ধর্মীয় উক্তি হল ধর্মের প্রকাশ্য, উপদেশমূলক বাক্য বা কথাগুলো, যা অধ্যাত্মিক অনুভূতি, আচার-আনুষ্ঠানিক নীতি-নীতিবিধি, দেয়াল বা সংক্ষেপে ধর্মীয় অভিবাদন বা অধীনে থাকা সূত্রাত্মক শিক্ষা বা সত্য বা ধর্মের মূল্যের উদ্বৃত্তি উপস্থাপন করে। ধর্মীয় উক্তির অনুষ্ঠানিক ব্যবহার সংখ্যা অনেক ধর্মে পাওয়া যায়, যেমন হিন্দুধর্ম, বৌদ্ধধর্ম, ইসলাম, খ্রিস্টধর্ম, জুদেওধর্ম, সিখধর্ম, জৈনধর্ম, শিখিস্তানীয়ধর্ম ইত্যাদি।
এই উক্তিগুলি ধর্মীয় গ্রন্থ, পুরাণ, বাইবেল, কোরআন, গুরুগ্রন্থসাহিব, তিব্বতী বুদ্ধধর্ম গ্রন্থসমূহ, উপনিষদ ইত্যাদি ধর্মীয় গ্রন্থের ভিত্তিতে ব্যক্তিগতভাবে বা সমাজের মধ্যে প্রচলিত হতে পারে। ধর্মীয় উক্তির মাধ্যমে মূল্যবান দর্শনাবলি, ধর্মীয় নীতি, প্রেম, শান্তি, করুণা, সহিষ্ণুতা, উন্নতি ইত্যাদি বিষয়ে মানুষের মধ্যে আত্মীয়তা, আদর্শ, মর্ম, সত্যের বিচার, জীবনদর্শন ইত্যাদি বৃদ্ধি করা হয়।
এই ধর্মীয় উক্তিগুলির উদাহরণ হিসেবে কিছু উক্তি নিচে দেয়া হল:
হিন্দুধর্ম:
“সর্বধর্মান্পরিত্যজ্য মামেকং শরণং ব্রজ। অহংত্বাস্মি চ পাপেভ্যঃ মোক্ষযিশ্যামি মা শুচঃ॥” (ভগবদ্গীতা ১৮.৬৬) – ভগবদ্গীতা গ্রন্থে কৃষ্ণের উক্তি, যা মোক্ষের পথে নিজের শরণ দেওয়ার অনুসারে বাক্য।
ইসলাম:
“মানুষের মধ্যে সর্বোচ্চ মহিলা তিনটি প্রভুর সাথে শাস্তির দ্বারা সৃষ্টি করা হয়েছে – তাদের হাত, মাথা এবং পা গুলি।” (হাদিস) – ইসলামের একটি হাদিস, যা মহিলাদের অধিকার এবং মর্যাদার গুরুত্ব প্রকাশ করে।
ধর্মীয় উক্তি
এই প্রশ্নের উত্তরে আমি প্রায় সমস্ত ধর্মের উক্তি উল্লেখ করতে পারবো না, কারণ প্রতিটি ধর্মের অনেক উক্তি রয়েছে এবং তা সম্পূর্ণ তালিকায় প্রদর্শিত করা কঠিন এবং সময়সাপেক্ষ। তবে, কিছু ধর্মীয় উক্তির মধ্যে কিছু বৃদ্ধির উদাহরণ দেওয়া হল:
হিন্দুধর্ম:
“যথা ব্যয়ের প্রতি পরিমিতি, এমনি ব্যয়ের প্রতি পরিমিতি রাখো।” – মহাভারত
“অনুষ্ঠানগুলি ছেড়ে দিন, আপন ধর্মে আত্মশুদ্ধি লাভ করো।” – ভগবদ্গীতা
ইসলাম:
“বন্ধুর কাছে বন্ধুর প্রয়োজন হলে আমি সাথে থাকব।” – হাদিস
“যারা দুস্মৃতি দেওয়ালে দুঃখিত হবে, যারা সম্মতি দেয়, তাদের খুশি হবে।” – কোরআন
খ্রিস্টধর্ম:
“অন্যের যত্ন করো যা তোমার জন্য করার চেষ্টা করবে তা অন্তত হাফিয়া করা আছে।” – বাইবেল
“কেউ বিনা পাপের সাথে প্রথম পাথর মারুক যিনি পাপী নয়, তাকে হয় মাথায় প্রথম পাথর মারার অনুমতি।” – বাইবেল
