দোয়া কুনুত বাংলা আরবি উচ্চারণ ও অর্থসহ ফজিলত উচ্চারণ

দোয়া কুনুত বাংলা আরবি উচ্চারণ ও অর্থসহ ফজিলত উচ্চারণ
দোয়া কুনুত বাংলা আরবি উচ্চারণ ও অর্থসহ ফজিলত উচ্চারণ

দোয়ায়ে কুনুত বাংলা উচ্চারণ, দোয়া কুনুত অর্থসহ দোয়া কুনুত বাংলা আরবি উচ্চারণ ও অর্থসহ ফজিলত উচ্চারণ এবং বেতের নামাজের দোয়া বাংলা উচ্চারণ সহ আরো বিস্তারিত আলোচনা করব

বিতরের নামাজে তৃতীয় রাকাতে সুরা ফাতিহার পরে সুরা মিলিয়ে তাকবির দিয়ে হাত বেঁধে পরতে হয়।বিতরের নামাজে দোয়া কুনুত পড়া ওয়াজিব।

মহান আল্লা হর কাছে এই বলে প্রতি জ্ঞা করা যে আমরা আপ নার উপর ভরসা করি এবং আপ নার মঙ্গল কামনা করি । আমাদের মহান আল্লাহ পাকের কাছে আরও প্রতিজ্ঞা করা যে আমরা আপনার শোকর করি, যারা আপ নার অবাধ্য তাদের নিকট হতে দূরে থাকি ।

আরও পড়ুন    শবে কদরের নামাজের নিয়মাবলী নিয়ত দোয়া ও ফজিলাত

        তাহাজ্জুদ নামাজ সুন্নত নাকি নফল

জন্মদিনের শুভেচ্ছা স্ট্যাটাস।কুরআন হাদিসের আলোকে

 

দোয়া কুনুত বাংলা আরবি উচ্চারণ ও অর্থসহ ফজিলত উচ্চারণ

আবু দাউদ এবং আহমদ বিন হাম্বল এর বর্ণনা থেকে জানা যায় হাসান ইবনে আলী (রাঃ) এই দোয়াটি মুহাম্মাদের (সাঃ) কাছ থেকে শিখেছিলেন । দাউদ (রঃ) আরও বলেছেন যখন মুসলমানদের উপর কোন বিপদ-আপদ এবং বিপর্যয় আসতো তখন মহা নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) দোয়া কুনুত পড়তেন । – মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা (৬৯৬৫)

দোয়া কুনুত বাংলা আরবি উচ্চারণ ও অর্থসহ ফজিলত উচ্চারণ
দোয়া কুনুত বাংলা আরবি উচ্চারণ ও অর্থসহ ফজিলত উচ্চারণ

দোয়া কুনুতের ফজিলত

 

দোয়া কুনুত এর ফজিলত | দোয়া কুনুত এর তাফসির – দোয়া কুনুত একটি প্রসিদ্ধ দোয়া । এই দোয়া আমার প্রতিদিন ইশা এর নামাজের পরে বিতর নামাজে শেষ রাকাতে পড়ে থাকি । দোয়া কুনুত মহান আল্লাহ পাক এর প্রেরিত রাসুল হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) বিতর নামাজে পড়তেন । সেই মোতাবেক আমরা আল্লাহ পাক এর প্রেরিত রাসুল হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর উম্মত হিসাবে পড়ে থাকি ।

 

বিতের নামাজের এক/তিন/পাঁচ/সাত/এগারো রাকাত শেষ রাকাতে রুকুতে যাওয়ার আগে বা রুকু থেকে উঠে দুই হাত তুলে বা বেধে দুআ কুনুত পাঠ করতে হয় । আজকের আলোচনায় এই দোয়ার ফজিলত এবং তাফসির সম্পর্কে আলোচনা করবো । তাহলে চলুন শুরু করা যাক ।

দোয়া কুনুত বাংলা আরবি উচ্চারণ ও অর্থসহ ফজিলত উচ্চারণ
দোয়া কুনুত বাংলা আরবি উচ্চারণ ও অর্থসহ ফজিলত উচ্চারণ

যখন বান্দা কায়মনো বাক্যে নামাজে দাড়িয়ে দোয়া কুনুতের বাক্য গুলো উচ্চারণ করে মহান আল্লাহ পাক তা কবুল করে নেন । মহান আল্লাহ পাক বান্দার প্রতি দয়া করে বান্দাকে ক্ষমা করে দেন । এর থেকে বড় ফজিলত আর কি হতে পারে?

