হস্ত মৈথুনের উপকারিতা ও অপকারিতা,অভিজ্ঞতাদের পরামর্শ অনুযায়ী

হস্ত মৈথুনের উপকারিতা ও অপকারিতা , হস্তমৈথুন বা মাস্টারবেশন কি? ব্যাপারটির সাথে আমরা সবাই কমবেশি পরিচিত। উঠতি বয়সের ছেলেদের মাঝে এর প্রবনতা বেশি দেখা গেলেও পুরুষদের মত নারীদের কিংবা মাহিলদের এমনকি কম বয়সী মেয়েদের মাঝেও হস্ত মৈথুন প্রবনতা থাকে।

 


হস্ত মৈথুন প্রসঙ্গে নানান রকমের কু-সংস্কার ও ভুল ধারণা রয়েছে। অনেকেই মনে করেন হস্তমৈথুন এর কোনো অপকারিতা বা ক্ষতি কিংবা কুফল নেই। আবার কেউ কেউ মনে করেন হস্ত মৈথুন এর উপকারিতা।

 


তবে মূল বিষয়টি হচ্ছে, হস্তমৈথুন তখনই স্বাস্থ্যের জন্য ভালো যখন তা করে হবে নিয়ন্ত্রিত মাত্রায়। তাহলে দৈনিক কতবার হস্তমৈথুন করা যেতে পারে? চিকিৎসা বিজ্ঞানে হস্ত মৈথুন করার নিয়ম বা হস্ত মৈথুন এর বিধান কি? এতে কি পুরুষত্ব নিয়ে বা স্ত্রীর সাথে যৌন জীবনে কোন সমস্যা হয়?

 

হস্ত মৈথুনের উপকারিতা ও অপকারিতা

 



মহিলারা আরও ভীত হয়ে থাকতেন কারণ প্রচলিত ধারণা ছিল যে হস্তমৈথুন তাদের কুমারীত্বকে ক্ষুণ্ণ করে তাদের অপবিত্র করে তুলবে এবং ভালো একজন জীবনসঙ্গী পাওয়ার পথে অন্তরায় হয়ে দাঁড়াবে। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে এ বিষয়ে জ্ঞান অনেক বেড়েছে, মানুষ অনেক বেশী সচেতন হয়েছেন, এবং ধর্মের বিধিনিষেধ অনেকটাই শিথিল হয়েছে।হস্তমৈথুনের উপকারিতা ও অপকারিতা একজন মানুষ কতবার তা করছেন দিনে, তার উপর নির্ভর করে।

 


হস্তমৈথুনের উপকারিতা:

 


এটি শরীরে রক্ত চলাচল বাড়ায় এবং এন্ডোর্ফিন নিঃসরণ করে যা মস্তিষ্কের একটি তৃপ্তি বৃদ্ধিকারীরাসায়নিক।
এটি আবেগজাত পীড়ন, বিষণ্ণতা ও উদ্বেগ কমাতে সাহায্য করে।


এটি নিজের শরীর নিয়ে আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দেয়।
এটি আপনাকে আপনার বাসনাকে অন্বেষণ করতে সাহায্য করে, এবং কোন সঙ্গী ছাড়াই আপনাকে যৌন তৃপ্তি দেয়।

 


বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, অল্প ক্ষেত্রে ইহাশারিরিক বা মানসিক কোন ক্ষতিসাধন করে না। তবে মনে রাখতে হবে Excess is everything bad.



হস্তমৈতুন সাধারনত তাৎক্ষনিকভাবে উত্তেজনা প্রশমন করে। অনেক সময় নেগেটিভ কল্পনা বা অশ্লিল ছবি এবং ভিডিও দর্শনের ফলে যৌন উত্তজনা সৃষ্টি হয়। এধরনের উত্তেজনা সামাজিক অপরাধে উৎসাহিত করে। তাই পরিত্রানের উপায় হিসেবে তখনি হৈস্তমৈতুন করা যেতে পারে।



বিশেষভাবে স্বপ্নদোষ পুর্নাঙ্গ রুপ নেয়ার আগে যদি ঘুম ভেঙে যায় এবং উদ্ভট কল্পনার ফলে যদি অতিরিক্ত যৌন উত্তেজনা দেখা দেয় তবে তাৎক্ষনিক হস্তমৈতুন করাই শ্রেয়। নয়তো সাময়িক তলপেটে ব্যাথা সহ শারিরিক বা মানসিক সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে।






হস্তমৈথুনের চিন্তা তাদের মাথায় ঘুরতে থাকে ও তারা সামাজিক জীবনে অচল হয়ে পড়ে। হস্তমৈথুন আসক্তি সৃষ্টিকারী হওয়ার কারণে তা মানুষের সময় নষ্ট করে ও কার্যকারিতা থেকে মানুষকে বিরত করে।