বৌদ্ধধর্ম:
“এক মুদ্দি পানাহার, প্রজ্ঞা অনসরণ করা পানাহারের চেয়ে শতগুন মেজাজ।” – ধম্মপদ
“যে ব্যক্তি অপরিচিত বা পরিচিতের সাথে শান্ত, বিশ্বাস এবং স্নেহ প্রদর্শন করে, সে মোক্ষ অর্জন করতে সক্ষম।” – উত্তরপথ সূত্র
উপরে উল্লেখিত উক্তিগুলি কেবলমাত্র এক ধরণের প্রকাশনা এবং ধর্মীয় গ্রন্থের একটি সংখ্যার উদাহরণ, ধর্মগুলির প্রতিটি গ্রন্থ এবং সাংখ্যিক উক্তি রয়েছে। এই ধর্মীয় উক্তিগুলি মানুষের জীবনে সত্য, প্রেম, উন্নতি, শান্তি এবং শিক্ষাবলীর দিকে মার্গদর্শন করতে সাহায্য করতে পারে।

ধর্মীয় সম্প্রীতি নিয়ে উক্তি
ধর্মীয় সম্প্রীতি নিয়ে উক্তি বিভিন্ন ধর্মে পাওয়া যায়, যেগুলি মানুষের ধর্মীয় সম্প্রীতি এবং ধর্মিক সাংকল্পনা প্রকাশ করে। এই উক্তিগুলি ব্যক্তিগত এবং সামাজিক মানসিকতা, ব্যক্তিগত উন্নতি, ভগবানের প্রতি ভক্তি, সামাজিক সদয়তা এবং সহিষ্ণুতা, বিশ্ববন্ধুত্ব ইত্যাদি বিষয়ে অনুশাসিত হয়।
একটি ধর্মীয় সম্প্রীতি নিয়ে কিছু উক্তির উদাহরণ দেওয়া হল:
হিন্দুধর্ম:
“সর্বে ভবন্তু সুখিনঃ, সর্বে সন্তু নিরাময়াঃ। সর্বে ভদ্রাণি পশ্যন্তু, মা কশ্চিত্ দুঃখ ভাগ্ভবেত্॥” – ঋগ্বেদ ১০.১৬২.২
ইসলাম:
“কারও প্রয়োজন যদি তোমাকে নিরাপত্তা এবং আত্মত্যাগের জন্য প্রত্যাশা করে, তাহলে তুমি হত্যা করা যাবে না।” – কোরআন ২.১৯৪
খ্রিস্টধর্ম:
“আমি একটি নতুন আদেশ দিচ্ছি – একে অপরের প্রেম করেও যে হাসপাতালে নিজের প্রাণ নিয়ে চিন্তা না করে, সে আমার অনুযায়ী মিশ্রিত হয়ে উঠবে।” – বাইবেল, যোহন ১৩:৩৪-৩৫
বৌদ্ধধর্ম:
“আপনি যেভাবে বা তাঁহার থাকুন, তা তাঁহার মধ্যে বিশ্বাস করা একজন মুনির উপকারী।” – উত্তরপথ সুত্র, ১৭১
উপরে উল্লেখিত উক্তিগুলি কেবলমাত্র এক ধরণের প্রকাশনা এবং ধর্মীয় গ্রন্থের একটি সংখ্যার উদাহরণ, ধর্মগুলির প্রতিটি গ্রন্থ এবং সাংখ্যিক উক্তি রয়েছে। এই উক্তিগুলি মানুষের মধ্যে ভগবানের প্রতি ভক্তি ও প্রেম, সহিষ্ণুতা, সত্যবাদ, দয়া, উন্নতি এবং শান্তির মধ্যে ধর্মীয় সম্প্রীতি এবং ধর্মিক ভাবনা প্রকাশ করে।
ধর্মীয় সম্প্রীতি নিয়ে ১০ টি উক্তি
ধর্মীয় সম্প্রীতি নিয়ে বিভিন্ন ধর্মে প্রাচীন ও সাধারণ উক্তি প্রচলিত রয়েছে। নীচে দশটি ধর্মীয় উক্তি উদাহরণ দেওয়া হল:
হিন্দুধর্ম:
“একত্বমেব আদ্বিতীয়ং ব্রহ্ম” – ঈশোপনিষদ, ৬
“জীবন্ত সব জীব একভাবে সুখী হোক।” – সমরসবেদ, ১১.৫৫.১
ইসলাম:
