তাশাহুদ বাংলা উচ্চারণ আরবি অর্থ সহ নাযিলের পেক্ষাপট

তাশাহুদ বাংলা উচ্চারণ আরবি অর্থ সহ নাযিলের পেক্ষাপট
তাশাহুদ বাংলা উচ্চারণ আরবি অর্থ সহ নাযিলের পেক্ষাপট

তাশাহুদ বাংলা অর্থ সহ , তাশাহুদে আঙ্গুল উঠানোর নিয়ম,তাশাহুদ বাংলা উচ্চারণ আরবি অর্থ সহ , তাশাহুদ বাংলা উচ্চারন সহ, তাশাহুদ আরবি ও বাংলা, তাশাহুদ সূরা এর বিস্তারিত আলোচনা করা হলো

রসুলুল্লাহ সাঃ যখন মেরাজে যান তখন জিবরাঈল আঃ সিদরাতুল মুনতাহা পর্যন্ত রসুলুল্লাহ সঃ এর সাথে ছিলেন। সিদরাতুল মুনতাহা অর্থাৎ সৃষ্টি রাজ্যের শেষ সীমানা। এর পরে লামোকাম বা আল্লাহ্ র রাজ্য ,যেখানে প্রবেশের অধিকার জিবরাঈল আঃ এর নেই। তখন রসুলুল্লাহ সাঃ একাই চলতে থাকেন! (আল্লাহু আকবর)

তাশাহুদ বাংলা উচ্চারণ আরবি অর্থ সহ নাযিলের পেক্ষাপট
তাশাহুদ বাংলা উচ্চারণ আরবি অর্থ সহ নাযিলের পেক্ষাপট

ভাবতে পারেন সেটা কোথায় ?কেউ নেই সেখানে, রসুলুল্লাহ সাঃ একা চলছেন, যেখানে তিনি হযরত বেলাল রঃ এর পায়ের শব্দ শুনেছিলেন। অতঃপর মহান আল্লাহর সাথে রসুলুল্লাহ সাঃ সাক্ষাত করেন। (আল্লাহু আকবর)

আমরা প্রতিদিন নামাজে এই তাশাহুদ এই জন্য পড়ি যে, নামাজ মুমিনের জন্য মেরাজ।আর মেরাজে রসুলুল্লাহ সাঃ কে আল্লাহ প্রদত্ত শান্তি ও রহমত উনার উম্মতের জন্য প্রদানের আবেদন করেছিলেন এবং উপস্থিত ফেরেস্তাগন সেই দূর্লভ ক্ষণের সাক্ষ্য প্রদান করেছিলেন, সেটাই আল্লাহর সম্মুখে আমরা পেশ করি।

 

মহান আল্লাহর সাথে রসুলুল্লাহ সাঃ কিভাবে সাক্ষাত করেছিলেন সেটা আলোচ্য বিষয় নয়। কিন্তু যে কথোপকথন হয়েছিল যার অংশ আমরা নামাজে পাঠ করি সেটুকুই আলোকপাত করছি কেবলমাত্র সবাই কে স্মরণ করানোর জন্য।এটাই তাশাহুদ

 

আরও পড়ুন   আত্তাহিয়াতু সূরা বাংলা উচ্চারণ ও অর্থসহ ফজিলত

কালেমা শাহাদাত আরবি বাংলা ও অর্থ কি

হাসি নিয়ে কবিতা (কুরআন হাদিসের আলোকে)

     রাগ নিয়ে উক্তি-রাগ নিয়ে ইসলামিক উক্তি

 

তাশাহুদ বাংলা উচ্চারণ আরবি অর্থ সহ

 

– اَلتَّحِيَّاتُ لِلَّهِ وَالصَّلَوَاتُ وَالطَّيِّبَاتُ ، السَّلَامُ عَلَيْكَ أَ يُّهَا النَّبِيُّ وَرَحْمَةُ اللَّهِ وَبَرَكَاتُهُ، السَّلَامُ عَلَيْنَا وَعَلَى عِبَادِ اللَّهِ الصَّالِحِيْنَ ، أَشْهَدُ أَن لَّاإِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ. –

 

তাশাহুদ বাংলা উচ্চারণ আরবি অর্থ সহ,নিচে দেওয়া হলো ঃ

রসুলুল্লাহ্ সাঃ বলেছেন –

اَلتَّحِيَّاتُ لِلَّهِ وَالصَّلَوَاتُ وَالطَّيِّبَات

তাশাহুদ বাংলা অর্থ

“সকল তাযীম ও সম্মান মহান আল্লাহর জন্য ,সকল সালাত ও মহান আল্লাহর জন্য , এবং সকল ভাল কথা ও কর্মও মহান আল্লাহর জন্য। ”