দোয়া কুনুত এর তাফসির

দোয়া কুনুত এর তাফ সির বা ব্যাখ্যা হচ্ছে নামা জের মাধ্যমে বান্দা হিসাবে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কাছে সাহায্য চাওয়া ও ক্ষমা ভিক্ষা চওয়া । মহান আল্লাহ পাক যে আমাদের রব তা তো স্বীকার করে তারই কাছে নত হয়ে সাহায্য ও ক্ষমা কামনা করা ।

হে আল্লাহ! আমরা আপনা রই উপা সনা আরা ধনা করি এবং আপনার কাছে মস্তক অবনত করি , আপনা রই এবাদ তের জন্যে সচেষ্ট থাকি এবং আপনা রই অনুগ্র হের প্রত্যাশী ও আপনার আযাব কে ভয় করি । নিশ্চ য়ই আপ নার শাস্তি কাফের দের জন্য নির্দিষ্ট রয়েছে ।

কুনুত শব্দের অর্থ কি?

আমরা সবাই বিতর নামাজে যে দোয়া কুনুত পড়ে থাকি । অনে কেই জানতে চান “ কুনুত ” শব্দের অর্থ কি ? “ কুনুত ” একটি আরবি শব্দ । “কুনুত” শব্দের বাংলা অর্থ হচ্ছে আনু গত্য করা ।

 

দোয়া কুনুত আরবীঃ

بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ
اَللَّمُمَّ اِنَّ نَسْتَعِيْنُكَ وَنَسْتَغْفِرُكَ وَنُؤْمِنُ بِكَ وَنَتَوَكَّلُ عَلَيْكَ وَنُثْنِىْ عَلَيْكَ الْخَيْرَ وَنَشْكُرُكَ وَلاَ نَكْفُرُكَ وَنَخْلَعُ وَنَتْرُكُ مَنْ يَّفْجُرُكَ-اَللَّهُمَّ اِيَّاكَ نَعْبُدُ وَلَكَ نُصَلِّىْ وَنَسْجُدُ وَاِلَيْكَ نَسْعَى وَنَحْفِدُ وَنَرْجُوْ رَحْمَتَكَ وَنَخْشَى عَذَابَكَ اِنَّ عَذَابَكَ بِالْكُفَّارِ مُلْحِقٌ

দোয়া কুনুতের বাংলা উচ্চারণ:

আল্লা হুম্মা ইন্না নাস্‌ তাঈ’ নুকা, ওয়া নাস্‌ তাগ্‌ ফিরু কা , ওয়া নু’ ’মিনু বিকা , ওয়া নাতা ওয়া ক্কালু ‘ আলাই কা , ওয়া নুছনী আলাই কাল খাইর । ওয়া নাশ কুরু কা, ওয়া লা নাক ফুরুকা , ওয়া নাখ লাউ ’, ওয়া নাত রুকু মাঁই ইয়াফ জুরুকা । আল্লা হুম্মা ইয়্যা কা না’ বুদু ওয়া লাকা নুসল্লী , ওয়া নাস জুদু, ওয়া ইলাই কা নাস ’আ, – ওয়া নাহ ফিদু, ওয়া নারজু রাহমা তাকা, ওয়া নাখ শা – আযা বাকা, ইন্না আযা বাকা বিল কুফ্‌ ফারি মুল হিক্ব।

দোয়া কুনুত অর্থ

হে আল্লাহ! আমরা তোমারই সাহায্য চাই । তোমা রই নিকট ক্ষমা আমরা চাই, তোমা রই প্রতি ঈমান রাখি, তোমা রই ওপর আমরা ভরসা করি এবং সকল মঙ্গল তোমা রই দিকে ন্যস্ত করি । আমরা তোমার কৃতজ্ঞ হয়ে চলি , অকৃতজ্ঞ হই না। হে আল্লাহ !

 

আমরা তোমা রই দাসত্ব করি, তোমা রই জন্য নামায পড়ি এবং তোমা কেই সিজ দাহ করি। আমরা তোমা রই দিকে দৌড়াই ও এগিয়ে চলি। আমরা তোমারই রহমত আশা তো করি এবং তোমার আযাব কে ভয় করি । আর তোমার আযাব তো কাফের দের জন্যই র্নিধা রিত ।

 

দোয়া কুনুত বাংলা আরবি উচ্চারণ ও অর্থসহ ফজিলত উচ্চারণ
দোয়া কুনুত বাংলা আরবি উচ্চারণ ও অর্থসহ ফজিলত উচ্চারণ

দু ‘আ কবুল হওয়ার ২৯ টি স্থান , ক্ষেত্র ও সময় :

 

১)সুরা আল ফাতিহা পাঠ করার পরই , সুরা বাকা রার শেষ এর দুই আয়াত পাঠ করেই দু’আ করলে দু’আ কবুল হয় ।(মুসলিম, মূল কিতাব-৮০৬,এ্যান্ড্রয়েট এ্যাপ-১৭৬২)