“আপনি অন্যের জন্য যা চান, নিজের জন্যও সেই বিষয় জানুন।” – হাদিস
“প্রত্যেক মুসলিম বান্ধব মুসলিমকে একটি বিষয়ে সাহায্য করতে হয়, প্রত্যেক মুসলিম বান্ধব মুসলিমকে একটি বিষয়ে দু: খ অনুভব করতে হয়।” – হাদিস
খ্রিস্টধর্ম:
“সে যে নিজেকে জজ করে এবং নিজেকে অন্যের অনুমতি দেয় তা অন্যের সুখের জন্য এবং নিজের জন্য ভাল হবে।” – বাইবেল, মাত্ত ৭:১২
“আপনি অন্যের যা চান, নিজের জন্যও সেই বিষয় জানুন।” – বাইবেল, লুক ৬:৩১
বৌদ্ধধর্ম:
“তাকে জিনিস প্রয়োজন হবে তা তাঁহার মধ্যে বিশ্বাস করা একজন মুনির উপকারী।” – উত্তরপথ সুত্র, ১৭১
“মানুষের মধ্যে সব সমস্যার মূল হল বোধিত বা বোধ করা।” – উত্তরপথ সুত্র, ১২৮
উপরে উল্লেখিত উক্তিগুলি কেবলমাত্র এক ধরণের প্রকাশনা এবং ধর্মীয় গ্রন্থের একটি সংখ্যার উদাহরণ, ধর্মগুলির প্রতিটি গ্রন্থ এবং সাংখ্যিক উক্তি রয়েছে। এই উক্তিগুলি মানুষের মধ্যে ভগবানের প্রতি ভক্তি ও প্রেম, সহিষ্ণুতা, সত্যবাদ, দয়া, উন্নতি এবং শান্তির মধ্যে ধর্মীয় সম্প্রীতি এবং ধর্মিক ভাবনা প্রকাশ করে।
শেষ কথা
ধর্মীয় উক্তি এবং ধর্মীয় সম্প্রীতি মানব সমাজের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এদের মাধ্যমে মানুষ ধর্মগত সিদ্ধান্ত এবং সাধারণ নীতি নির্ধারণ করে এবং আচরণ করে। এটি ভগবানের প্রতি ভক্তি এবং মানবতার প্রতি সহিষ্ণুতা এবং সম্মানের মধ্যে একত্ব এবং একত্বের মধ্যে শান্তি এবং সমরসতা সৃষ্টি করে।
প্রত্যেকটি ধর্মের মূল উদ্দেশ্য মানবকে উন্নত, শান্ত এবং সত্যিকারের জীবনে প্রমাণিত করা এবং অন্যকে সেই পথে নির্দেশিত করা। এই ধর্মীয় সম্প্রীতি ও উক্তিগুলি মানবদেহে সাতক্ষীরা ব্যাপার সম্পর্কে চিন্তা করার জন্য মানুষকে উদ্বুদ্ধ করে, সাহায্য করে এবং একটি উচ্চতর উদ্দেশ্যের দিকে সচেতন করে।
ধর্মের অনুষ্ঠান, আচার-আনুষ্ঠানিক ক্রিয়া এবং উক্তিগুলি মানুষের জীবনে একটি সাংক্রান্তিক ভূমিকা পালন করে এবং সাধারণ সৃষ্টিতে একটি সুন্দর ব্যক্তিত্বের গঠন করে। এগুলি মানবকে দয়াশীলতা, সহিষ্ণুতা, প্রেম এবং সামাজিক সম্পর্কে উন্নত করে এবং একটি সামর্থ্যশালী ব্যক্তিত্ব উদ্ভাবিত করে।
ধর্মীয় উক্তি এবং সম্প্রীতি মানবজাতির একজনের অন্যকে সম্প্রীতি এবং সহায়কের মধ্যে একটি প্রেরণাদায়ক করে এবং মানবকে উন্নত উচ্চতর ধার্মিক সাধারণ জীবন বেগম্ভীর করে। ধর্মের আদর্শ, সৃষ্টি, সুখ, শান্তি এবং ভবিষ্যতের উজ্জ্বল আশা মানব জীবনের জন্য একটি সত্যকে অনুষ্ঠান করে।