মহান আল্লাহ বলেছেন –

السَّلَامُ عَلَيْكَ أَيُّهَا النَّبِيُّ وَرَحْمَةُ اللَّهِ وَبَرَكَاتُهُ

তাশাহুদ বাংলা অর্থ

“হে নবী ! আপ নার প্রতি শান্তি , মহান আল্লাহর রহমত ও তাঁর বরকত বর্ষিত হোক । ”

রসুলুল্লাহ্ সাঃ বলেছেন –

السَّلَامُ عَلَيْنَا وَعَلَى عِبَادِ اللَّهِ الصَّالِحِيْنَ

তাশাহুদ বাংলা অর্থ

“আমাদের উপরে এবং আল্লাহর নেক বান্দাদের উপরে শান্তি বর্ষিত হোক।”

উপস্থিত ফেরেশতাগন বলেছেন –

أَشْهَدُ أَن لَّاإِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ

তাশাহুদ বাংলা অর্থ

“আমি সাক্ষ্যই দিচ্ছি যে , মহান আল্লাহ ছাড়া আর কোন সত্য উপাস্য নেই এবং আরো সাক্ষ দিচ্ছি মুহাম্মদ আল্লাহর বান্দা এবং তাঁর রসুল।”

 

নবীকূল শিরোমনি হযরত মুহাম্মদ সাঃ ইহকাল ও পরকালের সমস্ত সৃষ্টির একক অধিপতি মহা পরাক্রমশালী আল্লাহর দরবারে সাক্ষাতের সময় কি বলেছেন তার দিকে দয়া করে একটু মনোযোগ দিন।

তাশাহুদ বাংলা উচ্চারণ আরবি অর্থ সহ নাযিলের পেক্ষাপট
তাশাহুদ বাংলা উচ্চারণ আরবি অর্থ সহ নাযিলের পেক্ষাপট

প্রশ্নঃ সূরা ফাতিহা পড়ার আগে তাশাহুদ পড়ার আগে এবং দোয়ায়ে কুনুত পড়ার আগে যদি ভুলে অন্য কিছু চলে আসে, হঠাৎ মনে পড়লে পুনরায় আত্তাহিয়াতু অথবা সূরা ফাতিহা অথবা দোয়ায়ে কুনুত শুরু করি,

 

এই মুহূর্তে আমাদের করণীয় কি? কি সাহু সেজদা দিতে হবে!

উত্তর দিয়েছেন, মাওলানা মুহাম্মদ মামূন আত্তারী আল-মাদানী মুদ্দাযিল্লুহুল আলী
এখানে একটু বিস্তারিত আলোচনা রয়েছে,

প্রথম মাসয়ালা: এখানে দেখতে হবে যে, দুইটা দিক! সূরা ফাতিহা পড়ার আগে কোরআনে পাকের আয়াত পড়েছে নাকি অন্য কিছু! যেমন, তাশাহুদ !

যদি কোরআন শরীফের এক আয়াত পরিমাণ ভুলে পড়ে ফেলে তাহলে সাজদায়ে সাহু ওয়াজিব।
আর যদি সূরা ফাতিহার আগে ভুলে তাশাহুদ পড়ে ফেলে তাহলে সাজদায়ে সাহু ওয়াজিব হবে না। কেননা তাশাহুদ এটাও এক প্রকার সানা।

দ্বিতীয় মাসয়ালা: যদি তাশাহুদের আগে ভুলে অন্য কিছু পড়ে ফেলে,যদি কোরআন শরীফের আয়াত পড়ে ফেলে যেমন, بسم الله الرحمن الرحيم তাহলে তার উপর সাজদায়ে সাহু ওয়াজিব।
এমনকি যদি তাশাহুদের আগে আয়াত ছাড়াও অন্য কিছু পড়ে,যেমন – سبحان الله ،الحمد لله ইত্যাদী, এগুলো পড়লেও সাজদায়ে সাহু ওয়াজিব।

কেননা তাশাহুদের মধ্যে তাশাহুদ পড়াটাই ওয়াজিব।

তৃতীয় মাসয়ালা; দোয়ায়ে কুনুতের আগে অন্য কিছু পড়া যাবে কিনা বা ভুলে পড়লে কি হবে?
সে বিষয়ে আ’লা হযরত ইমামে আহলে সুন্নাত ইমাম আহমদ রযা খাঁন رحمة الله عليه ‘ফাতাওয়া রযাভীয়্যা’ তে উল্লেখ করেন,কেউ যদি ভুলে কুনুতের আগে সূরা ইখলাস পাঠ করে এটাও দোয়ায়ে কুনুত হয়ে যাবে।

এভাবে কেউ যদি اللهم اغفرلي পড়ে অথবা اللهم ربنا اتنا في الدنيا الخ পড়ে এমনকি কোরআন শরীফের এমন আয়াত যেগুলো দোয়া জাতীয়। তাহলে কোনো সমস্যা নেই। এগুলো সানা আর প্রত্যেক সানা দোয়ায়ে কুনুত।