 


হস্তমৈথুনের অপকারিতা:


কোনকিছুর আধিক্যই স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নয়, এবং তা শরীরের ক্ষতি করে। কম্পালসিভ হস্তমৈথুন অত্যন্ত নেশা সৃষ্টি করে এবং সময়ে সময়ে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে।
যদি আপনি নেশাগ্রস্থ হয়ে পড়েন, তবে আপনি হস্তমৈথুন ইচ্ছেমতো করতে না পারলে, তা আপনার বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়াবে।


এটি সামাজিক জীবনে মনঃসংযোগেরঅভাব ঘটাতে পারে।
এটি প্রজননেন্দ্রিয়কে চোট দিতে পারে, যদি খুব উত্তেজিত ভাবে করা হয়।

 


বীর্য আল্লাহর একটি নিয়ামত, আর হস্তমৈতুনের মাধ্যমে এই নিয়ামতের অপচয়ই হয়ে থাকে। অতিরিক্ত হস্তমৈতুনের ফলে লিঙ্গ বা যোনীপথে ঘা এর সৃষ্টি হতে পারে, এমনকি রক্তক্ষরন ও হতে পারে।

বিশেষ করে মেয়েদের যোনীতে বিভিন্ন বস্তু প্রবেশের কারনে জীবানু সংক্রমন ঘটতে পারে। উভয়ের বেলায় প্রশ্রাবে জালাপোড়া সহ জীবানু সংক্রমনে সিফিলিস, গনোরিয়া ইত্যাদি রোগের সৃষ্টি হতে পারে।



নিয়মিত ও অতিরিক্ত হস্তমৈতুনে যৌনশক্তি কমে যাওয়া ও শারিরিক দুর্বলতা দেখা দিতে পারে। ইহা অভ্যাসে পরিনত হতে পারে এবং দীর্ঘদিন এই অভ্যাসের ফলে যৌন আকাঙ্খা কমে যেতে পারে।



তাছাড়া বিবাহিত জীবনে যৌন অনীহার সৃষ্টি হতে পারে যা দাম্পত্বেও প্রভাব ফেলবে।



মহিলাদের ক্ষেত্রেও অত্যধিক হস্তমৈথুন তাদের আত্মকেন্দ্রিক করে তুলেছে, এবং তারা তাদের চারপাশের মানুষের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন।

 



মহিলাদের ক্ষেত্রে প্রাত্যহিক হস্তমৈথুন অপকারিতা:



এটি নেশা হয়ে উঠতে পারে ও স্বাভাবিক জীবন ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
এটি যোনিদেশের ক্ষতি করতে পারে, এবং অত্যধিক ঘর্ষণের কারণে জ্বালা জ্বালা ভাব সৃষ্টি করতে পারে।
এটি যোনিদেশের ভেতরে ইনফেক্‌শন ঘটাতে পারে।
এটি মনকে ব্যস্ত রাখতে পারে ও আপনি সামাজিক জীবনে অমনোযোগী হয়ে উঠতে পারেন।
সবসময় নিজেকে তৃপ্ত করার বাসনা মাঝে মাঝে আপনাকে নিয়ন্ত্রণের অসাধ্য করে তুলতে পারে।



পরিবার, অথবা সমাজ বর্তমানে বিয়ের প্রয়োজনীয়তা অস্বীকার করে। অথচ, আপনি ২১ বছর বয়সে যেভাবে শারীরিক সুখ উপভোগ করবেন। ৩০/৩৫ বয়সে সেভাবে উপভোগ করবেন না। এই বয়সে যেটা করবেন সেটা ৬০/৬৫ এর পরে উপভোগ করবেন না।



সে কারণে হস্তমৈথুনের গুরুত্ব রয়েছে। শুকনো হাতে মুখের লালা দিয়ে, কিংবা সাবান মেখে নয়। ওয়াটার বেসড লুব ব্যবহার করে। যেটা পানি যোগ করলে আরো পিছলা হবে। ত্বকে কোন ছিলে যাওয়ার মত ক্ষতি হবে না। এমন কিছু ব্যবহার করতে হবে।

 



সময় নিয়ে ঘরে বসে করতে হবে। বীর্যপাতের সময় হলে থেমে গিয়ে ধৈর্য ধরে আবার পুনরায় শুরু করতে হবে।

বাথরুমে সাবান/শ্যম্পু ব্যবহার করে করা উচিত নয়। কারণ, সাবান ক্ষার জাতীয় ত্বকের ক্ষতি করে থাকে।



