এই হরমোন বেশি থাকলে মাসিক অনিয়মিত হতে পারে এবং বাচ্চা কনসিভ করতে সমস্যা হতে পারে।


(সূত্র: বিভিন্ন ওয়েবসাইট)