২) অনুপস্থিত ব্যক্তির জন্য দু’আ, কোন মুসলিমের অগোচরে অন্য মুসলিমের জন্য দু’আ করলে দু’আ কবুল হয়। (মুসলিম -৬৮২২)

৩) জালিমের বিরুদ্ধে মাজলুম ব্যক্তির দু’আ কবুল হয়। (তিরমীযি-৩৪৪৮)

৪) মা ও বাবা তার সন্তান দের জন্য দু’আ করলে দোয়া আবশয় কবুল হয় ৷ ( তিরমীযি-৩৪৪৮ )

৫) নেককার সন্তানের দু’আ কবুল হয়। (বাবা-মায়ের জন্য তাদের মৃত্যুর পর)। (আবু দাউদ-২৮৮০)

৬) আরাফাতের ময়দানে দু’আ করলে দু’আ কবুল হয়। (তিরমীযি-৩৫৮৫)

৭) বিপদগ্রস্ত অসহায় ব্যক্তির দু’আ তাড়াতাড়ি কবুল হয়। (সূরা নমল ৬২,৫৭ ও সূরা ইসরার ৬৭ নাম্বার আয়াত)

৮) সেজদায় দু’আ করলে দু’আ কবুল হয়। (নাসায়ী১০৪৫)

৯) হজ্জের স্থানসমূহের দু’আ তাড়াতাড়ি কবুল হয়। যেমন: আরাফাহ, মুজদালিফা, মিনা…। (ইবনে মাজাহ-২৮৯২)

১০) হজ্জ করা অবস্থায় হাজ্জীর দু’আ কবুল হয়। (ইবনে মাজাহ-২৮৯৩)

১১) উমরাহ করার সময় উমরাহকারীর দু’আ কবুল হয়। (নাসায়ী-২৬২৫)

১২) আযানের পর দু’আ কবুল হয়। (তিরমীযি-২১০)

১৩) ক্বিতাল চলাকালীন সময় দু’আ করলে দু’আ কবুল হয়। (আবু দাউদ-২৫৪০)

১৪) বৃষ্টি বর্ষণকালে দু’আ করলে দু’আ কবুল হয়। (আবু দাউদ-২৫৪০)

১৫) শেষ রাতের দু’আ, তাহাজ্জুদের সময়কার দু’আ কবুল হয়। (বুখারী-১১৪৫)

১৬) জুম্মার দিনে দু’আ কবুল হয়, আসরের শেষ দিকে তালাশ করার জন্য নির্দেশ আছে। (নাসায়ী-১৩৮৯)

১৭) লাইলাতুল ক্বদরের রাত্রির দু’আ কবুল হয়। (বুখারী ও মুসলিম)

দোয়া কুনুত বাংলা আরবি উচ্চারণ ও অর্থসহ ফজিলত উচ্চারণ
দোয়া কুনুত বাংলা আরবি উচ্চারণ ও অর্থসহ ফজিলত উচ্চারণ

১৮) আযান ও ইকামতের মধ্যবর্তী সময়কার দু’আ কবুল হয়। (আহমাদ-১৪৬৮৯, মুসলিম -৬৬৮)

১৯) ফরয সালাতের শেষ অংশে দু’আ করলে কবুল হয়। (সালাম ফিরানোর আগে)। (রিয়াদুস স্বালেহীন ১৫০৮, তিরমীযি-৩৪৯৯)

২০),মুসাফিরের দু’আ কবুল হয়। (সফর অবস্থায়)। (তিরমীযি-৩৪৪৮)

২১) রোজাদার ব্যক্তির দু’আ কবুল হয়। (রোজা অবস্থায়) । (ইবনে মাজাহ-১৭৫২)

২২) ন্যায়পরায়ণ শাসকের দু’আ কবুল হয়। (তিরমীযি-২৫২৬)

২৩) দু’আ ইউনুস পাঠ করে দু’আ করলে দু’আ কবুল হয়। (তিরমীযি-৩৫০৫) দোয়া ইউনুস: লা ইলাহা ইল্লা-আন্তা সুবহানাকা ইন্নি কুনতু মিনাজ জোয়ালিমীন।

২৪) ইসমে আযম পড়ে দু’আ করলে দু’আ কবুল হয়। (ইবনে মাজাহ-৩৮৫৬)

২৯) দু’হাত তুলে দোয়া করা, কারণ আল্লাহ বান্দার খালি হাত ফিরিয়ে দিতে লজ্জাবোধ করেন। (আবু দাউদ-১৪৮৮)

মহান আল্লাহ আমাদের সবাই কে বেশি বেশি করে দোয়া করার তাও ফিক দিন , এবং আমাদের সবার যেন দোয়া কবুল করে নিন- আমীন