এক কথায় থাকিতে হস্ত হব না পরের দারস্থ।

নিজের সুখের সন্ধান নিজের হাতে থাকলে পরের কাছে যেতে হয় না।




হস্তমৈথুনের উপকারিতা দিয়ে শুরু করা যাক:



হস্তমৈথুন পুরুষ ও মহিলা উভয়ের ক্ষেত্রেই উদ্বেগ কমিয়ে আনে।
হস্তমৈথুন পুরুষ ও মহিলা উভয়কেই হাল্কা অনুভব করতে সাহায্য করে।
হস্তমৈথুন অত্যধিক শুক্রাণুর কারণে অসুস্থতা থেকে পুরুষকে রক্ষা করে।


হস্তমৈথুন পুরুষ ও মহিলা উভয়ের ক্ষেত্রেই একটি কল্পিত যৌন ছবি তৈরী করতে সাহায্য করে।
পুরুষ ও মহিলা উভয়ের ক্ষেত্রেই হস্তমৈথূন যৌন অনুভবের হার কমিয়ে আনে।
পুরুষদের ক্ষেত্রে হস্তমৈথূন মহিলার উপস্থিতি ছাড়াই যৌনতৃপ্তি দিতে সক্ষম হয়।

 

হস্তমৈথুন পুরুষ ও মহিলা উভয়কেই যৌনতৃপ্তি দেয়।
হস্তমৈথুন যৌনরোগ কমিয়ে আনে।
হস্তমৈথুন একজন ভার্জিন পুরুষকে সাহায্য করে বলে অনেকের বিশ্বাস।



হস্তমৈথুনের অপকারীতাও অনেক। কোন কিছুই বেশি, অতিমাত্রায় ভালো না। ভালো কিছু যদি আপনি অতিরিক্ত খান সেটা বিষ হয়ে যাবে। বিষয়টা এমন।



শারীরিক দূর্বলতা, লিংগ শিথিলতা, আগা গোড়া মোটা চিকন, দ্রুত বীর্যপাত ইত্যাদি সমস্যা এসে সামনে দাড়াতে পারে।



এর প্রধাণ কারণ হচ্ছে অজ্ঞতা। অজ্ঞতার কারণে বীর্যপাতের পর দূর্বলতা অনুভব করে। আসলে পুস্টিহীন একটা মানুষকে ১০০ বার বুকডন দিয়ে দাড়াতে বললে সে মাথা ঘুরে পরে যাবে। ব্যাপারটা তেমনই। একবার বীর্যপাতের পর আরেক সংগমের জন্যে প্রস্তুত হতে সময় লাগে। এটাও সুস্বাস্থ্যের উপর নির্ভর করে।



হস্তমৈথুনের অপকারিতা:

 


বাইবেল মতে হস্তমৈথুন একটি অপরাধ।
হস্তমৈথুন লিঙ্গ শিথিল করতে পারে মহিলার শরীরে ব্যবহারের সময়।
হস্তমৈথুন লিঙ্গে একাধিক শিরাকে স্পষ্ট করে তোলায় তার আকর্ষণ কমে যেতে পারে।
হস্তমৈথুন মহিলাদের ক্ষেত্রে ইনফেকশন ঘটাতে পারে।


হস্তমৈথুন শুক্রাণু প্রস্তুতকারক হরমোনকে দুর্বল করে দেয়।
হস্তমৈথুন পুরুষকে সত্যিকারের যৌনসঙ্গমের জন্য আকূল করে তোলে।
হস্তমৈথুন নিঃসরণের সময় কমিয়ে আনে পুরুষদের ক্ষেত্রে।
হস্তমৈথুন মহিলার ক্ষেত্রে গর্ভাশয়কে দুর্বল করে দেয় ও তা সন্তান ধারণের পথে অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায় এবং গর্ভপাত করাতে বাধ্য করে।


অধ্যাবসায়, ওষুধ ও ধ্যান এর সঙ্গে লড়াই করার সব থেকে ভালো উপায়। যা যা আপনাকে হস্তমৈথুন করতে উদ্যত করতে, যেমন পর্নোগ্রাফি, বন্ধুবান্ধব ইত্যাদি, সেসব এড়িয়ে চলুন। নিয়মিত যোগব্যায়াম করলেও উপকার পাবেন। স্বাস্থ্যবান আহার যেমন টাটকা ফল, শুকনো ফল, বিশেষ করে খেজুর, আমণ্ড, ইত্যাদি খাওয়া উচিৎ, মাছ মাংস বাদ দিয়ে। এবং সর্বোপরি ওষুধের প্রয়োজন।


(সূত্র: বিভিন্ন ওয়েবসাইট)