তাশাহুদ বাংলা উচ্চারণ আরবি অর্থ সহ নাযিলের পেক্ষাপট
তাশাহুদ বাংলা উচ্চারণ আরবি অর্থ সহ নাযিলের পেক্ষাপট

যেই ওহাবি খারেজি রা বলেন নবীজি কে সালাতু সালাম দেওয়া বিদাত।
তারা যেন নামাযের মধ্যে তাশাহুদ না পড়ে।

যদি তাশাহুদ পড়ে তাহলে তো তারাও বিদাত করে।
কারন তাশাহুদ এ বলতে হয় ” আসসালাতু আসসালামু আলাইকা ইয়া আইয়্যুহান নাব্যিউ “।
তাদের ও জানতে তারাও নবীজিকে সালাম পেশ করেন।
ওহাবি রা বেদাত ফতুয়া দিতে আসে নিজেই বিদাত হয়ে গেল।

নবীর শান মানে দুশমনি করলে কোন ওহাবি কে ছার দিব না।
আমার পিতা মাতা ভাইকে গালি দিলে কিছু বলবোনা।

কিন্তু সাবধান আমার নবীর শানে বিয়াদবি করিয়েননা।
দরকার হলে জীবন দিয়ে দিব তবুও উনার শানে বিয়াদবি সহ্য করবোনা।

নবীজিকে সালাম পেশ করা যাবে কতো দলিল লাগে আমি দিব।
ওহাবি আপনি দলিল দিয়েন যে নবীজি (স.) কে সালাম পেশ করা যায়না।

আমরা সুন্নিরা দাড়িয়ে সম্মানের সাথে নবীজি (স.) সালাম পেশ করি আদবের সাথে।
দাঁড়িয়ে দরুদসালাম পাঠ করি আমরা আর ব্যাথা পায় ওহাবিরা।

আমন্ত্রিত অতিথি হলেতো সাথে Gift নিতে হয় তাই রসুলুল্লাহ সাঃ উপহার হিসেবে উনার সকল তাযীম,সম্মান,সালাত,ভাল কথা ও কর্ম সব কিছুই মহান আল্লাহর দরবারে উপহার হিসেবে পেশ করেছেন।

বিনিময়ে মহান আল্লাহ রসুলুল্লাহ সাঃ কে শান্তি,রহমত ও বরকত প্রদান করেছেন।
এই লেখাটা যে জন্য পোস্ট করা তা এ কারনেই যে,একজন চেয়ারম্যান,মেয়র, জেলাপ্রশাসক, প্রশাসক, এম পি,মন্ত্রী,প্রধানমন্ত্রী,রাষ্ট্রপতি অবস্থাভেদে এদের কেউ আপনাকে ব্যক্তিগত নিমন্ত্রন জানালে আমন্ত্রনকারীর সাথে আপনার একান্তে সাক্ষাতের সময় আপনার অনুভূতি কেমন হবে? একটু ভাবুন তো! আপনি নিজের সুবিধার বাইরে আর অন্য কিছু কি ভাববেন ?

আপনার কি আর কারও কথা মনে থাকবে? আপনাকে তিনি কিছু দিলে তার ভাগ আপনি কাওকে দিবেন?

কিন্তু রসুলুল্লাহ সাঃ দোজাহানের বাদশা মহা পরাক্রমশালী আল্লাহ রব্বুল আ’লামিনের দরবারে প্রাপ্ত আল্লাহর শান্তি রহমত বরকত সব কিছুই তিনি তাঁর উম্মতের কথা স্মরন করে বলেছেন যে,আল্লাহর নেক বান্দাদের উপরও শান্তি বর্ষিত হোক।সুবহানাল্লাহ।

 

অর্থাৎ আমরা সেই ঐতিহাসিক ক্ষণের ঘটনা পাঠ করে উক্ত কথোপকথনের উছিলায় আল্লাহর কাছ থেকে ক্ষমা পাওয়ার আবেদন করি।কারন নামাজে আল্লাহ আমাদের সবথেকে নিকটবর্তী থাকেন।
ভেবেছেন, আমরা কোন নবীর উম্মত !স্বয়ং আল্লাহর সাথে কথা বলার সময়ও যিনি তাঁর উম্মতের কথা ভোলেননি! কত ভাগ্যবান আমরা! আমরা কি প্রতিদিন আমাদের নবীর উপর দুরুদ ও সালাম পেশ করি?

যদি না করে থাকি তবে আজ থেকে প্রতি দিন কমপক্ষে একশত বার রসুলুল্লাহ সাঃ এর উপর দুরুদ পাঠ করবো ইনশাআল্লাহ। তা না হলে আমরা বড়ই অকৃতজ্ঞ হয়ে যাবো!